আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাতকাহন : মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বাংলাদেশ-পর্ব ৫



‘নিজেদের প্রস্তুত মালের জন্য অবিরত বর্ধমান এক বাজারের তাগিদ বুর্জোয়া শ্রেণীকে সারা পৃথিবীময় দৌড় করিয়ে বেড়ায়্ সর্বত্র তাদের ঢুকতে হয়, সর্বত্র গেড়ে বসতে হয়, যোগসূত্র স্থাপন করতে হয় সর্বত্র। ০৯ মুক্তবাজারের বা নয়া উদারতাবাদী এ ধারণাটি এসেছে মূলত রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত বাণিজ্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে। দরিদ্রের স্বার্থ দেখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও প্রায় দেখা যায় তা অপ্রতুল ও সংস্কারমুখী। ফলে যা হবার তাই হয়েছে রাষ্ট্রের পাশ কাটিয়ে বাজারই তখন তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এ এপ্রোচটি একটি ধণাত্মক প্রক্রিয়া।

মোটাদাগে বাজার গরিবি কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে, তা সত্যি। কিন্তু এ সত্যকে বাস্তবতা দেয়া তখনই সম্ভব হবে যখন রাষ্ট্র এ প্রক্রিয়ার সাথে ফাংশান করবে। মুক্তবাজারের মানে হবে সমান জন্য সব দুয়ার খোলা থাকা। ‘উন্নত’ বলে কেউ কারো অন্দরে পৌছতে পারবে আর কেউ ‘স্বপ্লন্নত’ বলে কারো দুয়ারেও দাঁড়াতে পারবে না তা নিশ্চয় কোন সাম্যতা এমনকি সভ্যতাও নয়। তাই সকল কিছুতে রাষ্ট্রকে কৌশলগত দায়িত্ব নিতে হবে, যা হবে গরিবের অনুকূল ও দুর্বলের জন্য সহায়ক।

আমরা প্রস্তাব করি, সম্পদের ওপর স্থানয়ি জনগণের একটি নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত কারণ এতে মানুষ স্থানীয় দারিদ্র্য চিহ্নিত করতে এবং তা দূর করার জন্য সঠিক কাজ করতে পারবে। ০০ সত্যিকার অর্থে বাঙালীর ইতিহাস ব্যবসার ইতিহাস। আমাদের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই একটি ব্যাপারি বাড়ি নতুবা একটি সওদাগর বাড়ি পাওয়া যায়। এটি এ কথাই স্পষ্ট করে যে, ব্যবসাকে ঘিরেই ছিলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনাচার। আমাদের রূপকথাগুলোর উপজীব্যও কিন্তু সেই বাণিজ্য।

দুনিয়ার প্রায় সকল দেশের রূপকথারগুলোর কেন্দ্রিয় চরিত্র হয় কোনো রাজকুমার নচেত কোনো রাজকন্যা কিন্তু আমাদের রূপকথাগুলো তৈরি হয়েছে সওদাগরকে ঘিরে। সওদা করতে আরেক দেশে গিয়ে সওদাগর রাজকন্যা দেখা পেয়েছে, নয়তো সওদাগর নিজে যুদ্ধে নেমেছিলেন রাজকন্যার জন্য। এটিই আসলে আমাদের ইতিহাস। মূলত: বাণিজ্য করতেই প্রথম এ উপমহাদেশে এসেছিলো বৃটিশ বেনিয়ারা। তারপর হয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

তারপরের ইতিহাস পরাধীনতার ইতিহাস, হেরে যাবার ইতিহাস। এভাবে ধীওে ধীওে আমাদেও সওদাগর সমাজ দৃশ্যপট থেকে সওে যেতে থাকে। উইলিয়াম ডিগবির মতে, পলাশী (১৭৫৭) থেকে ওয়াটার লু (১৮১৫) যুদ্ধ নাগাদ এ ৫৮ বছরের মধ্যে প্রায় পাঁচশ কোটে পাউন্ড মূল্যেও পুঁজি বিলাতে পাচার হয়। অবশ্যই এ পুঁজির সিংহবাগই আরোহিত হয় বাংলা থেকে। কারণ তখনও বৃটিশ শাসন সারা ভারতে বিস্তার লাভ করেনি এবং বাঙালাই ছিলো তাদের প্রধান আস্তানা।

এক সময় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে পণ্য উৎপাদন করে তা দুনিয়াব্যাপি বাজারজাত করতো। কিন্তু এখন তা নেই। এখন পণ্যেও মান ও খরচের হিসাবে প্রতিযোগিতারভিত্তিতে দুনিয়ার যে কোন স্থানে পণ্য উৎপাদনই হচ্ছে মুক্ত বাণিজ্যের মোক্ষম মডেল। ৫ মুক্ত বাণিজ্যেও পক্ষে নানা জানা অজানা প্রতিশ্রƒতি দিলেও লিমিটেড কোম্পানি মার্কা দেশগুলোর সরকারগুলো নিজ দেশের উৎপাদকদের পক্ষে আšর্তজাতিক বাণিজ্যে নানা বিধি-মানা আরোপ করে। এগুলো মুক্ত বাণিজ্যের বাধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এখানে কিছু বিষয় দেখা যেতে পারে। যেমন :১. শুল্ক বাঁধা ২. অশুল্ক বাঁধা ৩. কিভাবে শুল্ক ও অশুল্ক বাঁধা আরোপ করা হয় ৪. ভর্তূকি। ৬

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।