যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
আরশাম পারসি, কানাডার টরোন্টো-ভিত্তিক ইরানিয়ান কুইয়ার অর্গানাইজেশনের (সমকামীদের প্রতিষ্ঠান) প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। সাইবার স্পেসে ইরানী সমকামী, তাদের চ্যালেঞ্জ ও প্রকল্পের খবরাখবর নিয়ে তিনি আমাদের সাথে কথা বলেছেন।
ইরানী ব্লগোস্ফিয়ারে সমকামী ব্লগের উপস্থিতিকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেন? সেখানে কি অনেক ব্লগার তাদের সমকামীতা নিয়ে কথা বলে?
হ্যা, আমাদের প্রচুর ইরানী এলজিবিটিআইকিউ (লেসবিয়ান/গে/বাইসেস্কুয়াল/ট্রান্সজেন্ডার/ইন্টারসেক্সড/কোয়েশ্চেনিং) ব্লগার রয়েছে। বিভিন্ন নিকে আবার কখনও ছদ্মনামে লিখে থাকে। এটা তাদের নিরাপত্তার জন্য সহায়ক।
তবে সরকার আইপি এড্রেস তল্লাশী করে তাদের খুঁজে বের করে। এত কিছুর পরেও তারা বহাল তবিয়তে আছে, এবং বেশ সক্রিয়ও।
ইরানী সমকামীতা বিষয়ে কাজ করার জন্য আপনি ইন্টারনেট, ব্লগ ও ভিডিও ফিল্ম কিভাবে ব্যবহার করেন?
ইন্টারনেট হচ্ছে আমাদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। এটা ছাড়া সংস্থার অনেক কাজই করা যেত না। ইরানে আমাদের কোন প্রতিনিধি নেই যেহেতু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের শঙ্কিত থাকতে হয়।
নতুন সমস্যা তৈরী করতে চাই না। তাদের ওয়েবলগ পর্যবেক্ষণ করি কেবল - ওগুলোই অন্যতম সম্পদ। ইন্টারনেট আমাদের জন্য উপহার স্বরূপ।
আপনার ওয়েবসাইট/ব্লগ সন্বন্ধে ইরানীদের প্রতিক্রিয়া কি? সমকামী বা সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করে এবং যারা সমকামীতাকে পাপ অথবা অনৈতিক কাজ হিসেবে দেখে তাদের মধ্যে কি কোন সংলাপ হয় সেখানে?
বিভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া দেখি। ঘৃণাসূচক আবার কখনও সমর্থনসূচক মেসেজও পেয়ে থাকি।
ইরানিয়ান কুইয়ার ব্লগে, অন্যান্য মানুষের সাথে সংলাপ চলে, এবং কখনও ব্লগাররা এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তবে সাধারণভাবে বিগত কয়েক বছরে মানুষজনের দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে।
এমন কি কোন অনলাইন ফোরাম আছে যেখানে ইরানী সমকামীরা তাদের চিন্তাভাবনা তুলে ধরতে বা মন্তব্য উপস্থাপন করতে পারে?
চেরাক নামে আমাদের একটা ম্যাগাজিন আছে। এছাড়া ইরানী সমকামীদের নিয়ে আমাদের একটা ফোরামও আছে। মাত্র কয়েক মাস আগে শুরু হল।
তবে ওয়েবলগ হচ্ছে সবচেয়ে বেশী দৃশ্যমান।
ইরানে সমকামীদের অবস্থা আপনি কেমন বিবেচনা করেন? সাইবারস্পেসকে কি তারা নিজেদের প্রকাশ করার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে?
আমি আগেই বলেছি, অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কয়েক বছর আগে কেউ আমাদের অধিকার নিয়ে কথা বলত না, কিন্তু এখন আপনি হাজারো পেইজ দেখবেন অনলাইনে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী বোঝা যায়, স্বাধীনভাবে তারা শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পরে না, কিন্তু তারা আছে এবং সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে। এখন মনে হয়, ইরানী বিচিত্র ইস্যুগুলো মানবাধিকারের বিষয় হয়ে গেছে।
ইরানী গে ও লেসবিয়ান ব্লগের মধ্যে কি ভিন্নতর জটিলতা রয়েছে?
হ্যা, রয়েছে। ভিন্নতর। লেসবিয়ানরা আরো অদৃশ্য, যেখানে ইরানে সাধারণ নারী অধিকারেরই অভাব রয়েছে। খুব যে বেশী লেসবিয়ান ব্লগ রয়েছে, তাও নহে, যেগুলো সম্বন্ধে আমি জানি তারা কেবল তাদের অবস্থান জানান দিতে সক্রিয় থাকে। লেসবিয়ানদের জন্য আমাদের একটা অনলাইন ম্যাগাজিন আছে, হামজেনস-ই-ম্যান।
ইরানী লেসবিয়ানদের জন্য এটা প্রথম কোন ম্যাগাজিন।
এমন কি কোন প্রকল্প, মন্তব্য বা ধারণা আছে যা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারে?
হ্যা আছে, তারা বলতে চায়, আমরা আছি, তবে বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ অবস্থায়। একে অপরকে সাহায্য করবো। এটা এখন আমাদের মুক্তির খাজনা।
হামিদ তেহরানী গ্লোবালভয়েসে এই পোস্টটি করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।