রুপ নারানের কুলে জেগে উঠিলাম, জানিলাম এ জগত স্বপ্ন নয়। শ্যামলি রিং রোডের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গাড়ির জন্য দাড়িয়ে আছি। গন্তব্য গুহা (মেস)।
ঢাকা শহরে গাড়ির অভাব নেই, তবে যে গাড়ি প্রয়োজন কেবল সেইটা নাই। আকাশে মেঘ করেছে।
দু এক ফোটা পড়লও বুঝি। সন্ধ্যা গড়িয়ে এখন রাত গভীর হবার অপেক্ষায়। বাদলা-বাতাস যেন রাতটাকে একা করে দিয়েছে। ভারী, গম্ভীর রাত। পথচারী মানুষগুলো হাটছেনা যেন দৌড়াচ্ছে।
কোথায় যেন পড়েছিলাম , যে শহরে লোক সংখ্যা বাড়তে থাকে সেই শহরে লোকদের হাটার গতিও বাড়তে থাকে।
মানুষ গুলো এখন বাসায় যেয়ে কি করবে? খাবে, টিভি দেখবে, জীবনটা শেষ বলতে বলতে মরে যাবে, আবার সকালে বেচে উঠবে; এরকম আরেকটা মৃত্যুর জন্য।
এই বারই শেষ, আর একটা গাড়ি মিস করলেই হাটা ধরব বাসার দিকে।
শালা আর ভাল্লাগেনা। রিকসা ভাড়া চায় ২০ টাকা।
মগের মুল্লুক নাকি।
আর তাছাড়া হাটা স্বাস্থের জন্যও ভালো। নিজেই নিজের কাছে যুক্তি প্রদর্শন করি হাটার পক্ষে।
আবারও দু-এক ফোটা পড়ল, এবার বুঝি নামবেই।
অন্য দিকে তাকিয়ে ছিলাম এমন সময়, একটা হাত পড়ল আমার হাতে।
হাত নয় যেন একটা আহত পাখির ডানা , তির তির করে কাপছে। ঠান্ডা, নিষ্প্রাণ, দুখী একটা হাত।
” বাবা। আমারে রাস্তাটা একটু পার কইরা দিবেন ? ” বৃদ্ধা মহিলাটির কথা শুনে আমি কেমন যেন হয়ে গেলাম। ভাবলাম নিয়তির কাছে আমরা কত অসহায়।
খুব যত্ন করে , মমতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমি তাকে রাস্তা পার করে দিলাম।
মনে হল এটাই জীবনের মানে।
বৃষ্টি। অন্তরীক্ষের গহীন হতে মেঘগুলো এই মাটির নষ্ট পৃথিবীতে পড়ছে। যেন আমাদেরকে পবিত্র করার জন্য।
আমি হাটছিলাম আর আকাশের মালিকের কাছে বলছিলাম; জীবনের সমস্ত পথে আমাকে এভাবে হাত ধরে পার করে দিয়ো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।