আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তালেবান যেভাবে শক্তির আধার

অজানাকে জানতে ছুটছি অবিরাম...!

পর্যবেক্ষক আফগানিস্তানে বর্তমান তালেবান জঙ্গিরা লক্ষণীয়ভাবেই একটি ভিন্ন আন্দোলনে রূপ নিয়েছে সেই দিনের তুলনায়, যেদিন তাদের একচোখের নেতা মোল্লা ওমর কান্দাহারে আমেরিকান বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে পড়তে একটি মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যান। ঘটনাটি ২০০১ সালের ডিসেম্বরের। সেই মোল্লা ওমর এখনো তালেবানের নেতা। আফগানিস্তানের এক ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা সম্প্রতি টাইমকে বলেন- ধারণা করা হয়, মোল্লা ওমর পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী কোনো এলাকায় পালিয়ে আছেন। সেটি কোয়েটা শহরের আশপাশ কিংবা বেলুচিস্তানের দুর্গম মরু এলাকার জাব অঞ্চল হতে পারে।

এদিকে নেতা মোল্লা ওমর পালিয়ে বেড়ালেও ইদানীং তালেবান (তাদের তুলনায়) একটি বড় ও অসম শক্তিকে প্রায় ঘিরে ফেলেছে। এ শক্তি ৬৩ হাজার প্রশিক্ষিত আমেরিকান সেনা এবং তাদের সহযোগী ন্যাটো বাহিনী। প্রশ্ন উঠেছেÑ প্রায় আট বছরের গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে তালেবান জঙ্গিরা এতো বড় শক্তিকে কীভাবে কুপোকাত করে ফেলতে শুরু করেছে আর তাদের সে শক্তির মূলমন্ত্র বা ভিত্তিই বা কোথায়? তালেবান কোনো একস্তর বা একশিলা শক্তি নয়। তাদের রয়েছে কয়েকস্তর ব্যুহ। তালেবান ব্যুহের তিনস্তরের প্রথমটি সাবেক তালেবান কমান্ডারদের সহযোগে গঠিত একটি হার্ডকোর (কেন্দ্রীয় শক্তি) গ্রুপ।

এরা পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং নিজেদের অভয়ারণ্যগুলোর বাইরে তৎপর। এছাড়া পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে তাদের সুসর্ম্পক রয়েছে (যদিও ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে)। এ দলের অন্যতম একজন মোল্লা ওমর। দ্বিতীয় দলটি আল কায়েদা জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। এদের সম্পৃক্ততা বর্তমানে আরব, চেচেন, উজবেক বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গেও হয়েছে।

এরা আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় সক্রিয়। সবশেষ ব্যুহ এবং সবচেয়ে বড় গ্রুপের সদস্য হচ্ছে আফগানজুড়ে বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠী, যারা তালেবান না হয়েও তাদের সবচেয়ে বড় মিত্র। এটি হয়েছে প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত বিভিন্ন প্রাদেশিক এমপি-মন্ত্রী, যারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য একটি উপজাতি গোষ্ঠীকে আরেকটির পেছনে লেলিয়ে দেয়। এ দলের অন্তর্ভুক্ত হয় আরেক পর্যায়ের বেসামরিক বাসিন্দা, যারা প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে। এরা বিভিন্ন সময়ে আমেরিকান বা ন্যাটো বাহিনীর হামলায় নিজেদের আত্মীয়স্বজন হারিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্যও তালেবানের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে।

আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনা কর্মকর্তা, পশ্চিমা কূটনীতিক এবং আফগান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে টাইমসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে একটি কথাই বলেছেন, তালেবানের ব্যুহ ভেদ করা খুবই দুরূহ। কেননা তারা একশিলা নয়। দেশ ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে আছে তারা। এখন প্রশ্ন আসে, তালেবান কতো দূর এগিয়েছে। জবাবে বলা যায়, হেলমান্দ প্রদেশের বিশাল দক্ষিণাংশ, কান্দাহার, জাবাল, ওরুগজান, পাকতিয়া, ও পাকতিকা প্রদেশ নিয়ে এরই মধ্যে তালেবান একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র কায়েম করে ফেলেছে প্রায়।

কেননা এ বিশাল অঞ্চলে চলছে তাদের সরকার, রয়েছে রেডিও স্টেশন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত। সম্প্রতি একটি পশ্চিমা জরিপেও বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে তালেবান। দেশটির ৯৭ ভাগ অঞ্চলেই সক্রিয় তারা। সূত্র : টাইম অনলাইন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.