আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"তালাশ"- দূর্নীতি তদন্তের নামে দূর্নীতি ও ব্যাক্তিগত সার্থ হাসিলের হাতিয়ার।

সবাই বলে আমি নাকি অনেক সুখি মানুষ. . . ইদানিং বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তৈরি হচ্ছে ক্রাইম ইনভেষ্টিকেশন প্রোগরাম। যাদের মূল কাজ আমাদের চার পাশে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া অনিয়ম, দূর্নীতি, অপরাধ আমাদের সামনে তুলে ধরা। মানুষের সাবধানতা ও সচেনতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু আমাদের হয়ত জানাই হয় না এই অপরাধ তদন্তের পেছনে ঘটে যাওয়া অপরাধ গুলোর কথা। সে গুলো থেকে যায় আমাদের চোঁখের আড়ালে।

তেমনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্রাইম ইনভেষ্টিকেশন প্রোগরাম "তালাশ"। এ সপ্তাহের বিষয় ছিল কোচিং বানিজ্য । তালাশ টিম কিছু দিন আগে এ বিষয়ে তদন্ত করতে এসে ছিল আমাদের এলাকায়, মিরপুরের 'আহমদ নগর' । এই এলাকায় (ছাপাখানা মোড়) বেশ কয়েকটি স্কুল ও কোচিং সেন্টার আছে। এর মধ্যে একটি স্কুল অনেক পুরান।

মিরপুরের প্রথম দিককার কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর একটি। নাম 'মর্নিং স্টার এডভান্সড স্কুল'। স্থাপিত ১৯৮৪ সালে। আমারও লেখা-পড়ার শুরু এই স্কুল থেকেই। এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এই স্কুলকে কেণ্দ্র করেই পরিচালিত হয়।

এলাকায় এর বেশ সুনাম রয়েছে। এ ছাড়া কসমিক কিন্ডারগার্টেন, আইকন একাডেমি, সৃজন কোচিং সেণ্টার প্রভৃতি নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে আইকন ও সৃজন কোচিং সেণ্টার হিসেবে যাত্রা শুরু করে এবং এর মধ্যে আইকন এখন কোচিং এর পাশাপাশি স্কুল ও চালাচ্ছে। স্কুল আর কোচিং সেন্টার নিয়ে বেশি কথা না বাড়িয়ে মূল কথায় আসি। তালাশ টিম যখন আমাদের এলাকায় অনুসন্ধানে আসে তখন বিকেল।

কোচিং সেন্টার গুলোতে পুরো দমে ক্লাশ চলছিল। তালাশ টিম যখন মর্নিং স্টার স্কুলে তদন্তে আসে, স্কুলের ক্লাশ অনেক আগেই শেষ। শিক্ষকরাও সবাই বাড়ি চলে গিয়েছে। তখন স্কুলে এলাকারি একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গানের ক্লাশ করছিল। তালাশ টিম তখন স্কুলের এবং স্কুলের বাইরের কিছু ফুটেজ নিয়ে চলে যায়।

কিন্তু যখন পর্বটি টিভিতে প্রচারিত হল, তখন চিত্র সম্পূর্ন উল্টো। তারা দেখালো ঐ স্কুলে চলছে জমজমাট কোচিং ব্যাবসা। কিন্তু ঐ ক্লাশ রুমের ছবি ঐ স্কুলের নয়! তালাশ টিম এক ছাত্রের সাক্ষাতকারও নেয়। আর সাক্ষাতকারের জন্য কোন স্কুল শিক্ষককে খুজে পাওয়া যায়নি! আর (অর্থের অভাবে ধুকে ধুকে চলা) স্কুলটি নাকি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। (আমার বাবা-মা ও অবশ্য আমাকেও ঐ স্কুলে টাকা দিয়েই পড়িয়েছে ) স্কুলের নাম ও স্কুলের বাইরের ছবি বাদে বাকি সবই ছিল ভুয়া...! কিন্তু সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় হল তালাশ টিমের ক্যামেরায় আমাদের এলাকার মূল কোচিং সেন্টার কাম স্কুল গুলোর কথা উঠেই আসল না।

যেখানে তালাশ টিম সবচে বেশি সময় ব্যায় করেছে তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল কসমিক কিন্ডারগার্টেন আর আইকন একাডেমিতে। আইকন একাডেমিতে তালাশ টিমের জন্য চা-নাস্তার ও আয়োজন করা হয়ে ছিল। তখন ঐ একাডেমিতে কোচিং ও চলছিল। কিন্তু সে চিত্র তদন্তে দেখান হল না! কোচিং নিয়ে এই পর্ব দেখার পর আমি ঐ একাডেমির আমার পরিচিত এক শিক্ষকের কাছ থেকে খোজ নিয়ে জানতে পারি তালাশ টিম ঐ আইকন একাডেমির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তারপর আরেকটু খোজ করার পর দেখলাম আইকন একা না, এই এলাকার আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের থেকেই তারা টাকা নিয়েছে।

তাই ঐ প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতিবেদনে আসেনি। আমাদের যা দেখান হয়, আমরা তাই দেখি। আনেক সময় দেখা হয় না আলোর পিছনের অন্ধকার। তালাশ টিমের ভাষায়ই বলতে হয়, আজকে আমার চোখের সামনে ঘটে গেল আর একটি অনিয়ম। কাল হয়ত আপনার সামনে ঘটবে।

তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকুন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.