আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মকথন -৫

আমি বিশ্বাস করি ... .. .

4th july,10 2205 সর্দিটা ভালোই ধরেছে । নাক বন্ধ একটা । বড়ই কষ্টে আছি ! শুক্রবারে মসজিদে জুম্মার নামায পড়তে গিয়েছিলাম । এটা নতুন কিছু না । ব্যপারটা হল আমার এক বন্ধু তাবলীগে গিয়েছে ।

তার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যেই গিয়েছিলাম । সেখানে গিয়ে তাবলীগ সম্পর্কে কিছু ধারণা পেলাম । নামাযের পর বেশ কিছুক্ষণ বয়ান হল । শুনলাম । সেই বয়ানে ‘দাওয়া’ এর গুরুত্ব বুঝানো হচ্ছিল ।

ব্যাখ্যা দেয়া হল ইসলামে দাওয়া এর গুরুত্ব কত । এর কাজে জড়িত যারা তারা কত সওয়াব পাবেন । আরো অনেক কিছুই বলা হল । তবে পরের দিকে নিজেরা গল্পে মগ্ন ছিলাম বলে আর শোনা হয়ে ওঠেনি । একটু পরে বয়ান শেষ হল ।

খাওয়া দাওয়া হবে । দুপুরে কিছু খাইনি । ক্ষুধা ভালই ছিল । আমি খাওয়ার প্রতি আগ্রহ দেখালাম । কিন্তু একটু পরেই সেই আগ্রহ নষ্ট হয়ে গেল ।

নষ্ট করে দিল আমার বন্ধু । সে শুধু খাবার নিয়মটা বলল । তাতেই আমার খাবার ইচ্ছেটা উবে গেল । খাওয়ার নিয়মটা এরকম , খেতে হবে অনেক বড় একটা plate এ । সেটা কোন সমস্যা না ।

না হয় একটু বড় থালায় খেলামই । এতে কিছু যায় আসে না । কিন্তু এক plate খেতে হবে চারজন করে । এই কথা শুনে আমি এক ধাক্কায় পিছিয়ে গেলাম । বুঝলাম , সবাই ভাই ভাই ।

হয়তো কেউ মামা-চাচা , বা আর কিছু । কারো প্রতি আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই । কিন্তু একই plate এ সবার সাথে খেতে আমার চরম অস্বস্তি লাগে । কখনো এভাবে খাইওনি । আরো ব্যাপার আছে ।

সব খাবারই শুকনা না । খাবারের তালিকাতে ডালও আছে । এই জিনিসটা কিভাবে সবাই এক plate এ খায় এটা আমি এখনো বুঝিনা । যাহোক , সেখানে আর আমার খাওয়া হল না । না খেয়েই বন্ধুকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ।

যখন বাইরে বের হলাম তখন ঝিরঝির করে বৃষ্টি হচ্ছিল । ভালই লাগল । সাথে আরেক বন্ধু ছিল । বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হাঁটতে থাকলাম । একটা চায়ের দোকান চোখে পড়ল ।

গিয়ে বসলাম চা খেতে । বৃষ্টির মধ্যে চা খেতে একটা অন্যরকম মজা পেলাম । আজ সন্ধ্যায় pool খেলে যখন বের হলাম তখন আমার সাথের বন্ধুটি বলল তার নাকি বিশাল আকারের ক্ষিদে পেয়েছে । খাওয়ার প্রস্তাব দিল । খেতে আমার খুব বেশি আপত্তি নেই যদি ভাল খাবার হয় ।

তো গেলাম এক restaurant এ । গিয়ে খাবারের order দিলাম । খাবার এল । খেতে থাকলাম । সমস্যা হল খাওয়ার দিকে খুব বেশি মনযোগ দিতে পারছিলাম না ।

কারণ , পাশের table এ একটা couple ছিল । সেটা আসলে কোন সমস্যা না । আর আমি সাধারণত কারো দিকে নজরও দিই না বা কান পেতে কথাও শুনিনা । কিত্নু আমার বন্ধু খাওয়ার ফাঁকে আমাকে খোঁচা দিল । ইঙ্গিত করল কথা শুনতে ।

