আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতীয় পাচারচক্রের থাবায় বাংলাদেশি তরুণীরা

আমার একটা নদী ছিল জানলো না তো কেউ ভারতকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক নারী ও পতিতা ব্যবসায়ী চক্র তাদের ঘৃণ্য ব্যবসার যোগান সচল রাখতে অনেকদিন ধরেই হাত বাড়িয়ে রেখেছে বাংলাদেশের দিকে। পাচার হওয়া বাংলাদেশি নারীদের ভারতের বিভিন্ন শহরে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার চাঞ্চল্যকর কাহিনী মাঝেমধ্যেই প্রকাশ পায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে বাংলাদেশের সরকারকে এ নিয়ে তৎপর হতে দেখা যায়না। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে খুব একটা গুরুত্ব পায়না এসব ঘটনা। সম্প্রতি ভারতের একটি সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে পাচার হওয়া বাংলাদেশি নারীদের কীভাবে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে নামানো হয়।

পাশাপাশি উদঘাটিত হয়েছে অপরাধী চক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্কেরও বিভিন্ন তথ্য। খবরে বলা হয়েছে, নেটওয়ার্কটির বিস্তৃতি গোটা ভারত জুড়েই। আর এদিকে বাংলাদেশের কাহিনীটি স্রেফ প্রলোভন নির্ভর। বাংলাদেশি কম বয়সি মেয়েরাই মূল টার্গেট। তাদের ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভনে ফেলে ভারতে চালান করে চক্রটি।

এদিকে তাদের হয়ে কাজ করে পাচারকারী একটি দল। তারাই ওই মেয়েদের বিক্রি করে চক্রটির কাছে। পরে এই মেয়েরা বিকোয় কোলকাতা, মুম্বাই, হায়দরাবাদসহ ভারতের বিভিন্ন শহরের পতিতালয়ে। আর সেখানেই শুরু হয় দুর্ভোগের গল্প। পতিতাবৃত্তির অভিশপ্ত জীবন তাদের টেনে নিয়ে যায় এক শহর থেকে আরেক শহরে।

তবে সেটা তাদের ইচ্ছায় নয়। বিভিন্ন চক্রের হাতে হাতে নিয়মিত হাতবদল হতে থাকে তারা। সম্প্রতি এ রকমই একটি চক্রের সরূপ উদঘাটন করে দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের পুলিশ। কেরালার কোচি শহরের এরনাকুলামে দেহ ব্যবসা পরিচালনাকারী ওই চক্রের আস্তানায় হানা দেয় পুলিশ। সেখানেই সন্ধান মেলে বাংলাদেশি তরুণীদের।

এভাবে অহরহই বাংলাদেশ থেকে নারীদের পাচার করে আনার ঘটনা ঘটছে বলে উদঘাটিত হয়েছে পুলিশি তদন্তে। এরনাকুলাম পুলিশ জানায়, ধরা পড়ার মাত্র কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ থেকে আরও কয়েক ডজন মেয়েকে এরনাকুলামে আনে ওই চক্র। পরে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে চালান দেওয়া হয় তাদের। গত বৃহস্পতিবার এরনাকুলামের আলুভা এলাকায় পাচারকারীদের ওই আস্তানায় হানা দেয় পুলিশ। পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় ১৯ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি তরুণীকে।

বাংলাদেশি ওই মেয়ের থেকেই পাওয়া যায় চক্রগুলোর চাঞ্চল্যকর নানা কর্মকাণ্ডের তথ্য। ৪০ হাজার রুপিতে কেনা মেয়েটিকে মাত্র নয়দিন আগে সেখানে আনা হয় বলে জানিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। এরনাকুলামের সুপারিটেন্ডেন্ট অব পুলিশ এস সতীশ বিনো সংবাদমাধ্যমকে জানান ওই মেয়েটির কাছ থেকে পাচারকারী সিন্ডিকিটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন তারা। এখন ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই চক্রটির অন্যান্য শাখা প্রশাখা সনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। মেয়েটিকে কেরালায় আনার আগে মুম্বাই ও হায়দরাবাদ ঘুরিয়ে আনা হয় বলে জানান সতীশ বিনো।

তিনি আরও জানান, নারী ব্যবসায়ী এ চক্রগুলো শহরতলীর ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকাগুলোতে তাদের আস্তানা গাড়ে। সাধারণত বাইরে থাকা আসা অভিবাসী শ্রমিকদের আবাস ওই সব এলাকায় পরিচয় গোপন করে তৎপরতা চালানো অনেক সহজ হয় তাদের জন্য। এর আগেও বাংলাদেশ থেকে পাচার করা নারীদের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার ঘটনা সংবাদমাধ্যমে উঠে আসলেও এ ব্যাপারে টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন পক্ষকে ম্যানেজ করেই পাচারকারীরা তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। অল্প কিছু অর্থের বিনিময়ে অন্য দেশে পতিতাবৃত্তিতে নিজের দেশের অসহায় মেয়েদের পাঠানোর মত জঘন্য কাজ করতে বুক কাঁপে না তাদের।

এভাবে প্রতি বছর কত মেয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে ভারতের বিভিন্ন পতিতাপল্লীতে দেহ ব্যবসায় ব্যবহৃত হচ্ছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই কারও কাছেই। অনেকের ধারণা পাচারকারীদের সিন্ডিকেট অনেক শক্তিশালী হওয়ায় এবং এর সঙ্গে অনেক রাঘব বোয়াল যুক্ত থাকায় বছরের পর বছর ধরে অবাধে নিজেদের ঘৃণ্য তৎপরতা চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে পাচারকারীরা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবেই কী অন্য দেশের পতিতালয়ে বিক্রি হওয়ার জন্য পাচার হতে থাকবে বাংলাদেশের অসহায় তরুণী, কিশোরীরা। দেশের প্রশাসন ও সচেতন সমাজের টনক কী কখনই নড়বে না? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.