আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাঁচার ভেতর ১১ বছর!

বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়’—এই কথাটি মা ও ছেলের ভালোবাসার মধ্যেও সত্যি হয়ে উঠবে এমনটা নিশ্চয়ই কল্পনাতীত। তবে কল্পনা না করলেও সত্য যে, মায়ের ভালোবাসাও একসময় কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে যায়। ভালোবেসে ছেলেকে বুকে আগলে রাখার বদলে লোহার তৈরি খাঁচার ভেতর বন্দী করে রেখেছেন এক মা। তা-ও আবার টানা ১১ বছর। এই ঘটনা ঘটেছে চীনের জিয়াংজি প্রদেশের শাংফান গ্রামে।


আজ সোমবার এমএসএন নিউজের এক খবরে জানা গেছে, উ ইউয়ানহন নামের ৪২ বছর বয়সের ছেলেকে ২০০২ সাল থেকে লোহার তৈরি একটি খাঁচার ভেতর আটকে রেখেছেন তাঁর মা ওয়াং মুজিয়ান। শুধু তাই নয়, সেই খাঁচার ভেতরেই তাঁর পায়ে বাঁধা রয়েছে শক্ত লোহার শিকল।
ইউয়ানহনের মা ওয়াং মুজিয়ান বলেন, ইউয়ানহন মানসিকভাবে অসুস্থ। যখন তাঁর বয়স ১৫, তখন তাঁর সিজোফ্রেনিয়া রোগ ধরা পড়ে। এভাবেই চলাফেরা করতেন ইউয়ানহন।

২০০১ সালে কোনো কারণ ছাড়াই ১৩ বছরের একটি ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন ইউয়ানহন। এরপর তাঁকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় গ্রেপ্তারের এক বছর পর তাঁকে ছেড়ে দেয় জিয়াংজি প্রদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষ। এরপর ইউয়ানহনের মা ও পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ছোট একটি খাঁচায় বন্দী করে রাখেন। কিন্তু কিছুদিন পর ওই খাঁচা থেকে পালিয়ে যান ইউয়ানহন।

এ ঘটনার পর আবার নতুন করে লোহা দিয়ে শক্ত একটি খাঁচা তৈরি করেন তাঁর মা। দিনে তিনবার তাঁকে খাবার দেওয়া হয়। টয়লেট সারার প্রয়োজন হলে ওই খাঁচার ভেতরেই একটি পাত্র এগিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই ওই খাঁচার ভেতরে পায়ে লোহার শিকল নিয়ে বন্দী দিন কাটাচ্ছেন ইউয়ানহন।
ইউয়ানহনের মা ওয়াং মুজিয়ান আরও বলেন, ‘ইউয়ানহন পাগল হতে পারে, কাউকে মেরেও ফেলতে পারে।

কিন্তু তার পরও সে আমার ছেলে। তাঁকে আমি নিজ হাতে খাঁচায় বন্দী করে রেখেছি। এটা আমার নিজেই নিজেকে ছুরি মারার মতো যন্ত্রণার। আমি সব সময় তাঁকে খাবার খেতে দিই, তাঁর পাশে বসি। মাঝে মাঝে কান্নাকাটি করি।

কিন্তু কাঁদতে কাঁদতে এখন আমার চোখের জলও শুকিয়ে গেছে। ’
চীনে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পুনর্বাসনের বিধি আছে। কিন্তু নানইয়াং থানার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি ইউয়ানহনের ব্যাপারে এখনো কিছু জানেন না। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।