আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রথম আলোর সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু!

কাপুরুষের শেষ আশ্রয় হল দেশপ্রেম যে কারণে ইউটিউবে রাসূল (সা.) কে কটাক্ষ করে নির্মিত চলচ্চিত্র থাকার পরও রাগ করে গুগলের বিভিন্ন সার্ভিস থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না, প্রায় একই কারণে তথাকথিত উদার নীতির এককালের বামপন্থীদের পত্রিকা প্রথম আলোর বিভিন্ন ভন্ডামী দেখেও প্রায় প্রতিদিনই প্রথম আলোর ইন্টারনেট ভার্সনে চোখ রাখা হয়। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হল, যে সব জাতীয় দৈনিক তাদের অনলাইন বা ইন্টারনেট ভার্সনে প্রতিমুহূর্তে খবর আপডেট করে- তাদের মধ্যে আমার পর্যবেক্ষণে প্রথম আলোই একমাত্র পত্রিকা যাদের বেশিরভাগ সর্বশেষ সংবাদের শিরোনাম বা বিষয়বস্তুর সাথে পরেরদিন প্রিন্ট ভার্সনের বহুলাংশে মিল থাকে না। দেখা যায়, ইন্টারনেট ভার্সনে খবরটি ভালভাবে যাচাই না করেই প্রকাশ করেছে- পরেরদিন আবার প্রিন্ট কপিতে সেটা সংশোধন করেছে। বিষয়টা যদি কদাচিৎ হত তাহলে সেটা চোখে পড়ত না- কিন্তু যখন একই ঘটনা বারবার ঘটে তখন সেটা অবশ্যই আপত্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। যারা নিয়মিত ইন্টারনেটে প্রথম আলো পড়েন তাঁরা আমার সাথে একমত হবেন।

এর মধ্যে কয়েকটা খবর তো শুধু হাস্যকরই নয়, বিরক্তিকরও। কয়েকটা ঘটনা উল্লেখ করার মত- * আইএসআই এর টাকা নিয়ে বিএনপি নির্বাচন করেছে- এমন একটা ভিত্তিহীন খবর প্রথম আলোই প্রথম ইন্টারনেটে প্রকাশ করে- পরে সেই খবর ভিত্তিহীন প্রমাণিত হওয়ার পর এখন চুপ। * কিছুদিন আগে মীর কাশেম আলী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য বাংলাদেশী টাকায় প্রায় দুই লক্ষ আশি হাজার কোটি টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে এমন খবর প্রকাশ করার পর অনলাইন পাঠকরা যখন টাকার অংক দেখে প্রতিবাদ শুরু করে- তখন প্রথম আলো সেই অংকটা কমিয়ে ২০০ কোটি টাকা করে। * পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানীর সাথে প্রেসিডেন্ট পুত্রের সম্পর্ক নিয়ে কয়েকদিন হইচই করার পর এখন চুপ। অর্থাৎ এই খবরটারও ভিত্তি যাচাই করা হয় নাই।

* সম্প্রতি রামুতে দুঃখজনক ঘটনায় এক বৌদ্ধ বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে প্রথম আলো। পরে জানা যায়, তিনি জীবিত আছেন। এবার হাতেনাতে একটা উদাহরণ দেই। গত ১০ অক্টোবর রামুর ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে নিচের খবরটি প্রকাশ করে- Click This Link আবার পরেরদিন একই ঘটনা নিয়ে খবরটি হল এরকম- Click This Link ১০ তারিখ প্রথম আলো রিপোর্ট করল, শিবির ক্যাডার মুক্তাদির উত্তম বড়ুয়াকে ফেসবুকে পবিত্র কোরআনের অবমাননাকর ছবিতে ট্যাগ করেছে। সেক্ষেত্রে উত্তম বড়ুয়াকে নির্দোষ ধরে নেয়া যায়- কারণ কোন ছবিতে কাউকে অন্য কেউ বিনা অনুমতিতে ট্যাগ করলে আসলে করার কিছু থাকে না।

কিন্তু আবার ১১ তারিখের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, উত্তম বড়ুয়া নিজেই ঐ ছবিতে 'লাইক' দিয়েছিল- আর শিবির ক্যাডার মুক্তাদির সেটা দেখে ছবিটি প্রিন্ট করে লোকজনের মাঝে বিলি করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে উত্তম বড়ুয়া যে ধোয়া তুলসি পাতা নয়- সেটা বোঝা যায়। শুনতেছি, উত্তম বড়ুয়া নাকি পরিবার সমেত লাপাত্তা! যাহোক, প্রথম আলোর মত একটা শীর্ষ দৈনিক যখন খবরের সত্যতা ও বিষয়বস্তুর যৌক্তিকতা যাচাই না করেই খবর প্রকাশ করে এবং সেটা বারবার করে তখন সেটা শুধুমাত্র 'অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি' হিসেবে মেনে নেয়া যায় না। পাঠকরা প্রথম আলোর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ পোষণ করলে এবং ক্ষেত্র বিশেষে প্রথম আলো-কেই উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রথম আলোর অনলাইন সম্পাদকের বোঝা উচিত, সানি লিওন বা পাওলি দামের খবর আর রামুর ঘটনাকে সমান মুখরোচকভাবে পরিবেশন শুধু বোকামি নয়, কঠোরভাবে আপত্তিকর! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।