আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং আমাদের প্রতিপক্ষ

মনের আয়তনের সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল ঋনাত্নক হোক সম্প্রদায়ের প্রকারভেদ করলে বাংলাদেশে অনেক অনেক সম্প্রদায় পাওয়া যাবে। উধাহরন স্বরূপ মুসলিম সম্প্রদায়, হিন্দু সম্প্রদায়, তরুণ সম্প্রদায়, ছাত্র সম্প্রদায়, নাস্তিক সম্প্রদায় ইত্যাদি ইত্যাদি। বেশীর ভাগ সময়ই আমরা সম্প্রদায় এর মধ্যকার সম্পর্ক গুলো গুলিয়ে ফেলি। একটি আন্দোলন এর মধ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ব্যক্তি থাকতে পারে। এখানে আমাদের দেখতে হবে আন্দলনটি কোন সম্প্রদায়ের কণ্ঠধ্বনি।

প্রাথমিক ভাবে শাহবাগের আন্দোলন ছিল মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠধ্বনি এবং আন্দোলন করেছে বাংলাদেশিরা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠধ্বনি ছাড়া, অন্য যেকোন সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত মতামত এখানে মূল্যহীন। কোন নাস্তিক সম্প্রদায় কি বললো, তা তাদের নিজস্ব মতামত হতে পারে, কিন্তু এটি কখনই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সবার কথা হতে পারে না। বিতর্কিত হলেও আমি ধরে নিচ্ছি যে, রাজীব হায়দার ইসলাম, সৃষ্টিকর্তা এবং নবীজির বিরুদ্ধে লিখা লিখেছেন। নবীজির সময়ও অনেক লোক ইসলামের বিপক্ষে ছিল।

তখন নবীজি কি তাদের হত্যা করেছিলেন?? না, তাদের বুঝিয়েছেন, আমাদের প্রিয় নবী তাদের ধৈর্যসহ বুঝিয়েছেন। ফলে ইসলামের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তাদের সত্য-সুন্দর রাস্তা দেখানো মুসলমানদের দায়িত্ব। পৃথিবীর সব লোক নাস্তিক হলে আল্লাহ্‌ আমাকে কোন শাস্তি দিবেন কিনা জানি না, তবে তাদের সঠিক পথ না দেখানোর জন্য যে শাস্তি দিবেন তা নিশ্চিত। ইসলাম প্রচার ছাড়া কেউ পরকালে শান্তি পাবেনা। তবে তাদের হত্যা করলে, সে তার শাস্তি পাবে আর আপনি পাবেন হত্যার শাস্তি।

…এবার যদি মনেকরি, নাস্তিকতার জন্য রাজীব হায়দারকে খুন করা হয়নি, তাহলে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির ব্যাপারটা এসে যায়। যা মুসলমানদের বিপক্ষে একটি চমৎকার এবং পরীক্ষিত হাতিয়ার। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নতুন কিছুনা। বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছে কিছু কিছু। তবে এবারের তুলনায় সেগুলো কিছুই না।

আমি এখনও ধরে নিচ্ছি রাজীব ছিল নাস্তিক, আর যদি তাকে হত্যার পর নাস্তিক বানানোও চেষ্টা করা হয়, তাহলে তো ধর্ম নিয়ে রাজনীতির ব্যাপারটা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। …নিঃসন্দেহে রাজিবকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল আন্দোলনকে অন্যদিকে প্রবাহিত করা। এটি পরিষ্কার হয়, হত্যা পরবর্তী প্রচার প্রচারণা দেখে। এখানে সাহসীকতার দাবী রাখতে পারেন মাহমুদুর রহমান। পূর্বের সাহসিকতার জন্য তিনি অনেকের বাহবা পেয়েছেন।

