আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশ ভ্রমন

মি- এক্স, একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী, বাংলাদেশ এর সনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। গ্রীষ্মের বন্ধে ভারতে বেড়াতে জাবেন বলে স্থির করলেন, একই সাথে তার উচ্চতর পরাশুনার বিষয়ে খোঁজ এবং মেডিকেল চেকাপের জন্য। অনেক কষ্ট করে ইন্টারনেটে ফর্ম ফিলাপ করলেন এবং তার পাঁচ দিন পর ভোর সকালে ভিসা অফিসে গিয়া পাসপোর্ট জমা দিলেন, তিন দিন পর পাসপোর্ট নিয়ে দেখলেন ভিসা পাওয়া গেছে ৩মাসের। খুশি মনে এক দিন রাতের বাসে করে বেনাপোল রওনা হলেন এবং যথারীতি বাসের ষ্টাফদের আচরনে তিনি বিরক্ত। কারন রাত ১১টার বাস ছাড়ল ১২টায়।

সকাল ৭টায় বেনাপোল গিয়ে নাস্তা করে বর্ডার পার হওয়ার জন্য কাস্টমস চেক পোষ্টে ঢুকলেন যখন দুইটা কুলি উনাদের ছোট ছোট দুইটা ব্যাগ বহন করছিল এবং প্রথম ধাক্কা খেলেন যখন কাস্টমস অফিসার বললো আপনার NOC কোথায়? তিনি বললেন ওটাতো ভিসা আবেদনের সাথে জমা দেওয়া হয়েছিল, অফিসার কিছুতেই বিশ্বাস করছিলেন না। তার এক কথা আপনি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার NOC ছাড়া কিছুতেই আপনাকে বর্ডার ক্রস করতে দেওয়া যাবে না। তিনি পড়লেন মহা দুশ্চিন্তায়, বাস কাউন্টারের এক ছেলে বলল স্যার আপনারা শিক্ষিত মানুষ এই ভুল ক্যামনে করলেন যা হোক ২/৪/৫০০ টেকা দেন দেখবেন কিচ্ছু লাগবে না। তিনি ওই ছেলের কাছে ৪০০ টাকা দিয়ে এবার আবার কাউন্টারের কাছে গেলেন আর এই সময় ওই কাউন্টার ম্যান অফিসার এর ফাইল এর নিচে কিছু টাকা রেখে বলল "স্যারের ভুল হইয়া গেছে ১ম বার তো" তখন অফিসার বললেন "আপনার স্ত্রী-র NOC কোথায় উনিও তো সার্ভিস হোল্ডার"- বলতে বলতে তিনি ফাইল তুলে দেখে বললেন এতে হবে না। আর তৎক্ষণাৎ সেই কাউন্টার ম্যান আর ও ১০০ টাকা রেখে বলল "স্যার বাদ দেন না ওনারা পেত্তেম বার যাইতাছে"।

যা হোক পার পাওয়া গেল নিজের দেশের কাষ্টমস ভারতীয় সীমানায় ঢুকার আগ মুহুর্তে কুলি দুইজন বলল এখন আপনাদেরকে নিয়া জাইব ঐ পারের লোক আর আমাগোরে বিদায় করেন। ঠিক আছে তা তোমাদেরকে কত দিতে হইব? উত্তরঃ ২০০টাকা, মহা ফাঁপরে পরলেন তিনি, প্রথমে বললেন এই ছোট ছোট ব্যাগ তো আমি নিজেই আনতে পারতাম আমি তো মনে করছিলাম তোমরা বাস এর লোক, কুলিরা কিছুতেই ছাড়বেনা, যা হোক পরে ১০০টাকায় মিটমাট হইল। এইবার তো আসল বিপদ! কারন মিঃ এক্স এর ধারনা ভারতীয় বর্ডার পার হওয়া অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু তার ধারনা ভাঙল কাস্টমস অফিসার এর সাথে কথা বলে। অফিসার শুধু জানতে চাইলেন কয় ডলার সাথে আছে আর কোন ভারতিয় রুপি আছে কি না।

মিঃ এক্স এর স্ত্রী-র কাছে কত আছে জানতে চাইলে মিসেস এক্স তা বের করে দেখালেন কিন্তু অফিসার গুনেও দেখল না (কুলি আগেই বলে রেখেছিল “স্যার যা যা আছে সত্যি বলবেন কোন মিছা কতা কইলে সমস্যা সত্য কইলে সমস্যা নাই” আর কোন ইন্ডিয়ান রুপি থাকলে লুকাইয়া রাখেন কারন পাইলে নিয়া যাবে বা আমার কাছে দেন আমি পার কইরা দিমু নে) । এর পর উনারা দুইটা ফর্ম ভর্তি করলেন এবং ভারতে প্রবেশ করলেন। ওপারের বাস কাউন্টারে আমাদের ব্যাগ রেখে কুলি হাওয়া তার কোন পাত্তাই নাই। বাস যখন কোলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছিল ঠিক তখন কুলিকে দেখা গেল, বাস থামিয়ে তাকে ৩০টাকা দিতেই সে মহা খুশি। এই হচ্ছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এর কাস্টমস কর্মকর্তা আর কুলিদের স্বভাব।

(চলমান) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।