আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাঁও গেরামের খোলা চিঠি : মাননীয় প্রধানমন্ত্রি, দাঁড়ান কথা আছে।

মশিউর রহমান মিঠু

মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা আফা, বাংলাদেশের গাঁও-গেরামের আবাল-বৃদ্ধ-বিনতা ভূখা-নাঙ্গা লক্ষ-কোটি জনতার হাজার হাজার সালাম নিবেন। যথন আপনার নিকট লিখতে বসলাম তখন বাজারের পেঁয়াজ-মরিচের ঝাঁঝে চোখ এক্কারে লাল হই গেছে, তার উপরে চালের চামও চড়া। আমাদের দ্রব্যপন্যের বাজারের মোটা শরীরে যেন হাজার রোগ। একবার তার এক রোগ ঠেলা দিয়া উঠে। এক বার চিনির দাম বাড়ে তো আরোক বার ডালের দাম বাড়ে।

আল্লার মেহেরে জিনিস পত্রের দাম একবার বাইড়া যাইতে পারলে আর নামতে জানে না। এ অবস্থায় থাইকা যখন কোন জিনিসের দাম আরেক ঠেলা, বাড়ে তখন আপনেরা বলেন ওইটা বাদে বাকি জিনিসের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। আর এই সুযোগে বাজারের কর্তা-কারবারীরা পকেট লাল করতেছে। চালের দাম কেজিতে ২টাকা বাড়লে গরীরের পকেট থেকে কত লক্ষ কোটি টাকা ওই কর্তা কারবারীদের পকেটে চইলা যায় তা আপনার মন্ত্রি উপদেষ্টাদের হিসাব করার সময় নাই। তারা রোধ হয় উন্নয়নের সাইন বোর্ড বানাইতে ব্যস্ত।

মাননীয় প্রধান মন্ত্রি, আগষ্ট মাস শোকের মাস। আপনার গোটা পরিবারকে নিশ্চিন্ন করার মিশনে সেদিন ঘাতকরা নেমেছিলো। কিন্তু আপনি ভাগ্যগুলো বেঁচে গেছেন। এর পরও আপনাকে অন্তত দুই বার বোমা মেরে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। করুনাময়ের দয়ায় আপনে বেচেঁ গেছেন।

আপনে কইছিলেন দেশের ও মানুষের সেবা করা ছাড়া আপনার জীবনে আর চাওয়া পাওয়া নাই। কিন্তু আপনে আমাদের গাও গেরামের মানুষের চোখ দিয়া দেশটারে দেখলেন না। করুনাময়ের করুনার প্রতিদান দিতে পারলেন না। সাধারণ মানুষের মমতা ও ভালোবাসার সত্যিকারের মূল্য দিলেন লোক দেখানো। টাকাওয়ালাদের মূল্যই আপনের কাছে বেশি।

এটা না হলে শেয়ার বাজার ডাকাতি হতে পারতো না, রাজনীতিতে ভূঁইফোড় লোকদের সংখ্যা বাড়তো না এবং রাজনীতিতে দুর্বত্তায়ন হতে বৃদ্ধি পাইতো না। আপনার সরকারের নীতি নিতির বিষয়তো আমরা বুঝি না, পরীক্ষিত নেতাদের দূরে ঠেইলা দিয়া সরকারের ব্যার্থতার বোঝা আরো ভারি করিলেন। এখন সাইন বোর্ড লাগাই উন্নয়নের ঢোল বাজাইতেছেন। তা বাজাইতে থাকেন: আপনাগো টেকা পয়সার অভাব নাই। তবে না বাজাইলেও চলত, কথায় আছে না, খালি কলসি এমতে এমতে বাজে।

