আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাঁর জন্য ভালবাসা যিনি সারাজাহানের জন্য আল্লাহর রহমত - শেষ পর্ব

কল্যাণের কথা বলি, কল্যাণের পথে চলি।

প্রথম পর্বঃ কে তিনি দ্বীতিয় পর্বঃ কেন তাঁকে ভালবাসতে হবে? ৩য় পর্বঃ কি দাবী তাঁর ভালবাসার =============================== মানবতার বন্ধু তিনি - কল্যাণ ও সমগ্র সৌন্দর্যের বিমূর্ত প্রতীক। রহমত, ভালবাসা, করুণা, দয়া ও মানুষের প্রতি শুভকামনার পরিপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। তিনি আদমের সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম - আল্লাহর বাণীবাহকদের সর্দার। হেরা গুহার অন্ধকারে তাঁর কাছে কুরআনের নূর পাঠানো হয়েছে মানবতাকে মূর্খতার আঁধার থেকে বের করে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে।

=============================== কি লাভ তাঁকে ভালবেসে? ঈমানের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করা মুমিন মাত্রেরই আকাংখা। আর এর প্রকৃত মধূময় স্বাদ আস্বাদন করেছে তারা যারা রসূলুল্লাহকে (সঃ) ভালবেসেছে আন্তরিকতা ও সন্তুষ্টির সাথে। ইমাম মুসলিম ও হাদীসের অন্যান্য সংকলকরা আব্বাস (রাঃ) ইবন আব্দুল মুত্তালিব থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি রসূলুল্লাহকে বলতে শুনেছেন, “সে-ই ঈমানের সুমিষ্ট স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছে যে আল্লাহকে রব্ব, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদকে (সঃ) রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছে। ” ইমাম বুখারী ও মুসলিমের আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা এক হাদীসের উদ্ধৃতি আমরা আগে পেশ করেছি যেখানে রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম) বলেছেন, “তিনটি গুন এমন যার মাঝে ওগুলো বর্তমান সেই মূলতঃ ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করেছে: (১) ঐ ব্যক্তি যার কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল জগতের সবকিছুর চেয়ে প্রিয়; (২) ঐ ব্যক্তি যে শুধু আল্লাহর ওআস্তে কাউকে ভালবাসে; এবং (৩) ঐ ব্যক্তি যে ঈমান থেকে কুফরীতে ফিরে যাওয়াকে তেমন ঘৃণা করে যেমন ঘৃণা করে সে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। ” যে যাকে ভালবাসে সে তার সাথে থাকে, তার সাথে থাকার আকাঙ্খী থাকে; এবং তার সাথে থাকতে পারলে নিজকে ধন্য মনে করে।

রসূলুল্লাহকে – সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম – ভালবাসলে তাঁর সাথেই থাকার ব্যবস্থা করবেন আল্লাহ্। ইমাম বুখারী ও মুসলিম আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে – আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হোন তার উপর – বর্ণনা করেছেন, “এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! এক ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে কিন্তু তাদের সাথে মিলিত হতে পারছেনা। এ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন? রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বললেনঃ যে ব্যক্তি যাকে ভালবাসে সে (পরকালে) তার সাথেই থাকবে। ” তাঁর প্রতি ভালবাসা সেদিনও আমাদের জন্য পাথেয় হবে যেদিন সৎকাজের সংগ্রহ ছাড়া আর কোন পাথেয় কারো থাকবেনা। ইমাম বুখারী ও মুসলিম আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেন, “এক বেদুঈন (মরুচারী গ্রাম্য আরব) রসূলাল্লাহকে (সঃ) বললোঃ কিয়ামত কখন হবে? তিনি বললেনঃ এজন্য তুমি কি পাথেয় সংগ্রহ করেছো? সে বললোঃ আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি ভালবাসা।

” অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ “সে বললো, (নফল) রোজা, নামাজ, সদকা, ইত্যাদি খূব বেশী সংগ্রহ করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসি। ” শেষকথা আল্লাহর রসূল মুহাম্মদকে – আল্লাহর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর উপর – ভালবাসতে হবে। কারণ তাঁর মাধ্যমে মানব সভ্যতার প্রতি মহাঅনুগ্রহ দেখিয়েছেন মহামহিম দয়ালু আল্লাহ। তাঁর দেখানো পথেই শুধু আমাদের জন্য দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণ নিহিত রেখেছেন আমাদের বরকতময় প্রতিপালক। তাই আসুন! তাঁর প্রতি ভালবাসাকে আর সব ভালবাসার উপর প্রধান্য দেই; তাঁর শেখানো পন্থায় জীবন যাপন করি; তাঁর আনীত বিধান এবং শিক্ষাকে বুলন্দ করতে প্রাণান্তকর চেষ্টায় নিবেদিত হই।

রসূলের (সঃ) শিক্ষার বিপরীত অথবা তাঁর শেখানো পন্থায় অনুপস্থিত বন্দেগীর এমন সব পথ পরিহার করি। এ প্রচেষ্টাতেই শুধু সাফল্য। আর এ কাজের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি হলো ধ্বংস ও আযাব। মহান আল্লাহ্ সাবধান করেছেন এ ব্যাপারে। তিনি বলেছেন (তাঁর কালামের তরজমা), “(হে নবী!) আপনি বলে দিন, যদি তোমাদের পিতারা, সন্তানেরা, ভাইয়েরা, স্ত্রীরা, আত্মীয়-স্বজনরা, সেই সম্পদ যা তোমরা উপার্জন করেছো, সেই ব্যবসা যার ক্ষতির তোমরা আশংকা করো, এবং তোমাদের সেই বসত-বাড়ি যা তোমরা পসন্দ করো তোমাদের কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয় তাহলে তোমরা অপেক্ষা করো আল্লাহ তার নির্দেশ (আযাব) নিয়ে আসা পর্যন্ত।

আর আল্লাহ (এ ধরনের) ফাসিকদের সঠিক পথের দিশা দান করেননা। ” (আত-তওবা; ৯:২৪)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.