আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতালে লণ্ডভণ্ড পরীক্ষার সূচি

এরই মধ্যে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। ধারাবাহিকভাবেই পিছিয়ে যাচ্ছে জেএসসি-জেডিসি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাও। নির্ধারিত সময়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, যেমন করেই হোক ডিসেম্বরের মধ্যেই ‘সব’ পরীক্ষা শেষ করা হবে।


১০ থেকে ১৪ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও হরতালের কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষায় অংশ নেবে এক লাখ ৬৮ হাজার ২২৪ জন শিক্ষার্থী।
১৬ থেকে ২০ নভেম্বরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার স্থগিত করা হয়। স্থগিত হয়ে গেছে ৬ থেকে ৮ নভেম্বরের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হলেও ‘গ’, ‘ক’ ও ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে যথাক্রমে ১৫, ২২ ও ২৩ নভেম্বর।


১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এক লাখ ৬২ হাজার ৩৪৮ জন অংশ নেবেন। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হবে ১৭ থেকে ২৯ ডিসেম্বর।
এছাড়া ৩০ নভেম্বর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত রয়েছে।
অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
হরতালের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী।


বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে মত থাকলেও শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
হরতালের কারণে ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় অনুষ্ঠেয় কমনওয়েলথ অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠানটিও স্থগিত করতে হচ্ছে বলে জানান অধ্যাপক আজাদ।
এদিকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে ২১ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। এছাড়া বিভিন্ন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে এবং একাদশ শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা হবে।
আর হরতালেল কারণে চলতি বছরের জেএসসি-জেডিসির ৪, ৬, ১০, ১১, ও ১২ নভেম্বরের পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে।

১৩ নভেম্বর হরতাল থাকায় ওই দিনের পরীক্ষাও পিছিয়ে দেয়া হবে।
এছাড়া হরতালের কারণে ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেলের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
দেশের মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীনে পরিচালিত হয়।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যেভাবেই হোক স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষাগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে।
বিরোধী দলের লাগাতার হরতালের কর্মসূচিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসাবে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের এসব কর্মসূচিতে আমরা খুবই হতাশ।

শিক্ষার্থীদের কথা তারা বিবেচনাই করল না। ”
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, ৭ থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচনের কারণে তা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে প্রাথমিক শিক্ষা সমপানী পরীক্ষা। বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনের বার্ষিক পরীক্ষাও ডিসেম্বরে হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার মধ্যে হরতাল না দিতে বিরোধী দলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।


জেএসসি-জেডিসির পরীক্ষা শুরুতেই হরতালে হোচট খাওয়ায় চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন নূর ইসলাম।
ছেলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমানপনী পরীক্ষায় অংশ নেবে জানিয়ে এই অভিভাবক বলেন, “আমরা কোনো ধরনের রাজনীতির বলি হলে চাই না। পরীক্ষার সময় যেন আর হরতাল না হয় আমরা তাই চাই। ”
নভেম্বর-ডিসেম্বর জুড়েই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমপানী পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত আছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও নতুন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে জানুয়ারিতে পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।


সংবিধান অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এরই মধ্যে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট।
শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রতিহতে আগামীতে হরতাল-অবরোধসহ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণারও হুমকি দিয়েছে বিরোধী দলগুলো। এরমধ্যেই প্রধান দুই দলের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনা অনেকটাই ‘ক্ষীণ’ হয়ে গেছে।
হরতালের কারণে গত এসএসসির ৩৭টি এবং এইচএসসির ৩২টি বিষয়ের পরীক্ষাসূচি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।


নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ২৭, ২৮, ২৯ অক্টোবর হরতালের পর ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর হরতাল করে ১৮ দলীয় জোট। একই দাবিতে ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নভেম্বরেরও হরতাল দিয়েছে তারা।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।