মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া
উৎসব উৎসব ভাবে চারদিক ছেয়ে গেছে আর বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আছে গোবরের গন্ধ। গরু ছাগল উট ইত্যাদি ইত্যাদি। সকালে ছোটভাই এর সাথে একটা গবেষণা করলাম। কুরবানী করা যায় এইসব প্রাণীর ক্রাইটেরিয়া কি? মুরগী বা গাধাকে কেন বাদ দেয়া হবে ইত্যাদি।
উৎসবের প্রয়োজন মানব জীবনে কতটুকু সেটা আমি জানি না।
সেটা ভ্যালেন্টাইনস ডেতে হুড তোলা রিকশায় লিপস্টিক দিয়ে রাঙ্গানো ঠোট চোষা বা ভরপেটে প্রাণীজ আমিষ খাওয়ার উপলক্ষ তৈরী করে দেয়া নাকি কোন সমাজতাত্বিক কারন আছে পৃথিবীজুড়ে উৎসবের দিনক্ষণ করার জন্যে। মানুষ হিসেবে বেচে থাকি যার অধিকাংশ সময়ই যায় কুৎসিত অর্থহীনতা দিয়ে আর ক্ষুদ্র কিছু সময় যায় সুন্দর অর্থহীনতা দিয়ে। এইসকল রিচুয়াল আর ইস্টার এগের ডিম হতে হয়ত সেই নিজস্ববোধের নিরাপত্তাহীনতা জনিত কোন ডিফেন্স মেকানিজম বের হয়। আমি সঠিক বুঝতে পারি না।
আপাতত উৎসব হিসেবে গোবরের গন্ধ এবং আগামীকাল দেখা যাবে গলা কাটা গরুর বেকুবি ঘরঘর শব্দ।
কাটা গলা দিয়েও বেচারা শ্বাস নেবার চেষ্টা করে। আমরা যেহেতু ফুড চেইনে উপরের দিকে থাকি সেহেতু গলা কাটা আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাস। প্রয়োজনে স্বজাতির গলা কাটতেও আমরা দ্বিধা করি না। সুতরাং রক্তারক্তি দেখে উত্তরাধুনিক দার্শনিক সেজে নির্মমতার সার্টিফিকেট বিতরনও আমার কাছে ভন্ডামী মনে হয়। তবে বুদ্ধিবৃত্তি দিয়ে আমাদের সর্বদা যে আড়াল করে রাখার চেষ্টা আছে যে আমরা কতটা প্রবৃত্তি এবং সারভাইবালের দাশ সেহেতু এইসব বুজরকির কোন অর্থ নেই।
আমাদের বরং গুহায় ফিরে গিয়ে হলেও সৎ হওয়া উচিৎ। অর্জিত জ্ঞাণ এবং সংস্কৃতির ধারনা কোনদিন সৎ হবে না যতদিন না আমরা একটা জৈবিক দেহ নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছি।
উৎসব সম্পর্কে আমার আগ্রহ নেই। আমি মানুষের ভীড়ে অসুস্থ বোধ করি। কুশল জিজ্ঞাসার সামাজিক আচার আর আন্তরিকতাহীন হাসির প্রচলনে বস্তাবস্তা থুতু ফেলেও উৎসবের ঘুটি হয়ে যেতে হয়।
এই মানব সমুদ্রের পানি সুপেয় নয়, অন্তত নাগরিক নর্দমা দ্বারা দুষিত। এরচেয়ে আমার প্রিয়া আর তার ঠোট অনেক আকর্ষী এবং তাকে আকড়ে ধরে আমি অনেক সুখ পাই। শরীর মানুষের জীবনে বুদ্ধিবৃত্তিকে হাস্যকর বাহুল্যে এতদিনেও পরিনত করে নি দেখে আমি অবাক হই। এবং মনের মেটাবলিজমে উৎসাহ হারাই।
আমি যদিও জানি সবুজের ঘ্রাণ, আমার প্রিয়ার শরীরের স্পর্শ, তার ঠোটের অধিকার, শীতের শিশিরে জমা সূর্যের টুকরা, সবকিছুই শরীরি অনুভুতি এবং ইন্দ্রিয় সমুহের কানামাছি।
তারপরও উৎসবের দিনে আমি উৎসবে আক্রান্ত মানুষদের নিজস্ব অর্থহীনতা সম্পর্কে সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন না করে আমি তীব্র একা হয়ে যাই।
ভাবছি তিন ক্রেডিটের কোর্স হিসেব অর্থময়তার ভন্ডামো শিখব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।