আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘গরিবের কাঠ’

সোনালি রঙের বলে নাম তার ‘সোনালী’। এর ওপর আবার সবুজ রেখা তাকে করে তুলেছে আরও বর্ণময়। দুর্লভ ও বিপন্ন প্রজাতির এই বাঁশ এখন খুব একটা দেখা যায় না। মাত্র ছয়টি চারা সংগ্রহ করে রোপণ করা হয়েছে। মাস তিনেক পর ওই ছয়টি চারা বেড়ে একেকটি বাঁশঝাড়ে রূপ নেবে।

উদ্যানে তখন চিকচিক করবে সোনালি রং।
শুধু ‘সোনালী’ নয়, দুর্লভ ও বিপন্ন বাহারি নামের দেশি-বিদেশি ২৪ প্রজাতির ৭০০ বাঁশের চারা রোপণ করে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করছে ‘জাতীয় বাঁশ উদ্যান’। সিলেট শহরতলির বিমানবন্দর এলাকায় ফরেস্ট স্কুল অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এফএসটিআই) চত্বরে টিলা শ্রেণীর তিন একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে এই উদ্যান। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার জাতীয় বাঁশ উদ্যান উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে কাল বৃহস্পতিবার।

‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকো-টুরিজম উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে উদ্যানটি গড়ে তোলা হচ্ছে।
পাহাড়-টিলা-বনে সমৃদ্ধ সিলেট অঞ্চলে বাঁশের ব্যাপক উৎপাদন হয়। তবে সুষ্ঠু তদারকির অভাবে নানা নাম আর জাতের বাঁশ বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে। তাই বিলুপ্তি ঠেকাতে ও বাঁশের চাষ জনপ্রিয় করতে সিলেট বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে এই জাতীয় বাঁশের উদ্যান গড়ে তোলা হচ্ছে। সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবুল বাশার মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চল হওয়ায় এখানে বাঁশ বেশি জন্মে।

গ্রাম এলাকায় ‘গরিবের কাঠ’ হিসেবে বাঁশ সমাদৃত হলেও নানা কারণে ক্রমে এটি বিলুপ্ত হতে চলেছে। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বাঁশের বিলুপ্তি ঠেকাতে এই উদ্যান বড় ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যান বন ও পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী-গবেষকদের গবেষণায় সহায়তা করবে। সিলেট বিমানবন্দর সড়কের পাশে সরকারি পর্যটন মোটেলের বিপরীতে ৩০ একর জায়গায় বন বিভাগের ফরেস্ট স্কুল অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত দুটি টিলা ও সমতল ভূমির প্রায় তিন একর জায়গা নিয়ে উদ্যান গড়ে তোলা হচ্ছে।

বন বিভাগের একজন রেঞ্জারের নেতৃত্বে বনকর্মীদের একটি দল চারা রোপণ ও পরিচর্যার কাজ করছেন। উদ্যানের প্রথম অংশে রয়েছে সোনালিসহ দুর্লভ সব জাতের বাঁশ। কলসি, বোতল, কালী, রঙ্গন, কঞ্চি, মৃতিঙ্গা, টেংগা, বরুয়া, বুদুম বেতুয়াসহ উদ্যানে রয়েছে নানা জাতের বাঁশ। কলসি বাঁশের আকৃতি অনেকটা কলসের উপরি ভাগের মতো। কঞ্চি বাঁশঝাড়ে দেখা যাবে শুধু কঞ্চির সমাহার।

রঙ্গন বাঁশঝাড়ে দেখা যাবে ফুলের বৈচিত্র্য। চট্টগ্রামের কাপ্তাই থেকে সংগ্রহ করা হয়ে ‘বুদুম’ বাঁশ। দুর্লভ বার্মিজ জাতের এই বাঁশের চারটি চারা রোপণ করা হয়েছে। আকারে দেশীয় বাঁশের প্রায় দ্বিগুণ বুদুম তিন মাসে সুবিশাল ঝাড়ে রূপ নেবে। এ ছাড়া ভারত থেকে এনে রোপণ করা হয়েছে ছয় প্রজাতির বাঁশের ‘অফসেট’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।