আমি কেমন লেখি জানিনা । তবে যা লেখি তা বিবেকের তারনা থেকে যতটা পারি শুদ্ধ করে লেখার চেষ্টা করি । আমার এ লেখাটি অনেক আশা নিয়ে লেখা । নারী ও স্বধীনতা নিয়ে আমার সিরিজ লেখার আশা আছে । এই আশা কতটুকু পুর্ণ হবে তা আপনাদের মূল্যবান মতামতের উপর নির্ভর করছে ।
সকল ব্লগারের সহযোগিতা আশা করছি।
নারী কী ? এ প্রশ্নের উত্তর আমি খুঁজতে যাবো না । কারণ আর যাই হোক এই অসাধ্য সাধন আমাকে দিয়ে হবে না - এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত । তবে যারা বিবেকবান তাঁরা অন্তত এটুকু স্বীকার করবেন যে,নারী একটি সত্ত্বা । গঠণগত দিক ছারা পুরুষের সাথে নারীর উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো পার্থক্য নেই ।
আর এই সামান্য কারণেই পুরুষ ভোগ করে স্বাধীনতা- নারী পরাধীনতা । এই সত্ত্বাটিকে আমরা প্রভু (!) নামের পুরুষ অস্বীকার করতে ব্যস্ত । কিন্তু আমি বলতে চাই এরাও একজন মানুষ - যাদের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে । এটি একজন বোধ সম্পন্ন মানুষের মৌ্লিক অধিকার । কিন্তু আমি স্বাধীনতা বলতে উগ্রতার কথা বলতে চাই না; যা আমাদের সমাজে বেমানান ।
চুড়ি কি ? এ প্রশ্নের উত্তর আমাকে দিতে হবে না, কারণ সবাই জানে চুড়ি কী ? তবু আমি আমার সুবিধার্থে একটু বলি, চুড়ি হলো বৃত্তকার দেখতে সৌন্দর্যবর্ধক জিনিস। যা নারীরা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য হাতে পড়ে । চুড়ির আছে একটি সীমা । চুড়ি হাতের একটি নির্দিষ্ট স্থানে নড়াচড়া করে । চুড়ি জড়বস্তু, তাই তার স্বাধীনতা বা অধীনতা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নাই ।
তাই সে তার কাজে একটুও কৃপণতা করে না । পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রকার চুড়ি আছে যেমনঃ মাটির চুড়ি, কাঁচের চুড়ি, রূপার চুড়ি, সোনার চুড়ি ইত্যাদিসহ নানা প্রকারের চুড়ি । ধাতুভেদে এদের মূল্যেরও পার্থক্য আছে ।
আমাদের সমাজে নারীরা ঠিক চুড়ির মতো । অর্থাৎ আমি বলতে চাই নারী ও চুড়ির মধ্যে পার্থক্য নেই ।
আছে শুধু মিল বা ঐক্য । চুড়ি নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে-নারী পুরুষের । এরা কুমারী জীবনে বাবার, বিবাহিত জীবনে স্বামীর সী্মানায় থাকতে থাকতে স্বাধীনতার স্বাদটায় হারিয়ে ফেলে । আর এদের মনটা এতোটায় সংকীর্ণ থাকে যে, স্বামী ও বাবার সৌন্দর্যবর্ধন একমাত্র কাজ এমনটি ভাবতে থাকে । বুদ্ধির পর থেকে বাবাকে আর বিয়ের পর স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে এরা নিজেদের স্বাধীনতা বিসর্জন দেয় ।
কিন্তু তারা কি পারে সন্তুষ্ট করতে ? যদি পারতো তাহলে, কেনো এতো বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন ? নারীরা আজ লাