আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সীমান্ত হত্যা এবং আমরা

পঁচা মানুষ সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাঙ্গালী হত্যার ঘটনা নিয়ে খুব তোলপাড় চলছে। বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড়। ব্লগগুলোর পেজ এর পর পেজ ভরে উঠেছে নিন্দায়, সরকারের সমালোচনায়। এর মধ্যে স্থাণীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ এর একটি বক্তব্য নিয়ে কয়েকজর ব্লগার উঠেপড়ে লেগেছেন। সীমান্তে এভাবে বাঙ্গালী হত্যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না।

সরকার এর তীব্র নিন্দাও জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবাদের মুখেই গত ৯ই ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাবিবুর রহমানের উপর নির্যাতনকারী আট বিএসএফ জওয়ানকে তারা বরখাস্ত করে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম গত বছরে বাংলাদেশ সফরে আসলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি সীমান্ত হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানান। একইভাবে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর মনমোহন সিং এর বাংলাদেশ সফরের সময়ও সীমান্তে গুলি চালানোর প্রতিবাদ জানানো হয়। তারপরও কেউ যখন বলে বাংলাদেশ ভারতের প্রদেশ হয়ে গেছে, আওয়ামীলীগ দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করছেনা তখন তাদের উদ্দ্যেশ্য নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগে।

তারা কি প্রচন্ড পাকিস্থান প্রেমের কারণেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক মেনে নিতে পারছেনা। নাকি সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের ব্যার্থ অভ্যূত্থ্যান চেষ্টায় জড়িতদের দিক থেকে জাতির চোখ অন্যদিকে ফেরানোর জন্য সীমান্ত সমস্যা সামনে নিয়ে আসতে এত বক্তৃতা, বিবৃতি, ফেসবুক স্ট্যাটাস, ব্লগ? এখন প্রশ্ন হচ্ছে সীমান্তে যারা বিএসএফ কর্তৃক নিহত বা নির্যাতিত হচ্ছে তারা কারা? এরা বেশীরভাগই চোরাচালানকারী। এরাই ভারতীয় কাপড়, পেয়াজ, রসুন সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাংলাদেশে আনছে, এরাই হাজার হাজার ভারতীয় গরু অবৈধভাবে বর্ডার পার করছে, এরাই লক্ষ লক্ষ বোতল ফেনসিডিল এনে আমাদের যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। তাই বলে বিনা বিচারে হত্যা, এটাও মেনে নেয়া যায়না। কিন্তু বিএনপি জামাত নেতারা এবং তাদের দোসর কিছু বুদ্ধিজীবি এমনভাবে বলেন এবং লেখেন যেন একজন চোরাচালানকারীর মৃত্যুর জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করতে হবে।

গত ২০ই জানুয়ারী কুমিল্লা সীমান্তে আমাদের বিজিবি সদস্যের গুলিতে ভারতীয় ফেনসিডিল চোরাকারবারী নিহত হয়। কই ভারত তো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেনি। তারা তো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শক্তি। ফেনসিডিল চোরাকারবারীদের সাথে বিজিবি সদস্যদের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তারা বিজিবির হাবিলদার লুৎফর রহমানকে ভারতীয় ভূখন্ডে নিয়ে যায়। পরে তিনি বিএসএফ এর আশ্রয় গ্রহণ করেন।

বিজিবি এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মিডিয়ার বক্তব্য এমনি। কিন্তু এ ঘটনাকে কিছু কিছু তথাকথিত নেতা এবং বুদ্ধিজীবি বাকা চোখে দেখছেন। কেউ ফেসবুকে লিখছেন “এরপরও সরকার মুখ বুজে থাকবে?” কেউবা ব্লগে লিখছেন ”সৈয়দ আশরাফ ভারতের জামাই”। এরা কি এসব বুঝেই করছেন নাকি অন্ধ পাকিস্থান প্রীতি আর ভারত বিরোধীতা থেকে করছেন। আমি আবারো বলছি সেনাবাহিনীতে অতীতে অনেক ক্যু হয়েছে, গুপ্ত হত্যা হয়েছে।

জাতি কখনো জানতে পারেনি। এবারই প্রথম এরকম ঘটনা প্রেস ব্রিফিং করে জাতিকে জানালো সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীতে একটা নতুন কালচার শুরু হয়েছে। এখন থেকে কোন ধর্মান্ধ গোষ্ঠী বা স্বার্থন্বেষী মহল সেনাবাহিনীতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের পরিচয়সহ মদদ দাতাদের পরিচয় জাতি জেনে যাবে। ইচ্ছা করলেই বর্ক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বা ব্লগিং করে জাতিকে বিভ্রান্ত করা যাবেনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।