আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতীয় ধার্মিক, বাংলাদেশী ধর্মান্ধ!!!

নিতান্তই একজন জুনিয়র ব্লগার। এলাকার সেই পুরান টং দোকানে অনেকদিন পর আগের মতো কইরা আড্ডা মারলাম। দোকানে ঢুইকা দেখি টং মামু হিন্দি ছবি ছাইড়া দিয়া রাখছে, কাস্টমারের বিনুদুনের সুবিধার্থে। আড্ডা মারার ফাঁকে ফাঁকে মুভিটার কিছু দৃশ্য চোখে পড়লো, দৃশ্যগুলার সারমর্ম হল এইরূপঃ নায়ক ইন্ডিয়া থাকে, নাইকা থাকে লন্ডনে। নাইকার বাপ বিশাল ধনী মানুষ, কোনওকিছুরই অভাব তার নাই, এককথায় নাইকারা আলট্রা মর্ডান ফ্যামিলি।

আর ওইদিক দিয়া নায়ক থাকে ধর্ম, দেশ প্রেমিক। মুভির একপর্যায়ে দেখলাম, নায়ক লন্ডনে নাইকার বাসায় বেড়াইতে গেছে এক পুজার অনুষ্ঠানে। সেখানে গিয়ে দেখে পুজার অনুষ্ঠানে কোনও পুরোহিত ছাড়া টেপ রেকর্ডারে মন্ত্র পাঠ চলছে, আরেকদিকে অনুষ্ঠানের সবাই উশৃঙ্খল ভাবে ঘুরাফেরা করছে, মদ্যপান করছে। দেশ-ধর্ম প্রেমিক নায়ক এইসব দেখে সহ্য না করতে পেড়ে হুট করে টেপ রেকর্ডার অফ করে দিয়ে সবাইরে ইচ্ছামতন ঝাড়ি দেয়, বলে, এইটা তোমরা প্রার্থনা করছ? নাকি ভগবানের সাথে ফাইজলামি করছো?? এভাবে আমাদের ধর্ম, সংস্কৃতির অপমান করছ তোমরা!! তখন উত্তরে নাইকার বাড়ির লোকজন বলে, আমাদের আধুনিক সোসাইটিতে তো এইভাবেই পূজা হয়, সুবিধা... এতে আমাদের গেট টুগেদারও হয়ে যায়, পার্টিও হয়ে যায়, পূজাও হয়ে যায়। তাছারা পুরোহিত পাওয়াও অনেক ঝামেলার ব্যাপার।

মাঝখান দিয়ে এক লোক নায়ককে বলে উঠে, তুমি বাপু এতো চিল্লাচিল্লি করতেছো, তবে পূজাটা তুমিই পড়িয়ে দেও না !! শুনার সাথে সাথে নায়ক সাহেব কোর্ট, টাই খুলে পুরোহিত সেজে একদম সঠিক নিয়ম অনুযায়ী সবাইকে পূজা করালো। পূজা শেষে দেখা গেলো, সবাই নায়কের কর্মকাণ্ডে অভিভূত হয়ে পড়লো, নায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে গেলো, নিজেদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হল সবাই, নাইকার বাপ মাইয়া জামাই হিসাবে নায়করে পছন্দ করলো ব্লা ব্লা ব্লা...। । ************ পরের অংশ আর দেখি নাই, কারেন্ট গেছিলো গা। মুভির এই অংশটুকু তুলে ধরলাম শুধুমাত্র ওইসব ভারতীয় চলচিত্রকারদের ধর্মীয় মানসিকতাটা বুঝানোর জন্য।

যে তারা সবসময় তাদের ধর্ম-সংস্কৃতিকে কতো ভালো ভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে !! উল্লেখিত মুভির অংশ থেকে বুঝা যায়, নাইকারা উল্টা পাল্টা নিয়মে পূজা করার কারণে নায়ক খ্রিপ্ত হয়েই সেইটা বন্ধ করে দেয়(এখানে নায়ককে কেউ ধর্মান্ধ হিসেবে উপস্থান করে নি), এবং পরিশেষে সঠিক নিয়মে পূজা সম্পাদন করার পর সবাই নায়ককে প্রচুর সমাদর করে (বরং তারা নায়ককে ডিসেন্ট, ধার্মিক হিসেবে উপস্থাপন করেছে)। অথচ সেইম ব্যাপারটা আমাদের বাংলাদেশ ও ইসলাম ধর্ম নিয়া হইলে আমাদের মিডিয়া ব্যাক্তিত্তরা ব্যাপারটাকে যেমন ভাবে ফুটিয়ে তুলে/তুলতোঃ বেঠিক নিয়মে প্রার্থনা করতে বাঁধা দেয়ার কারণে নায়ককে উপস্থাপন করা হতো কাটমোল্লা/জঙ্গি/ধর্মান্ধ হিসেবে, আর গল্পের নাইকার বাপদের উপস্থাপন করা হতো আধুনিক সঠিক মুসলিম হিসেবে। বরং নায়ককে উদ্দেশ্য করে বলা নাইকার বাপের এমন একটা ডায়লগ জুরে দিতো এক্সটা " তুই কাটমোল্লা/ ধর্মান্ধ!! আমাদের ধর্মানুভুতি এতো ঠুনকো না যে, মাল খাইতে খাইতে প্রার্থনা করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে !!"" ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.