আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘাটতি মেটাতে বাড়ছে লোড-শেডিং

সরকারের পক্ষ থেকে গ্রীষ্মকালে লোড-শেডিং সহনীয় থাকবে এমন কথা বলা হলেও এক ঘণ্টা পরপরই বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাজধানীতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কোম্পানি ডেসকো ও ডিপিডিসির কর্মকর্তারা বলছেন চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ না পাওয়ায় ঘাটতি লোড-শেডিং দিয়ে সামাল দিতে হচ্ছে। মহাখালীর বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, “কখন বিদ্যুৎ যায়-আসে তা বোঝা মুশকিল, কোনো ধরা-বাঁধা সময় নেই। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোড-শেডিং হচ্ছে। ” মহাখালী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্ল¬াই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) গুলশান বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. মাইনুদ্দিন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গুলশান, বনানী, মহাখালীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার জন্য দৈনিক গড়ে ১৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে গড়ে ৭০ মেগাওয়াটের মতো পাওয়া যায়।

এ কারণে ঘল্টায় ঘণ্টায় লোড-শেডিং করতে হচ্ছে। ” ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরজাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডেসকোর আওতাধীন এলাকাগুলোতে বুধবার ৬৫০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিলো ৪০০ মেগাওয়াটের মতো। সে হিসেবে ৪০ শতাংশের মতো লোড-শেডিং করতে হয়েছে। ” ডেসকো গুলশান, বনানী, উত্তরা, মিরপুর, মহাখালীসহ ঢাকার বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। ঢাকার অপর অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডিপিডিসি এলাকায় বুধবার ৮৩৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৬০৯ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হয়।

” ধানমণ্ডি, পুরান ঢাকা, মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে ডিপিডিসি। দুটি সংস্থার হিসেবে ঢাকা মহানগর ও আশপাশের এলাকায় বুধবার ঘাটতি ছিল ৪৫০ মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ওয়েবসাইটে বুধবারের তথ্য অনুযায়ী পুরো ঢাকা জোনে ঘাটতি ছিল প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট। পিডিবির হিসেব অনুযায়ী সারাদেশে বুধবার লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল পাঁচ হাজার ১০ মেগাওয়াট।

পিডিবির এ হিসেব ঠিক হলে বুধবার লোডশেডিং হওয়ার কথা গড়ে ৪ ঘণ্টা। কিন্তুলোড-শেডিং হচ্ছে এর প্রায় দ্বিগুন। দেশে আট হাজার ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, মেরামত এবং জ্বালানি সংকটের কারণে দুই হাজার ৯০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) তমাল চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গরমের কারণে মার্চের শুরু থেকে মে মাস পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। পাশাপাশি সেচ মৌসুম এবং জ্বালানি সংকটের কারণে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় লোড-শেডিং বেড়েছে।

” লোড-শেডিংয়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর, মিছিল-সমাবেশ করছে জনগণ। বিরোধীদলের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন জোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা প্রতিবাদী বক্তব্যও দিয়েছেন। আবার সেচের জন্য গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা বলে নগরীতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোড-শেডিং করা হলেও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা। স¤প্রতি গাজীপুর সেচের জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছে না এ অভিযোগ করে এবং লোড-শেডিংয়ের প্রতিবাদে পল¬ীবিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ করেছে গাজীপুরের কয়েকটি গ্রামের কৃষক। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা সেচের জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.