আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মকথন

জীবন কেটে যায়

অনেক গোধূলী দেখেছি সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি না, সত্যিই ঐ গোধূলীটা ভিন্নতা এনেছিল তার লালিমায়। মেঘগুলো দ্রুত ছুটে যাচ্ছিল অসহায় আকাশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যেন মনেহচ্ছিল ইলেক্ট্রন আর প্রোটন কণাগুলো সন্ধি করে নিউক্লিয়াসে পতিত হয়ে পুরো মডেলটা -ই ধ্বংস করে দিতে চায়। আর হঠাৎ করেই নেমে এসেছিল সন্ধ্যা, প্রেমিকার দীঘল কালো চুলের মত ঠিক আমার হাতের মুঠোয়। আমি বুঝতে পারছিলাম না কেমন করে লম্বচ্ছেদ করতে হয় রৈখিক কোণ থেকে কিংবা গোলকের ভেতর থেকে ওপারের আকাশকে কি করে দেখতে হয়। আসলে সবই কোন কিছু নয় থেকে সৃষ্ট।

তারপর খুব গভীর থেকে আমায় ডেকে এনেছিল একটা শঙ্খচিল, ঠোঁটে ছিল বহ্নিশিখা অথবা রক্তের ছাপ। হয়ত কেউ কেড়ে নিয়েছিল তাজা ফুলের নির্যাস। আমার এখানে চাঁদ ছিল না তাই চাঁদ এসে ধরা দিয়েছিল, প্রবেশ করেছিল বৃত্তে। আমি ঠিক তেমনটি কখনোই ছিলাম না যেমনটি হলে একজন ষঠমী কিংবা জোড় হাতের প্রার্থনার সামনে দাঁড়ানো যায়। কোন দীর্ঘ সমাধানের শাস্ত্র থেকে পাইনি, তথাপি মনেহয়েছিল কোন এক কোণে কেমন অজানা একটা ব্যাথা জেগে ওঠে।

সর্পের মত হয় শরীর। ওপাড়ের সূর্য পেড়িয়ে জোছনায় জড়াতে চেয়েছিল কি? হয়তবা। তবুও মনেহয় পেরোতে পারেনি। যদি কোনদিন ওপারের সূর্য পেড়িয়ে এই বৃত্তে অনায়াসে রেখা হয়ে যেতে পারে তাই এখনো এখানে ভুল করে বলা হয়ে যায় রেখা কিংবা রৈখিকতার কথা। শাস্ত্র কঠিন, জীবন কঠিন বলেই কি? জানিনা।

কয়েকবার করে দেখেছি অসহায় কান্নার অব্যক্ত আহাজারি। ওপাড় দু'টো থেকে অশ্র“ ঝড়তো না তবুও মনেহত কোন বন্যায় ভাসমান কিংবা স্র্রোতের তাড়নায় বহমান। এইসব বলে কি হবে? যা হবার তা হয়ে গেছে। আর কোনদিন ফিরবেনা গন্ধহীন অদৃশ্য লাশকাটা ঘর থেকে, নাম লেখা হয়ে গেছে মৃত্যু পাতায়। তবুও- যদি একটিবার জাগাতে পারি।

এইখানে মাথাগুঁজে বুকের তাবিজ মুখে কামড়ে দিত আর আনমনা হয়ে হয়ত ভাবত দ্বিতীয় আকাশের পদচারণা। তাতে কি...। তারপরও মনেহচ্ছিল অনেক হিসেব এড়িয়ে যাচ্ছি, এখুনি লাগাম দিব; হায়! মুখ যে অবশিষ্ট নেই। বাস্তবতার নিরীখে বন্দি করে দিলে কাব্য মনের খোরাকই হয়, খাদ্যের যোগান দেয় না তথাপি পুষ্টিকর। তাই বের হয়ে আসতে পারছিলাম না গহীণ গহ্বর থেকে, শুনেই যাচ্ছিলাম অপরিচিত কিংবা অজানা আস্ফালন।

আর কত? সব দেখেইতো কয়েকটা সিঁড়ি বেয়ে বামে গিয়েই...........। এখনকার কথা ঠিক ঐ মিশরের ভূমে ধ্বংস হয়ে পড়া বিমানের ভেতর রক্তাক্ত এবং জীবিত জ্ঞানহীন মানুষটার মতই। তৃষ্ণা নেই, বোধ নেই আর ঘুরেফিরে একটা শব্দের দু'টো বর্ণের পরেই অদ্ভুতভাবে খানিকটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে; চাইছি না। অনেকদিন আগে শুনেছিলাম ভারতের কোথায় যেন ঘন সবুজ বৃষ্টি হচ্ছে, তখন বুঝতে পারিনি। দীর্ঘদিন পরে যখন আমারও ছাতা লেগেছিল তখন ঠিকই বুঝেছিলাম এও বুঝেছিলাম সব রংয়ের বৃষ্টিই আপন রংয়ের বহিঃপ্রকাশ।

জোছনা এখনো ভালো লাগে যদিও জানি মৃদু আলোয় দৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। একদিন কোত্থেকে যেন ছুটে এসে রক্তমাখা হাতে গাঢ় নীলবর্ণ মুখে আমার বন্ধূ ফাহিম কি একটা কাগজ হাতে গুঁজে দিয়েছিল, আর তারপরই ও পৃথিবীর সাথে কথাবলা বন্ধ করে দিয়েছিল। ওকে দেখে তখন আমি খুব তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠেছিলাম। পৃথিবীর আলো বাতাসে হয়ত নীরবতার সাথে তাল মেলানো যায় না, বারবার ফিরে যেতে হয় বাধ্যগত গন্ডির মধ্যে। মানবাত্মা খুব স্বাধীনতাকামী বলেই হয়ত ঈশ্বর বারবার পৃথিবীতে পাঠান আর জীবন খুব ঘৃণিত বলেই হয়ত পূর্বস্মৃতি মুছে ফেলেন।

আমার অজান্তেই ঈশ্বর অনেক বুদ্ধিমান; যদিও আমি চাই না। অনেক রাতেই বেরিয়ে পড়ি বারুদ হাতে আর প্রতিদিনই মেরে চলি মূর্তিমান ঈশ্বরদের। এই পৃথিবী ঈশ্বরহীন করব বলে। আর তারপরই.... কথা বলেছিলাম গতকাল রাত্তিরে নগরের রাস্তার সাথে। যেখানে দাঁড়িয়ে আছি ঠিক পায়ের নীচ থেকে চিৎকার, তাকাতেই দেখি ছুরিকাঘাতে আহত যুবক।

জিজ্ঞাসিতেই বলে তুমিও কি তাদেরই কেউ যারা অফুটন্ত কলি ভোগে বাধা প্রদানের অপরাধে আমায় হত্যা করেছিল? আমি বাক্যহীন যান্ত্রিক পায়ে আর একটু এগুতেই হোঁচট খাই রক্তমাখা ছেঁড়া শাড়ির পা'রে, মাথা তুলতেই একটা নগ্ন শরীর চিৎকার করে বলে -আয়, এই নে....আয়; আমি আর সাহস পাই না ১ ইঞ্চি এগুবার....। এর সবকিছুই ঈশ্বরের আড়ালের কথা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।