আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাঁতের স্কেলিং কী এবং কেন আপনার প্রয়োজনীয়???

............ স্কেলিং কি??? স্কেলিং দাঁতের এক বিশেষ পরিষ্কার পদ্ধতি যা আপনার দাঁতের গোঁড়ায় জমে থাকা প্লাক ক্যালকুলাস(দাঁতের চারপাশে জমা পাথর) এক বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে দূর করে। দীর্ঘদিন এরকম জমে থাকা প্লাক ক্যালকুলাস যদি দূর করা না যায় তবে তা দাঁতে সংক্রমণের সৃষ্টি করে ফলে মাড়ি নরম হয়ে যায় যার পরিনতিতে জিনজিভাইটিস পেরিওডনটাইটিস রোগ দেখা দেয় এমনকি দাঁত পড়েও যেতে পারে। নিয়মিত স্কেলিং কেন প্রয়োজনীয়?? আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তা দাঁতের চারপাশে জমা হয়। যদি আমরা সঠিক পদ্ধতিতে ও নিয়মিতভাবে দাঁত পরিষ্কার না করি তাহলে এসব খাদ্যকনাগুলো দাঁতের আবরন “পেরিওডেনটাল মেমব্রেনের” উপর শক্ত হয়ে জমে থাকে। এভাবে জমে জমে একসময় পাথরের মতো সৃষ্টি করে।

একে ডেন্টাল সাইন্সে ক্যালকুলাস বলে। এইসব পাথর দীর্ঘদিন জমে থাকলে তা একসময় দাঁতের মেমব্রেনটিকে নষ্ট করে ফেলে এবং দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ যেমন জিনজিভাইটিস পেরিওডনটাইটিস, মাড়ি হতে রক্ত পড়া, মুখে দুর্গন্ধ, দাঁত শিরশির সহ নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন যদি এই জমে থাকা ক্যালকুলাস প্ল্যাক রিমুভ না করা হয় তাহলে একসময় ঐ দাঁতে ক্যারিজ হয়ে যায়। তাই এই ক্যালকুলাস রিমুভ করার জন্যে প্রতি ছয় মাস পরপর একজন অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। তিনি আপনার দাঁত পরীক্ষা করে বলবে আপনার দাঁত স্কেলিং করা দরকার কিনা? এছাড়াও আমাদের দেশে অনেকে তামাক জাতীয় দ্রব্য যেমন বিড়ি সিগারেট পান সাদা পাতা জর্দা গুল সেবন করে যার ফলে দাঁতে বিশেষ করে সামনের দাঁতে কালো বা বাদামি দাগ পড়ে।

প্রাথমিক অবস্থায় এইসব দাগ দূর করার জন্যে স্কেলিং খুবই আবশ্যক। সুতরাং স্কেলিং করলে দাঁত দুর্বল হয় না বরং তা মাড়ির রোগকে প্রতিরোধ করে যাতে মাড়ি হতে রক্ত পড়া, মুখে দুর্গন্ধ, দাঁত শিরশির করা ইত্যাদি সবই ঠিক হয়ে যায়। ক্যালকুলাস কিভাবে গঠিত হয়??? প্লাক হচ্ছে আঠালো, নরম ব্যাকটেরিয়া ও খাদ্যকণার সমষ্টি যা দাঁতের উপর ক্রমাগত তৈরী হতে থাকে। ব্যাক্টিরিয়া ওখানে অবস্থান নেয় এবং দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে এবং মাড়িতে সংক্রমণ করে, ফলে মাড়ি নরম হয়। যদি দাঁতের প্লাক ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাশ করে পরিষ্কার না করা হয় ওগুলো জমে ক্যালকুলাস বা পাথরে পরিণত হয়।

ক্যালকুলাস কখনো সাধারণ ব্রাশ এর মাধ্যমে রিমুভ করা সম্ভব নয়। একমাত্র স্কেলিং এর মাধ্যমে এই ক্যালকুলাস রিমুভ করা যায়। ঠাণ্ডা গরম বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে কখন আপনার দাঁত শিরশির করে উঠে????? আমাদের দাঁতের সর্ববহিঃস্থ আবরন এনামেল সম্পূর্ণ সংবেদনহীন। কিন্তু এনামেলের নীচের আবরনগুলো বেশ সংবেদনশীল। আমরা যে খাবার খাই তা যদি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয় তাহলে একসময় দাঁতে প্ল্যাক, ক্যারিজ, পাথর জমে এনামেলের আবরন টিকে দুর্বল করে ফেলে।

ফলে সংবেদনশীল অংশ গুলো বের হয়ে আসে। উপরোক্ত সমস্যার কারনে আমরা ঠাণ্ডা গরম বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে দাঁত বেশ শিরশির করতে থাকে। তাই দাঁত প্রতিদিন দুইবার সঠিক নিয়মে ব্রাশের পাশাপাশি ছয় মাস পরপর একজন অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট এর পরামর্ষে স্কেলিং করে নেওয়া উচিৎ। নুতবা অবহেলায় হয়তো দাঁত নষ্ট হওয়া ছাড়াও মুখের ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। স্কেলিং নিয়ে সাধারণ মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারনা???? স্কেলিং করলে দাঁত ফাঁক হয়ে যায় বা যাবে কিনা??মুলত দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের চারপাশে প্রচুর পরিমাণে পাথর জমার ফলে রোগী অনেক সময় ভুলেই যায় স্বাভাবিক অবস্থায় তার দাঁত কেমন ছিল।

দুই দাঁতের মাঝে স্বাভাবিক যে স্পেস থাকে তাও রোগী অনেক সময় বুঝতে চায় না। সে কারণে স্কেলিং করার পর যখন পাথর অপসারিত হয় তখন রোগীদের মাঝে কেউ কেউ হয়তো বলে থাকেন স্কেলিং করার পর তার দাঁত ফাঁক হয়ে গেছে। স্কেলিং করার কারণে দাঁত পাতলা হয়ে যায় কিনা??আসলে স্কেলিং করার পর পাথর যখন অপসারিত হয় তখন সব রোগীই মুখে সজীবতা অনুভব করেন আবার পাথর থাকার কারণে মুখে যে ভারি ভারি ভাব থাকত তা চলে গিয়ে রোগী হালকা অনুভব করতে থাকেন। এই অনুভূতিকেই অনেক রোগী বলে থাকেন তাঁর দাঁত পাতলা হয়ে গেছে। স্কেলিং করার ফলে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হয় কিনা?? স্কেলিং এর সময় দাঁতের উপরের থাকা দাগ, দাঁতের মাঝে জমে থাকা পাথর গুলো বিশেষ আলট্রাসাউন্ড যন্ত্রের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়।

সুতরাং এনামেলের ক্ষতির কোন প্রশ্নই আসে না। সুতরাং দাঁতের রোগ প্রতিরোধে দাঁতের স্কেলিংয়ে সবার সচেতন হওয়া জরুরী। (যদি এসংক্রান্ত কোন প্রশ্ন থাকে তবে আমাকে মেইল করতে পারেন এই অ্যাড্রেসে ধন্যবাদ। ) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।