আমি আগ্রহ বশত কিছু কথা শুনার চেষ্টা করলাম । একটু পর আমি বুঝতে পারলাম কেন আমি খোঁচা খেয়েছি । পাশের table এ ভদ্রলোকটি তার সাথের সঙ্গীটির কাছে তুমুল চাপা ছেড়ে যাচ্ছিলেন । আর তার সাথের সঙ্গীটিও সম্ভবত সেগুলি হজম করে যাচ্ছিলেন । একবার একটা কথা শুনে আমার বন্ধুটি আমার কানে কানে বলল , ‘উঠে গিয়ে একটা চড় মারি ?’ আমি না করলাম ।

চড় দিলে কি হবে জানিনা । দরকার কি ? বড়ং শুনি , মজা নিই । ওই ভদ্রলোক দাবী করছিলেন যে তিনি Microsoft এ কাজ করেন । কিন্তু তিনি যে বিদ্যার পরিচয় দিলেন তাতে একটূ সন্দেহই হল যে Microsoft আজকাল কাদেরকে কাজে নিচ্ছে । তবে যাই হোক ভদ্রলোকের চাপাগুলি শুনে অনেক মজা পেয়েছি ।

এখনো যে কেউ এরকম চাপা মেরে যেতে পারে তা ভুলেই গিয়েছিলাম । গতকাল argentina আর Germany এর খেলা দেখলাম । আমি অবশ্যই Germany এর supporter ছিলাম এত ব্রাজিল-আার্জেন্টিনার ভীড়ে । সন্ধায় বাইরে ছিলাম । খেলা দেখতে বাসায় ফিরবার একটা তাড়া ছিল ।

তাড়াহুড়ো করেও দেরি হয়ে গেল । যখন খেলা শুরু হয় আমি তখন বাসা থেকে ১৫ minute এর দূরে । রাস্তায় কোন বড় বা ছোট t.v screen দেখলেই উঁকি মারছিলাম । রিকশাতে বসেই হঠাৎ শুনি চিৎকার । ব্যাপারটা কি বুঝতে পারলাম না ।

কারণ তখন আশেপাশে কোন t.v নাই । mobile এ call দিলাম একজন কে । শুনলাম জার্মানী নাকি গোল দিয়েছে । খুশিতে আরেকটু হলে রিকশা থেকে পড়েই যেতাম । যাহোক রিকশা গন্তব্যে পৌঁছল শেষ পর্যন্ত ।

যেখানে রিকশা থামে সেখান থেকে আমার বাসা পর্যন্ত হেঁটেই যেতে হয় । আমি হাঁটলাম না । বাসার দিকে দৌড় দিলাম । যখন পৌঁছলাম ততক্ষনে ২০ minute শেষ । বাকিটূকুই দেখলাম ।

আর ত্তারপরতো সবার জানাই আছে । জার্মানী আার্জেন্টিনা ভেঙ্গেচুরে match টা জিতে নিল । আজ কোন কারণ ছাড়াই একটু যেন ফুর্তিতেই ছিলাম । আজকের লেখা যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন electricity গেল । বারান্দায় গিয়ে বসলাম ।

কফির কাপ হাতে । বাইরে নজর বুলোলাম । মাথায় অনেক চিন্তাই ভর করল । মনে পড়ে গেল দুই দিন আগে বাসায় ফেরার সময়ের কথা । রিকশা না পেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ।

হেঁটেই বাসায় ফিরছিলাম । আমার সাথে আরেকটি ছেলেও ছিল । আসবার সময় দেখলাম এক লোক রাস্তার পাশেই নেশা করছে । তার পাশেই দুইজন পুলিশ একটি truck কে কি কারণে যেন আটকেছে । এই দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল ।

আজ মনে পড়ায় আবারো মন খারাপ হয়ে গেল । আমি কখনো নেশা করিনি । তীব্রভাবে ঘৃণা করি । আর আমার ভাগ্যেই আঘাত হানে এই নেশা । আমার খুব প্রিয় মানুষটা নেশার ছোবল থেকে বেঁচে ফিরেছে ।

আর এখন যার জন্য মন কাঁদে তাকেও টেনে রেখেছে এই নেশার ব্যাধি । কেন আমাকে বারবার এর মধ্যে দিয়েই যেতে হবে ? আমি একবার সাহস করে বলতে পেরেছি । আবার সাহস করে এগোন নিশ্চয়ই খুব কঠিন নয় । আর কঠিন হলেও আমাকে এগোতে হবে । আর যে কিছু করার নেই ।

কি হবে সেটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই । কি হতে হবে সেটাই এই মুহুর্তে আসল ব্যাপার ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।