মতিঝিল থেকে হেফাজতকর্মীদের তুলে দেয়ার পর সোমবার দুপুরে সংগঠনটির আমির আহমদ শফীকে আটকের খবর দেয় কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম।
হাটহাজারী দারুল উলুম ময়নুল আলম মাদ্রাসার মহাপরিচালক শফীকে ‘আটকের’ এই খবর এলাকায় গেলে মাদ্রাসার ছাত্র ও হেফাজতকর্মীরা বিক্ষোভ ও ভাংচুর শুরু করে।
এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় বলে স্থানীয়রা জানায়। এতে তিনজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন হাটহাজারী থানার ওসি লিয়াকত আলী।
বিকাল ৪টায় হাটহাজারীতে যখন সংঘর্ষ চলছিলো, তখন ঢাকা থেকে বিমানে করে চট্টগ্রাম রওনা হন হেফাজত আমির শফী।
পুলিশ পাহারায় তাকে বিমানে তুলে দেয়া হয়।
হাটহাজারীতে সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম।
নিহতরা হলেন- মো. জসিম (৩২) ও আবু নোমান (৪০)।
এসআই জহির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে গুলিবিদ্ধ জসিম ও নোমানকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
মো. জসিম হাটহাজারী উপজেলার মিরের খীল গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
আবু নোমান হাটহাজারী আদর্শ একাডেমির শিক্ষক। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার মেছমিয়া পাড়ার আবদুল করিমের ছেলে।
হাটহাজারী থানার ওসি লিয়াকত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর কথা জেনেছি। ”
নিহত অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংঘর্ষে পুলিশসহ আরো অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে সাতজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তারা হলেন- মো. হানিফ (৪০), মো. রহিম (২৫), মো. এরশাদ (২০), মো. আনিছ (৩০), মো. ইউসুফ (১৯), মাহবুবুর রহমান (২২) ও জাকির হোসেন (২০)।
স্থানীয়রা জানায়, বেলা পৌনে ৪টার দিকে হাটহাজারী বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন দারুল উলুম ময়নুল আলম মাদ্রাসা সংলগ্ন হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি এবং হাটহাজারী-রাঙামাটি সড়ক অবরোধ করে হেফাজতকর্মীরা। তারা কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে এবং কয়েকটিতে আগুন দেয়।
হাটহাজারী সার্কেলের এএসপি আ ফ ম নিজামুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গুজবের পরপরই মাদ্রাসা এলাকায় কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।
”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) ফরিদ উদ্দিন সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, সংঘর্ষ নেই। ”
সংঘর্ষের পর হাটহাজারী সদরের বাস স্ট্যান্ড, মাদ্রাসা এবং এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে বিজিবি সদস্যরা।
এদিকে ঢাকার মতিঝিল থেকে হেফাজতকর্মীদের হটিয়ে দেয়ার পর সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখে সংগঠনটির হাটহাজারীর কর্মীরা।
ফলে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী, হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি, হাটহাজারী-রাঙামাটি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া রাউজান, ফটিকছড়ি উপজেলার সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।