আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুমায়ুন আজাদ এর প্রবচনগুচ্ছ

সুতো ছেড়া ঘুড়ি

সবাকের ব্লগে অনেক দিন পর ঢুকে হুমায়ুন আজাদ স্যারে চির চেনা বড় প্রিয় প্রবচন গুলো দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না। তাই তাঁর আরও কিছু প্রবচন সনহযুক্ত করে প্রকাশ করলাম... ১. মানুষ সিংহের প্রশংসা করে, কিন্তু আসলে গাধাকেই পছন্দ করে। ২.পুঁজিবাদের ঈশ্বরের নাম টাকা; আর মন্দিরের নাম ব্যাংক। ৩.শ্রদ্ধা হচ্ছে শক্তিমান কারো সাহায্যে স্বার্থোদ্ধারের বিনিময়ে পরিশোধিত পারিশ্রমিক। ৪.আজকাল আমার সাথে কেউ একমত হলে নিজের সম্বন্ধে গভীর সন্দেহ জাগে।

মনে হয় আমি সম্ভবত সত্যভ্রষ্ট হয়েছি, বা নিম্নমাঝারি হয়ে গেছি। ৫.আগে কাননবালারা আসতো পতিতালয় থেকে, এখন আসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ৬.জনপ্রিয়তা হচ্ছে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি। আজকাল অনেকেই জনপ্রিয়তার পথে নেমে যাচ্ছে। ৭.উন্নতি হচ্ছে ওপরের দিকে পতন।

আজকাল অনেকেরই ওপরের দিকে পতন হচ্ছে। ৮.আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল; অসৌন্দর্য শ্লীল। রূপসীর সামান্য নগ্ন বাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে একটুও বিচলিত হয় না। ৯.আমি পাকিস্তনিদের ঘৃনা করি, এমনকি যখন তারা গোলাপ ফুল হাতে আসে তখনও। ১০.মসজিদ ভাংগে ধার্মিকেরা, মন্দির ভাংগে ধর্মিকেরা কিন্তু আমরা যারা এসব ভাংগা-ভাংগীর মধ্যে নাই তারাই অধর্মিক তারাই নাস্তিক।

১১.পৃথিবী যতদিন আছে ততদিন রাজনীতি থাকবেই, নইলে ওই অপদার্থ লোক গুলো কি করবে? ১২.আজকাল টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে পণ্যের চেয়ে পণ্যাটিই বেশি আকর্ষনিয় হয়ে ওঠে এজন্য মানুষ পণ্যের চেয়ে পণ্যাটি পেতেই বেশি আগ্রহী। ১৩.একটি স্থাপত্যকর্ম সম্পর্কে আমার কোন আপত্তি নেই; এবং তার কোন সংস্কারও আমি অনুধাবন করি না। স্থাপত্যকর্মটি হচ্ছে নারীদেহ। ১৪.পরমাত্মীয়ের মৃত্যুর শোকের মধ্যেও মানুষ কিছুটা সুখ বোধ করে। কারণ সে নিজে বেঁচে আছে।

১৫.বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য এখানে যে, প্রধানেরা পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন; আর গৌণরা আবর্তিত হন নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে। ১৬.মহামতি সলোমনের নাকি তিনশো পত্নী আর সাত হাজার উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। ১৭.অধিকাংশ রূপসীর হাসির সৌন্দর্য মাংসপেশীর কৃতিত্বমাত্র, তা হৃদয়ের প্রকাশ নয়।

১৮.মহত্মা গান্ধী বলেছিলেন " আমি হিন্দু, আমি মুসলিম, আমি বৌদ্ধ, আমি খ্রিষ্টান, আমি জৈন, আমি শিখ" বোধকরি এজন্যই ভারত বর্ষে এত সংঘাত। তিনি যদি বলতেন, "আমি হিন্দু নই, আমি মুসলিম নই, আমি বৌদ্ধ নই, আমি খ্রিষ্টান নই, আমি জৈন নই, আমি শিখ নই - আমি মানুষ"- তাহলে কোন সংঘাতই থাকত না ১৯.আজ থেকে ৫০ বছর পর ওরা আমাকেও দেবতা বানবে, তারপর আমার বিরুদ্ধে কোন নতুন প্রতিভা কথা বললে তার টুটি চিপে ধরবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.