আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অথঃ বৈধ অস্ত্র

দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি মূল্যবোধকে যেন গিলে খেতে বসেছে। ক্ষমতাধরদের মোসাহেবিতে লিপ্ত প্রশাসন থেকে লোপ পেতে চলেছে নীতি-নৈতিকতা। ফলে সন্ত্রাসী তথা সমাজবিরোধীদের পক্ষেও অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া বা বৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। যে দুর্বিনীত অস্ত্রবাজদের কবল থেকে জানমাল রক্ষার জন্য সৎ ও আইনানুগ নাগরিকদের বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, সেই সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজদের হাতে এখন শোভা পাচ্ছে বৈধ অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও তাদের কাছে অসহায়বোধ করছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে খুন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির মামলা থাকার পরও রাজনৈতিক প্রভাবে মিলছে অস্ত্রের লাইসেন্স। এসব বৈধ অস্ত্রও ব্যবহার হচ্ছে খুন-খারাবিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। গত পাঁচ বছরে তিন হাজারের বেশি বৈধ অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ জমা পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এ তালিকায় রয়েছেন খোদ সংসদ সদস্যরাও। এ ছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ হাজারেরও বেশি। একই সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সারা দেশে ফৌজদারি মামলা হয়েছে প্রায় ৫০০ বৈধ অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখার মাধ্যমে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। ফলে রাজনৈতিক তদবির ছাড়া কারও পক্ষে অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া সম্ভব নয়। বৈধের পাশাপাশি ভুয়া লাইসেন্স তৈরি করে অপরাধীরা অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বৈধভাবে আমদানি করা আটটি বিদেশি পিস্তল সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমান সরকারের আমলে বৈধ অস্ত্রধারীদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মী। এসব লাইসেন্সের ক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং এমপিরা তদবির করে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে লাইসেন্সের তদবিরের জন্য এমপিদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। একই দৃশ্য ছিল বিএনপি সরকার আমলেও। বর্তমান সরকারের আমলে সাড়ে নয় হাজারেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এসব লাইসেন্সের বেশির ভাগই ক্ষুদ্রাস্ত্রের। এসব অস্ত্রের এক বড় অংশ ব্যবহার করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। রাজনৈতিক সাইনবোর্ডের আড়ালে পেশাদার অপরাধী হিসেবেই যারা ভূমিকা পালন করে। এই দুর্বিনীতদের কর্মকাণ্ডে দেশের আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বৈধ-অবৈধ সব অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.