মহাত্মা আহমদ ছফা বলেছিলেন, আওয়ামীলীগ যখন হাইরা যায় তখন গোটা দেশ পরাজিত হয়। আহমদ ছফা আওয়ামীগীগের মিত্র ছিলেন বলে শুনা যায় নাই, তবুও তিনি তখনকার পেক্ষাপটে কথাটি বলেছিলেন; কারণ আওয়ামীলীগ ক্ষমতা থেকে পরাস্ত হলে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তাদের অভ্যন্তরে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে বেশি। কিন্তু রাজনীতিকে যে দুর্বৃত্তপনায় বেড়েছে, তাতে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী আওয়ামীলীগকে আর খ্ুঁজে পাওয়া যায় না আমরা গাও গেরামের মানুষ রাজনীতি বুুঝি না। তবে দেশ যে একটা সংকটের মধ্যে দিয়া যাইতেছে তা বুঝতে পারি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়া পক্ষে - বিপক্ষে বিস্তর কথা বারতা হইতেছে।

কিন্তু দেশের দূনীতি-দুর্শাসনে প্রধান দুই দলই সমান পারদর্শী। আমাগো বটতলার বছির মিয়া কইলো,“কেয়ারটেকার সরকারের শানে নূযূল অইলো: আম্লীগ ক্ষেমতায় যাইবো না বিপ্নি ক্ষেমতায় যাইবো তার হিসাব। ’ এই দুই দলের যে-ই ক্ষমতায় যাক না কেন আমাগো ভোগান্তি কমবো বলে মনে হয় না। এদিকে আমাগো নসু মাস্টারের বেটা যোগাযোগমন্ত্রি ওবায়দুল কাদের দুই-চার খান খাটি কথা বলতেছেন। ভারতের সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের এক তরফা বন্ধুত্বের লজ্জকর সম্পর্কের কথা তিনিই প্রথম উচ্চারন করছেন।

আবার ছাত্র ও যুব লীগের দূর্বৃত্তপনার খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। ভারত বাংলাদেশ সরকারের মত এমন নোকরবন্ধু পাইয়া বেজায় খুশি। দ্যাশ-বিদেশের কুটনীতিকরা এটাকে অনায্য বন্ধুত্ব বলতেছে। কারণ কার্যত ভারত বর্তমান সরকারের সাথে চুক্তির কোন দাবীই পুরণ করতে পারে নাই। এদিকে আপনার পররাষ্ট্রমন্ত্রি ভারত বন্ধুতে গদ গদ ভাব নিয়া আছেন।

আমাদের খলিফার হাটের রফিক মিয়া একটা গল্প বলে, গল্পটা এই রকম: একবার এক সিংহ নদীর উজানে দাঁড়াইয়া নিচে দেখতে পেলো একটা ভেড়ার বাচ্ছা ঘাস খাইতেছে। সিংহ বলল, কিরে ভেড়ার বাচ্ছা আমি পানি খাবার সময় তুই নদীর পানি ঘোলা করছস ক্যান। ভেড়ার বাচ্ছা বলল, হুজুর আমি তো পানি ঘোলা করি নাই। আর পানি ঘোলা করলে সে পানি ত নিচের দিগেই যায়। উপরে আপনার দিগে যায় না।

সিংহ হুংকার দিয়া বলে, তুই না করলে তোর বাপে অথবা তোর দাদায় পানি ঘোলা করছে। সুতরাং তোরে আমি খামু। ভারতে সীমানা রক্ষি বাহিনী যখন বাংলাদেশে দু’চার জন মানুষকে নিত্যনতুন ধরে নিয়ে যায় আর নির্যাতন করে তখন রফিক মিয়ার গল্পের শানে নুযুল বুঝতে আসুবিদা হয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রি, আমাগো শরীয়তপুরের রুহুল বন্দুকশি’র কথা খান আপনারে শুনাই এ লেখা শেষ করুম। রুহুল বলে, জাতির পিতার হত্যা ইস্যু নিয়া আম্লীগ অনেক বছর রাজনীতি করছেন।

সেইটা শেষ হওয়ার পর এখন যুদ্ধরাধীগো এক/দুই সিজন রাজনীতি করবো। মুক্ষু মানুষ, তাই আমার গুরুচন্ডালী মার্কা লেখা দিয়া আর আপনার সময় নস্ট করতে চাই না। ইশারা-ই কাফি! ইতি মরমি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।