আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাঁচার ভিতর অচিন পাখী[ভৌতিক]

একজন ইউনুস খান বেঁচে থাকতে চান গণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উদ্যেগ গ্রহণের মাঝে।

[যারা ভূতে বিশ্বাস করেন না বা করতে চাননা তাদের জন্য এই সত্য ঘটনাটি] আমার মাছ ধরার অভ্যাসটা নিশায় পরিণিত হয়ে গেলো। প্রতিদিন রাতে কুঁচ নিয়ে মাছ ধরতে যেতে না পারলে রাতে আমার ভালো ঘুমই হতোনা। আমি আর বাবুল ভাই রাত্র ১১ টা বাজলেই মাছ ধরতে চলে যেতাম। আজকে বাবুল ভাই কোনভাবেই মাছ ধরতে যাবেনা।

কেননা মিসির কাকারে আজকে চরের মাঝে পুড়েছে। সকালবেলা শুনেছি মিসির কাকা মারা গেছে। হিন্দুরা আবার লাশ বেশীক্ষণ রাখেনা। তাই সন্ধার মাঝেই মিসির কাকারে পুড়ে ফেলা হয়েছে। বাবুল ভাই বললো, যেদিন কোন লাশ পোড়া হয় সেদিন নাকি ঐ লাশের প্রেতাত্না ঘুরে বেড়ায়।

আমিও তার কথায় ভয় পেয়ে গেলাম। তাই সেদিন আর মাছ ধরতে যায়নি। কিন্তু পরের দিন আর মন বাঁধ মানলোনা। আমার পাগলামী আর সাহস দেখে বাবুল ভাইও রাজী হয়ে গেলো। ১১টায় আমি বাবুল ভাইয়ের দোকানে কুঁচ, লাইট, খালই নিয়ে চলে আসলাম।

বের হবো ঠিক এমন সময় ঝুপকরে বৃষ্টি নেমে পড়লো। বাবুল ভাই বললো বৃষ্টি হলে নাকি ভালো কারন তখন পানি পরিষ্কার থাকে আর মাছেরাও উপরে উঠে আসে। আমরা বসে বসে প্লান করতে লাগলাম কিভাবে যাবো, কোথায় কোথায় মাছ ধরতে যাবো? ১২ টার দিকে আমরা মাছ ধরতে বের হয়ে গেলাম। চারদিকে প্রচন্ড অন্ধকার। দুইহাত সামনে কি আছে সেটাও দেখা যাচ্ছেনা।

আমি আর বাবুল ভাই নদীর পাড় ধরে ধরে মাছ ধরছি। সা-ঝাঁক পানিতে বাবুল ভাইয়ের কুঁচ মারার শব্দে বুকের ভিতর কেমন জানি করে উঠে। বাবুল ভাই ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো আজকে মাছ বেশী। অল্প সময়ের মাঝেই খালই ভরে গেলো। আমরা বাড়িতে আসার জন্য রওনা হলাম।

চরের মাঝখানেই মিসির কাকার শশান। আমরা তাই হেকিমদের বাড়ির পাশ দিয়ে আসার মনস্থির করেছি। অন্ধকার ভেদ করে কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। আমরা হাঁটছি। হঠাৎ........... হঠাৎ আমরা লক্ষ্য করলাম যে আমরা মিসির কাকার শশানের সামনে হাজির।

অল্পের জন্য নাভি ঢেকে রেখেছে যে পাত্রটা দিয়ে সেটার উপর আমি লাত্থিই মেরে দিছিলাম। সাদা কাপড় দিয়ে ঘেরা জায়গাটা থেকে উদ্ভুধ ধূপের গন্ধ বের হচ্ছে। বাবুল ভাই শুধু বললো রাস্তা হাট। আমি অবাক হয়ে গেলাম এত সতর্কতার মাঝেও এইখানে কিভাবে আসলাম। খেয়াল করলাম আমার বামে দিয়ে কেউ হাটছে।

বাবুল ভাই আমার ডানপাশে। আমি বাবুল ভাইকে টর্চটা দিতে বললাম। কেন সে আমার কাছে জানতে চাইলে বললাম মাছ গুলো দেখতে। সে বললো দেখলানা খালই ভরপুর। আমি আবার বললে লাইটটা আমার কাছে দিলো।

আমি কৌশলে বামে লাইট মারলাম যাতে বাবুল ভাই কিছু না বুঝে। শুধু দেখলাম আমার লাইটের আলোর বাইরে একটা কালো হাতির মতো কিছু একটা গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। আমি আল্লার নাম ঝপা শুরু করলাম। এই ক্ষেতে আমি কখনই মাছ দেখি নাই। আজকে এতো মাছ দেখে আমি অবাক।

শিং, মাগুর, বড় বড় টাকি....... বাবুল ভাই এই মাছ না ধরে কিছুতেই যাবেনা। আমি বুঝতে পারছিলাম কোন একটা সমস্যা আছে। তাই বাবুল ভাইকে বললাম তুমি না আসলে আমি একাই চলে যাবো। শেষে বাবুল ভাই রাগ করে আমার সাথে আসতে লাগলো। এত রাতে চরের ভিতর খাঁচা দেখে আমরা অবাক হয়ে গেলাম।

আশ্চর্যের বিষয় হলো খাচাটি বার বার আমাদের সামনেই লক্ষ্য করি। শেষে বাবুল ভাই রাগ করে খাঁচাটি কুঁচ দিয়ে উল্টে দিলো। যা দেখলাম তাতে দুইজনের মুখ দিয়ে আর কোন সাউন্ড বের হলো না। সোজা হাটা শুরু করলাম এবং বাজারে এসে পৌছালাম। পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি গতরাতে চড়ের ভিতর অনেক কিছু ঘটেছে এর মাঝে দুইজনকে নাকি গাছে হাত-পা বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।

মজিদ ভাই আর আজিতকে গাছ থেকে নামানোর পর ১০ দিন তারা কোন কথায় বলে নাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।