আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানবতাবিরোধী বিচারকে বাঁধাগ্রস্থ করতে জামায়াতের সকল প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি যেমনটা বলেছিলাম গতকাল। প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক জামায়াতের ইসলামী। বাংলাদেশের আর কোন রাজনৈতিক দলে এতো বেতনভোগী কর্মী নেই - যা জামায়াতের আছে। এরা উপজেলা পর্যায়ে পর্যণ্ত বেতনভুক কর্মী পোষে - যারা সার্বক্ষনিক তাদের দলের পক্ষে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালায়। জামায়াত মুলত বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির পাশাপাশি সমান্তরাল আরেকটা অর্থনীতি তৈরী করেছে - যাকে অধ্যাপক আবুল বারাকাত নাম দিয়েছেন - মৌলবাদের অর্থনীতি।

এরা দলীয় ব্যবস্থাপনায় ছাত্রদের উপর বিনিয়োগ করে - যা পরবর্তীতে সেই ছাত্র যখন কর্মযোগ্য হয়ে কাজ করে তখন মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য থাকে। এছাড়াও এদের বিদেশে নেটওয়ার্ক খুবই সক্রিয়। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও লন্ডন, নিউইয়র্ক এবং টরন্টোয় এদের সক্রিয় নেটওয়ার্ক মুসলিম সার্কেল নাম নিয়ে নিয়মিত কর্মকান্ড চালায় এবং অর্থের যোগান দেয়। সেই অর্থে এরা বেতুনভুক কর্মি/নেতা পোষে। তাই দেখা যায় - বিএনপির জোটের মিটিং এ জামায়াতের কর্মীরা আগেই গিয়ে জায়গা দখল করে গোলাম আযমের মুক্তির দাবীতে ব্যানার নিয়ে বসে থাকে - এরা মুলত জামায়াতের বেতনভুক কর্মী।

এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরপর জামায়াত একক ভাবে শক্তি পরীক্ষার চেষ্টা করেছে - কারন জোট সরকারের মন্ত্রী আলবদর মুজাহিদ সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়কে ব্যবহার করেছে দলীয় শক্তিবুদ্ধির কাজেই। আর কৃষি মন্ত্রী থাকা কালীন আরেক আলবদর নিজামী কৃষকদের মাঝে জামায়াতের সমর্থক বাড়ানোর লক্ষ্যে শিবিরদের ব্লগ সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়েছে। সেই পরীক্ষার অংশ হিসাবে ছাত্রলীগ নেতা ফারুককে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিলো - আর সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে জামায়াত/শিবিরকে শক্তির প্রদশনের ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে। এরা এরপর অনলাইন আর মাল্টিমিডিয়া দিয়ে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে আর মাঠ পর্যায়ে ধর্মের নামে দল ভারী করা চেষ্টারত। আজকের খবর কাগজের রিপোর্ট - একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের মুক্তির লক্ষ্যে গোপনে নানা ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

এ লক্ষ্য নিয়ে কর্মী বাড়াতে বেশ তোড়জোড় চালিয়ে ক্রমান্বয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি রাজধানীতে পুলিশের নজরদারির কারণে কোনও ধরনের মিছিল-মিটিং কিংবা সমাবেশ করতে না পেরে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষকে ইসলামের দোহাই দিয়ে ভুলিয়ে-ভালিয়ে ‘জামায়াতি জালে’ আটকে ফেলছেন দলের কর্মীরা। জামায়াত-শিবিরের এ জালে সাধারণ মানুষ ছাড়াও বিএনপি-আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সন্তানদের ও দলে ভেড়ানোর কথা স্বীকার করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা। সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির জন্য কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে বিপদের সময় কাজে লাগানোই লক্ষ্য জামায়াতের। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণসংযোগ অভিযানের নামে তারা বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

শুধু তাই নয়, গ্রামগঞ্জে কর্মিসভা, লিফলেট বিতরণ, পোস্টার সাঁটানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে জামায়াত। তাদের দলে বেশি ভিড়ছে দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা। তাদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতারা সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামাচ্ছে। তারা গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষকে সুকৌশলে নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের পালিচড়া বাজারে জামায়াতের পক্ষে কর্মিসভার আয়োজন করা হয়।

এতে রংপুর জেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন। আটককৃতরা নির্দোষ উল্লেখ করে বক্তারা তাদের মুক্তির জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। ইসলামের জন্য রাস্তায় মৃত্যু হলে কিংবা জীবন দিলে শহীদের মর্যাদা লাভ করা যাবেÑ এমন নানা বক্তব্য দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া সাধারণ মানুষের মন জয় করতে নানা ফন্দি-ফিকির করছে দলটি। সম্প্রতি ওই ইউনিয়নের কেশবপুর পূর্বপাড়ায় এক ব্যক্তির বাড়ি পুড়ে গেলে কিছু অনুদান দেয় জামায়াত।

পরে ওই পরিবারটিকে দলের পক্ষে কাজ করতে বলা হয়। এই খবরের একটা লাইন খুবই গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছে - দেখুন "আটককৃতরা নির্দোষ উল্লেখ করে বক্তারা তাদের মুক্তির জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। ইসলামের জন্য রাস্তায় মৃত্যু হলে কিংবা জীবন দিলে শহীদের মর্যাদা লাভ করা যাবে। " - গোলাম আযম, নিজামী, সাইদী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা আর কামরুজ্জামান হলো চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী - যার প্রমান জামায়াতের মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামে ১৯৭১ সালের সংখ্যাগুলো বহন করছে - আর এরা তাদের নির্দোষ করে শুধু ইতিহাসকেই মিথ্যা বানাচ্ছে না - সাথে সাথে "ইসলাম" কে ঢাল হিসাবে টেনে আনছে। ধর্ম ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে জনমত তৈরীর এই অপচেষ্টার বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার ইতিহাসের দাবী - বাংলাদেশের মানুষ - বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই বিচারের কথা বলে গর্ববোধ করবে। যে কোন ধরনের অপচেষ্টা যেন এই বিচারকে ব্যর্থ করতে না পারে - বাংলাদেশের প্রতিটি সচেতন মানুষকে এই বিষয়ে সজাগ থাকা জরুরী।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.