আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাতকাহন

১)এই দেশে মানে অস্ট্রেলিয়াতে সমুদ্রের ধারে বা বিচে যাওয়া একটা ব্যপক কালচারাল ঝামেলার ব্যাপার। গরমের সময়ে রিতিমত মহা ব্যাপক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় কারন ওদের জন্য যেইটা স্বাভিক আমাদের জন্য সেইটা অস্বস্তিকর ত এই জন্য আমার মনে হয় প্রায় মুসলিম ফ্যামিলিই একটু নিরিবিলি বিচ খোজেন। এইটা মনে হওয়ার অন্যতম কারন হইলো কম লোকজন আছে এমন বিচে সাধারনত বোরখাওয়ালী লোকজন বেশী দেখা যায়। ত একবার আমরা সানশাইন কোস্টে গাড়ী দিয়ে হাটতে হাটতে একটা নিরিবিলি বিচের সন্ধান পাইলাম । আমি সহ আমার ছেলেরা মহা আনন্দে পানিতে দাপাদাপি করলাম তারপরে বিচ থেকে উপরে এসে গোসল সেরে খাওয়া সেরে চা খাচ্ছি এমন সময় পাশের টেবিলের আরেক পরিবারের ভদ্রলোকের সাথে কথা শুরু হলো তাদের বাসা পাশেই , বাচ্চারা সেই পার্কে খেলতে পছন্দ করে বলে সেখানে গিয়েছেন আরো অনেক কথার মাঝে একসময় বললাম যে তোমাদের বাড়ী ত সমুদ্রের কাছেই তাই সমুদ্র তোমাদের টানে না আর আমরা দূরে থাকি বলেই সমুদ্র দেখতে চলে আসি তোমাদের এলাকায় এই কথা শুনে ভদ্রলোক বললেন আরে নাহ তা কেনো হবে আমিও ত সমদ্রের টানেই ব্রিসবেন ছেড়ে সানশাইন কোস্টে বাড়ী নিয়েছি এটা আসলে ডগ বিচ এখান থেকে চার পাচ কিলোমিটার দূরে আরেকটা বিচ আছে (যা রিতিমত ভরপুর দেখেই আমরা সেখানে গিয়েছি) আমরা সেখানে যাই ,আর আমাদের ডগ নিয়ে আসলে এখানে নামি।

ভদ্রলোক কথা শেষ করতে করতে আরেকটা মুসলিম ফ্যামিলির গাড়ী এসে থামলো পার্কিং এ সেটা দেখে আমার দিকে তাকিয়ে মিস্টি একটা হাসি দিয়ে বললেন অনেক টুরিস্ট আসে অবশ্য এইদিকে। ২)কুইন্সল্যান্ডে এসে প্রথম দিকে হালাল গোশত কিনতে তিন'শ কিলোমিটার পাড়ী দিয়ে ব্রিসবেনে আসতাম। একটা ফ্যামিলি ডে ট্রীপ হয়ে যেতো সেই সময়। তারপরে খেয়াল হলো আশে পাশে এত এত গরু ছাগলের ফার্ম সেখানে যেয়ে দেশী স্টাইলে জবাই করে আনলেই ত হয়ে যায় এই সেই খোজ খবর নিতে নিতে আবিস্কার করলাম এবেটিওর বা কসাইখানা সেইখানে যেয়ে তাদের ভাষায় একটু মুসলিম ব্লেসিং করে দিলেই গোশত হালাল হয়ে যায়। ফার্মওয়ালারাও ক্যাশে ঝামেলা ছাড়া ল্যাম্ব গোট বেচতে পেরে মহা খুশি।

একবার এক গরুর ফার্মে গেছি আমরা কয়েক জন , উদ্দেশ্য গরু জবাই। কয়েকটা গরু দেখে মালিক শুধু বলে একটা পছন্দ করতে তার চাপাচাপিতে আমরা পছন্দ করলাম এইবার বলাল দাম কতো ব্যাটা গরুর মালিক গরুর দিকে একবারও না তাকিয়ে উলটা আমার/আমাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে গরুর দাম হাকলো ৬৫০ ডলার। মনে হইলো যেনো আমরাই গরু আর সে মানুষ। ৩)আমরা গরীব বাংলাদেশের মানুষ বইলা আমাদের নাম নিয়ে ব্যাপক রকমের টানা হেচড়া হয় এই দেশে। তারা অবশ্য আদর করে আমাদের মোহাম্মদ কে মো ডাকে মতিন কে ম্যাট বা ম্যাডি ডাকে।

অতি সম্প্রতি আমাদের এক বাঘা বাংগালী ভাইকে পাইলাম যিনি এই ধারার উল্টা টা শুরু করলেন। কাজের সূত্রে আমরা এক যায়গায় গিয়েছি সেইখানে রাসেল নামের এক অস্ট্রেলিয়ান আছে তারে উনি ডাকেন রাসুল বলে (সাথে ফতোয়া যদি নামের বদৌলতে হেদায়েত পাইয়া যায়) সেই ধারাবাহিকতায় দেখলাম জন রে বানায় দিছেন জনি সবচাইতে মজা লাগছে অফিসের রেসেপশনিস্ট জর্জিনারে বানায় দিছেন জরিনা। তারাও দেখলাম বেশ রেসপন্স করে। তবে ভাইয়ের নিজের নামখানাও ইল্লা মাশাল্লাহ প্রায়শই দেখা যায় নামের ঘর শেষ হইয়া যায় কিন্তু ভাইয়ের নাম শেষ হয় না(সংগত কারনে উহ্য রাখলাম)। একটা জিনিস আমি কনক্লুশনে আসলাম যে চিটাগাং এর লোকজন আসলেই বস।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।