আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবাকে নিয়ে কি বলব?



আজকে সামহোয়ারে লগ করতেই একগাদা পোস্ট বাবাকে নিয়ে। জানলাম আজ বাবা দিবস। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হলো। সকলে জানে অথচ এই অধম কিনা জানে না! বাবা মারা গেলেন প্রায় বছর দুয়েক হলো - ফুসফুস ক্যাস্সারে। অসুখটা ধরা পড়ার পর মাত্র বেঁচেছিলেন ২১ দিন।

এই ক'টা দিনই বাবার সাথে আমার সবচাইতে নিবিড় মুহূর্ত। বাবাকে আমি বরাবরই ভয় পেয়ে বড় হয়েছি। তবে শেষদিকে তাকে অনেক সহজ মনে হয়েছে আমার কাছে। তিনি কথা বলতেন, খোঁজখবর রাখতেন, আমরা কেমন আছি, বউমা কেমন আছে , তার দাদুভাইটা কেমন আছে। মা স্টো্কের পর থেকে শয্যাশায়ী।

বাবাই তাকে দেখাশোনা করতেন। ঢাকায় এনে রাখতে চাইলে বলতেন, না রে তোদের ওখানে ৩/৪দিন থাকলেই দম বন্ধ হয়ে আসে। খোলা বাতাস, আলো ছাড়া তোরা থাকিস কেমন করে? সেই বাবা হাসপাতালে যখন। তিনি তখন অনেক গল্প করছেন, শৈশব বলছেন, কি করা উচিত, না-উচিত তা বলছেন। আমি সারাক্ষণ তার পাশাপাশি।

কাছ থেকে দেখছি একটা মানুষ কিভাবে ধীরে ধীরে মৃতু্র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একদিন তাকে প্রশ্ন করলাম, আব্বা আপনি কি মৃতুকে ভয় পাচ্ছেন? তিনি আমার দিকে শান্ত চোখে তাকালেন, তারপর বললেন, না। মৃতুকে ভয় পাওয়ার কি আছে? এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না। আর আমি তো জীবনে জ্ঞানত কোনে াঅন্যায় করি নি। এই বলে তিনি আমার মাথায় হাত রাখেছিলেন।

আমি তখন কেবিন থেকে পালিয়ে এসেছিলাম। করিডোরে দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে ভেবেছিলাম, তার মত বড় হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। আর একটা কথা আজ খুব মনে পড়ছে, তিনি শৈশব থেকে সবসময় বলতেন, কারো প্রতি অন্যায় করবে না। যা তুমি সত্য মানো, তাকে ধারণ করবে। আর যাই হও বড় হও।

ছোটরা এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারে না। চোর হলে বড় চোর, খেলোয়াড় হলে বড় খেলোয়াড়, লেখাপড়া করলে ১ নম্বর। আমি কিছুই হতে পারি নি, বাবা তা তো তুমি জানোই। তবে তোমার মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি। আমাকে ক্ষমা করো।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।