আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরকীয়ার প্রেমিককে বিয়ের লোভে পড়ে হত্যা

মায়ের পরিকল্পনাতেই পরকিয়া প্রেমিককে দিয়ে হত্যা করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিখাজ হওয়া আড়াই বছরের শিশু ইসরাত জাহান রিয়াকে। স্বামী পঙ্গু হওয়ার কারণে অবিবাহিত যুবক সুলতানকে বিয়ে করার লোভে পড়ে নিজ সন্তানকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় মা রোজিনা। যে মায়ের পেটে ১০ মাস থেকে জম্ম সে মা যে পৃথিবীর আলো ভালো করে দেখার আগে জীবন কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে পারে তা কি জানতো অবুঝ শিশু রিয়া? গ্রেফতারের পর রিয়া হত্যার মূল ঘাতক সুলতান মাহমুদ ও পরিকল্পনাকারী মা রোজিনাকে গতকাল সাংবাদিকেদর মুখোমুখি করা হয়। রিয়া হত্যার ঘাতক সুলতান সাংবাদিকদের কাছে রিয়া হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। সুলতান জানায়, দেড় বছর আগে টেইলার্সের তার সাথে মোবাইলে পরিচয় হয় রোজিনার ।

সে বাংলামটর হাইস্কুলের পিছনে একটি টৈইলার্সে ৯ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করতো। নিয়মতি কথা বলতে বলতে তার সাথে রোজিনার প্রেমের সর্ম্পক্য তৈরি হয়। ২ সন্তানের জননী রোজিনার স্বামী নুরুল ইসলাম পঙ্গু। তার এক হাত ও এক পা অচল থাকার কারণে সে চলাফেরা করতে পারেনা । স্বামী অচল হওয়ায় কারণে সুলতানের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ে রোজিনা।

তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় একসাথে ঘোরাফেরা করতো। এক পর্যায়ে সুলতানের সাথে রোজিনার দৈহিক সর্ম্পক্য গড়ে উঠে। ফলে রোজিনা সুলতানকে চাপ দিতে থাকে তাকে বিয়ে করার জন্য। বিষয়টি জানাজানি হলে চাকুরী চলে যায় সুলতানের । পরে সে কিছু দিন সিলেটে গিয়ে থাকে।

সেখানে গেলেও তার সাথে কথা হতো। তাকে না পেলে রোজিনা আত্মহত্যা করবে এমন কথাও বলতো রোজিনা। পরে আবার ঢাকায় আসলে একটি মেস ভাড়া নেয় সুলতান। ওই মেস রোজিনাই তাকে ঠিক করে দেয়। সে মেসে সুলতানের কাছে নিয়মিতো যেতো রোজিনা।

বার বার বিয়ের কথা বললেও রোজিনার সন্তান থাকায় সে বিয়ে করতে রাজী হয়নি। পরে সন্তান না থাকলে রোজিনাকে বিয়ে করবে এমন কথা জানায় সুলতান। এ কথার পর রোজিনা ও সুলতান সিদ্ধান নেয় আড়াই বছরের কোলের শিশু ইসরাত জাহান রিয়োকে হত্যা করার পর তারা বিয়ে করবে। সে মোতাবেক ৩ জানুয়ারী রোজিনা ও সুলতান একত্রে যায় ঢাকা মেডিকেলে। রোজিনা রিয়াকে রেখে ডাক্তারের রুমে গেলে রিয়াকে নিয়ে যাবে সুলতান।

পরে প্রচার করা হবে রিয়া অপহরন হয়েছে বা ছেলে ধরারা তাকে নিয়ে গেছে। পরিকল্পনা মতে কোথায় কখন কিভাবে রিয়াকে মারতে হবে তা বলে দেয় রোজিনা। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রোজিনা ডাক্তারের রুমে গেলে শিশু ইসরাত জাহান রিয়াকে সুলাতান মাহমুদ কোলে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় তলায় নিউকয়ার আল্ট্রাসাউন্ড সেন্টারের এক কোনে নিয়ে যায় । রিয়া তখন সুলতানের কাছে বার বার অস্পষ্ট কন্ঠে বলছিল আম্মু যাবো। পাসন্ড সুলতান রিয়াকে সান্তনা দেয় তোমার আম্মু আসতেছে।

পরে কোলে রেখেই রুমাল দিয়ে শিশু রিয়ার নাকমুখ চেপে ধরে। প্রায় ১৫ মিনিট এভাবে ধরে রেখে সুলতান রিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এভাবে রিয়া হত্যার কারন ও হত্যার বণনার্ দেওয়া পাসন্ড সুলতান মাহমুদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সে বুঝতে পারেনি রোজিনা তাকে এভাবে ফাসাবে। ।

ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (দক্ষিন) মোঃ শহিদুল্লা জানান, রিয়া হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হলে মামলার সূত্র ধরে রিয়ার মা রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। তার তথ্য অনুযায়ী নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা এলাকায় সুলতানের ভাইয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারে সে রিয়া হত্যার কথা স্বিকার করে। এদিকে রিয়া মা রোজিনা সুলতান মাহমুদের সাথে পরকিয়া সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও মেয়ে হত্যার সাখে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। গত ৩ জানুয়ারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিখোজ হয় ইসরাত জাহান রিয়।

নিখোজ হওয়ার ১ ঘন্টা পর তৃতীয় তলায় ানইকিয়ার আল্ট্রসাউন্ড সেন্টারের সিড়িতে পড়ে থাকা অব¯’ায় রিয়ার লাশ উদ্ধার হয়। পরে রিয়া বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.