আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেতাদের এমনি হওয়া উচিত

মিথ্যাকে বর্জন করি সত্যকে আঁকড়ে ধরি কাদেসিয়ার যুদ্ধ ছিলো কিসরা (ইরান) বিজয়ের একটি গুরুত্বপুর্ন ধাপ। সেইসাথে ইসলাম ও কুফরের এক প্রচন্ড লড়াই। হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস(রাঃ) ছিলেন মুসলিম মুজাহিদদের সিপাহসালার। যদিও শারিরীক ভাবে অসুস্থ থাকার কারনে প্রত্যক্ষভাবে এই লড়াইতে তিনি অংশগ্রহন করতে পারেননি তথাপি তার বলিষ্ঠ্য নেতৃত্বে মুসলমানগন বীরের মত লড়াই করেছিলো। নাস্তানাবুদ করে দিয়েছিলো রুস্তমের নেতৃত্বে আসা কিসরার ফৌজকে।

মাত্র ত্রিশ হাজার মুজাহিদ মোকাবিলা করেছিলো লক্ষাধিক মাজুসী সৈন্যের। টানা সাড়ে তিন দিন চলেছিলো এ লড়াই। অবশেষে রুস্তমের কতলের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলো মুসলমানদের শানদার বিজয়। পুরো কাদেসিয়ার প্রান্তর থেকে ফোরাতের তীর পর্যন্ত ইরানী ফৌজের লাশ ছাড়া আর কিছু ছিলো না। মদীনায় খলিফাতুল মুসলীমিন হযরত উমর ফারুক(রাঃ) অধীর হয়ে ছিলেন কাদেসিয়ার খবর শোনার জন্য।

তাই সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস(রাঃ) দেরী না করে কাদেসিয়ার মুজাহিদ সাদ বিন আবি আমিলা কে বিজয়ের সংবাদ শোনানোর জন্য আমীরুল মুমীনিনের খেদমতে পাঠিয়েছিলেন। সাদ বিন আবি আমিলা দ্রুত সফর করে অনুমানের দুদিন পুর্বেই মদীনার উপকন্ঠে পৌঁছলেন। ফারুকে আজমের সুরতহাল আর দরবারে খিলাফতের শান শওকতের অসংখ্য ছবি আঁকা ছিলো তার মানসপটে। তার সাথে কথা বলার উপযুক্ত শব্দ খুঁজছিলেন তিনি। মদীনাকে দেখে সে কথাগুলিই বার বার আওড়াচ্ছিলেন মনে মনে।

রাস্তার পাশে পাহাড়ের চুড়ায় দেখা গেলো একা এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে। হাতের ইশারায় সাদকে থামাতে চাইলেন তিনি। কিন্তু মুহুর্তের দেরীও সইছিল না তার। তাড়াতাড়ি চুড়া থেকে নেমে এল আগন্তুক। তার পথ আগলে গিজ্ঞাসা করল- কোথা থেকে এসেছ তুমি? “কাদেসিয়া থেকে”- সাদ তাড়াহুড়া করে বলেই কষে চাবুক মারলেন উটের পিঠে।

তার পিছন ছুটতে ছুটতে আগন্তুক প্রশ্ন করল-আল্লাহর বান্দা, ওখান থেকে কি খবর নিয়ে এসেছ তুমি? না থেমেই আগন্তুক এর দিকে তাকালেন সাদ। সাদাসিধে পোশাক সত্বেও তার আকর্ষনীয় চেহারায় প্রভাবিত হয়ে কাদেসিয়ার বিজয়ের কাহিনী বলতে লাগলেন তিনি, তার চলার গতি না কমিয়েই। আনন্দে আত্বহারা হয়ে আগন্তুক শহরের গলি পর্যন্ত দৌড়ে গেলেন তার সাথে সাথে। কখনো উপর্যুপরি প্রশ্নে পেরেশান কুরে তুলতেন আরোহীকে। আরোহী চাইছিলেন যত দ্রুত সম্ভব মদীনায় খলীফার কাছে খবর পৌঁছাতে।

ইতোমধ্যেই মদীনায় পৌঁছলেন তারা। সাথে সাথেই মদীনাবাসী “আমীরুল মুমীনিন” বলে সালাম দিতে লাগলো আগন্তুককে। নিজের ভুল বুঝতে পারলেন ইবনে আমিলা। লজ্জায় পেরেশান হয়ে ইবন্ আমিলা ক্ষমা চাইলেন খলীফার কাছে। বললেন-আপনার নাম জানলে এ গোস্তাখী করতাম না আমি।

আমার দোস্ত, কোন গোস্তাখী করনি তুমি- নিশ্চিন্তে জবাব দিলেন খলীফা। উট থেকে নামতে চাইলেন ইবনে আমিলা। কিন্তু নিষেধ করলেন তিনি। অর্ধ জাহানের বাদশাহ নিজে পায়ে হেঁটে, দুতকে উটের পিঠে চড়িয়ে, উটের লাগাম ধরে নিয়ে গেলেন নিজের বাড়ীতে । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.