ফলে তার সাহস এতই বেড়ে গেছে যে, কার সাথে সাহস দেখাবেন তাই হয়তো ভুলে গেছেন। চিন্তা করেন কোন এক অখ্যাত লোক নবীজি ও সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে কিছু লিখল, আর উনি তা সারা দেশে ছড়িয়ে দিলেন। উনি কি ইসলামের উপকার করলেন?? উনার অপরাধ তো লক্ষ লক্ষ গুন বেশী। নাস্তিকের চিন্তা, কল্পনা তো সৃষ্টিকর্তা বিরোধী হবেই, এটা প্রমানের জন্য কি পত্রিকায় ছাপানো লাগে?? এটা পরিষ্কার যে, মাহমুদুর রহমান চেয়েছিলেন আন্দলনের মধ্যে ধর্মীও রাজনীতি ঢুকাতে এবং প্রমান করতে আন্দোলনটি নাস্তিকদের আন্দোলন। আর এখানেই হল মজা।

প্রথমে উল্লেখিত বিভিন্ন সম্প্রদায় সম্পকিত ধারনাগুলো এখন কাজে লাগবে। ….তিনি ভুলে গেছেন যে, আন্দোলনটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আন্দোলন এবং অংশগ্রহণকারীরা সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশিদের মধ্যে মুসলমান সম্প্রদায়, হিন্দু সম্প্রদায়, ছাত্র সম্প্রদায়, মুক্তিযোদ্ধা সম্প্রদায় এমনকি নাস্তিক সম্প্রদায়ও থাকতে পারে। আন্দোলনে কোন মুসলমান যেমন বলছে না যে বিচার ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী হতে হবে। আবার কোন হিন্দুও বলছে না যে, হিন্দু আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তেমনি কোন নাস্তিকও আন্দোলনে বলেনি যে, সবাই নাস্তিক হয়ে যান। এখন আন্দোলনে একজন মুসলমান, হিন্দু বা নাস্তিকের অংশগ্রহণের জন্য কি সবাই মুসলমান, হিন্দু বা নাস্তিক হয়ে যাবে?? একসাথে একটি ইস্যুতে নাস্তিকের সাথে আন্দোলন করা মানে কি অন্য ইস্যুতেও(নাস্তিকতা) তার সাথে সকলে একমত?? হাস্যকর পুরো চিন্তাধারাই হাস্যকর। এর ফলে কি আন্দোলন কমে যাবে?? আমার মতে আন্দলন আরও শক্তিশালী হওয়া উচিৎ। পূর্বের দাবী গুলর সাথে এখন যুক্ত হবে আমার প্রাণপ্রিয় ধর্ম, নবীজি এবং সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে নোংরা কথা প্রচার করার জন্য শাস্তির দাবী। যার জন্য মুসলমানরা জীবন দিতেও প্রস্তুত।

আমার নতুন দাবীগুলো হল ১) নাস্তিকতার নামে যেকোনো ধর্মকে আঘাত করাই হল জঘন্যতম অপরাধ। তাই রাজীব হায়দারের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমানিত হয়, তবে তার মরণোত্তর বিচার দাবী করি। ২) রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য রাজীব হায়দারকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার দাবী করি। ৩) ধর্মের বিরুদ্ধে নোংরা কথা প্রচার যারা যারা করেছে, তাদের বয়কট ও বিচার দাবী করি। অবশেষে বলি আমরা খুবি আবেগময় জাতি।

ধর্মীও দৃষ্টিকোণে এ আবেগ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাইতো আমরা বারবার ধর্মীও রাজনীতির স্বীকার হই। এই আবেগপ্রবনতার জন্য আমরা শত্রু চিনতে পারিনা। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, আমাদের শত্রু কখনও হিন্দু, খ্রিস্টান, নাস্তিক বা অন্য কোন ধর্ম না। আমদের শত্রু চিনতে হবে।

আমদের শত্রু হল যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, নিজের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে। (পোস্টে রাজীব হায়দারকে নাস্তিক ধরা হয়েছে, যদিও বিষয়টি এখনোও বিতর্কিত) লেখক......... Md. Moshiqur Rahman Mamun http://www.facebook.com/moshiqur.rahman.9 somewhereinblog.net/blog/Moshiqur_Rahman ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.