আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধত্ব



অন্ধত্ব ১ -মিতা আমি এমনা করিনি। আমাকে ভুল বুঝ না। সত্যটআকে একটু বোঝার চেষ্টা কর। বন্ধু আমি তো তোমার পাশেই ছিলাম ,আছই,থাকবো,তবে? -দেখ আমি কোন কথা শুনতে চাই না। আমই যা জানি তা সত্যি।

আমার পক্ষে এ বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। ২ এর পর বহু দিন। এক,দুই,পাঁচ............সাতটি বছর কেটে গেলো। প্রকৃতি; প্রকৃতির মতো আর সময় তার সাথে পাল্লা দিয়ে। ব্যস্ত শহর ব্যস্ত জীবন,শুধু ছুটে চলা।

এত ব্যস্ততার মাঝে আর বন্ধুত্ব?না থেকেও যেন পুরোপুরি আছে। জীবন জড়ে,কর্মব্যস্ত প্রতিটি মুহূর্তে,আবসরে,অতীত ভালোবাসা রোমন্থনে। ৩ হয়তো সময়টা গোধুলী বেলা। সত্যি বলতে কি, গোধুলী বলতে যেমন আবেগময় পরন্ত বিকেল বেলার ছবি ভেসে ওঠে। মনে হয় শান্ত গ্রামের কোন এক নিভৃত কোনে কোলাহল মুক্ত পুকুর পাড়ে বসে থাকা যুগল আর পুকুরের নিশ্চল পানিতে রক্তিম আভা; পরিস্থিতি কিন্তু মোটেও তা নয়।

এ গোধুলী যে শহুরে গোধুলী। আর যায়গাটা মোটেও কোন পল্লীগ্রামের শান্ত পকুর পাড় নয়,এ হলো শহুরে রাজপথ। শত শত গাড়ি ঘোড়ার দূরন্ত গতিতে ধুলা উড়িয়ে ছুটে চলা। আর কোলাহল তা তো সহজেই আনুমেয়। এমনই এক সময়ে রাজপথের ধারে দাড়িয়ে ছিলো মিতা।

স্কুল ছাত্রী মিতা নয়,রিতিমত অফিস ফেরত মিতা। সময় তাকে বয়স দিয়েছে আর প্রকৃতি লাবন্য। দু’টোর কোনটই দেবার বেলায় দেবার এতটুকু কারপন্য করেনি। তবে বরাবরের মত প্রকৃতির শক্তি সময়ের থেকেও বেশী তার প্রমান দিয়ে স্বলাবন্যের উজ্জল মিতা। তার উদ্দেশ্য মোটেও পুকুরের পানিতে রক্তিম আভা দেখা নয় বরং তার গাড়ির ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে দাড়িয়ে থাকা।

সময়ের সাথে সাথে বিরক্তের প্রাসাদ গড়া। ঠিক এমনই আসাধারন হতে হতেও না হওয়া এক আতিসাধারন মুহূর্তে শত শত গাড়ি-ঘোড়া এড়িয়ে তার দৃষ্টি গিয়ে পড়ল একটু আগেই ফেলে আসা রাস্তার অপর পাশে। ওপাশে ও হঠাৎ যে মুখ দেখল তা তার কল্পনাপ্রসুত না দৃষ্টিভ্রম তা বুঝতে না বুঝতেই ফিরে এল সেই কিশোরী মিতা। মস্তিসষ্কো থেকে হৃদয়কে বেশী গুরুত্ব পেরিয়ে গেল রাস্তার ও পাশে। আশ্চর্য শত গাড়ি-ঘোড়ার মাঝেবও কী অবলীলায় পেরিয়ে গেলো সে।

প্রকৃতি নিষ্ঠুর হলেও যে,কখনো কখনো মমতাময়ী মায়ের চেয়েও বেশী মমতাময়ী। ওপাশে যে মিতার ফেলে আসা বন্ধু,সেই ফেলে আসা বন্ধু। তাদের মিলনে কি প্রকৃতি বাধা দিতে পারে,যখন তাদের মিলনে সে ছিল নিধর,নিরব। মিতা বন্ধুকে চমকে কথা না বলেই আলতো করে হাত ধরে বন্ধুর। ঠিক সে সময়ই বন্ধ হয় গাড়ির ছুটোছুটি।

সমস্ত কিছু যেন স্তব্ধ হয়ে পরে কিছু শোনার জন্য। সেই চিরচেনা মিষ্টি হাসির জন্য। কিন্তু ঘটনা যেমটি ঘটার কথা ছিল তা তো ঘটলই না বরং যা ঘটল তা সম্পূর্ণই অপ্রতাশিত। কথার তুবড়ি ছোটানো ছেলেটি কিছুই না বলে রাস্তা পাড় হবার জন্য পা বাড়ালো। একই সাথে মিতাও।

প্রত্যাশার বিপরীত ঘটনায় বিমুঢ় হয়ে পাড় হল মিতা। যে ছেলেটির ওকে ছাড়া একটি বেলাও চলত না,কারও সুখ-দুঃখ কারোরই চোখ এড়াতো না সেই ছেলেটির কাছ থেকে,তার বন্ধুর কাছ থেকে কিছু শোনার জন্য উদগ্রীব কিশোরী মিতা। কিন্তু...? এপাড়ে এসে মিতার মুখের দিকে তাকিয়ে শুধু ধন্যবাদ বলে নিজের পথে পা বাড়ায় সে। কিন্তু বাঁধা পড়ে,হাতটি যে এখনো ধরা। ছাড়াতে গিয়ে দেখে বড্ড শক্ত সে বাধন।

। অনন্ত স্মিত হেসে বলল,“ আসলে আজকাল বাইরে বেশি বের হই না। তাও কোন কোনদিন বের হতেই হ্য। আর রাস্তা পার হওয়াটাই যেন বেশি সমস্যা । তবে মাঝে মাঝে কেও সাহায্য করে।

না করলেও অবশ্য চলে,তবে করলে তাকে বড্ড আপন লাগে,আসি। রাগে দুঃখে কোন কথাই বলতে পারে মিতা। দুঃখগুল বুকে পাথর হয়ে পড়ে। হাত ছাড়িয়ে অনন্ত হাটে নিজের পথে। মিতাও নিজের পথে।

অনন্ত মনে কোন শংশয় নেই। শুধু একটা বাসনা,হায়! কোনদিন যদি দেখা হত মিতার সাথে। আর মিতা হাটছে জমাট বাঁধা দুঃখ আর একটা শংশয় নিয়ে। কি যেন বুঝতে না পারার,কি যেন ধরতে না পারার শংশয় নিয়ে। মিতার মনে পড়ে যায় আনন্তের শেষ কথা, কর।

বন্ধু আমি তো তোমার পাশেই ছিলাম ,আছই,থাকবো,তবে?আকাশে ভেসে চলা মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে রহস্য পরিষ্কার হয়ে যায় মিতার কাছে...আনন্তের শেষ কথা......পাগলের মত ফিরে আসে মিতা,খুজতে থাকে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে...। ততক্ষনে আনন্ত মিশে গেছে আনন্ত স্বাভাবিক মানুষের ভিরে............ সৌরভ_হাসান

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।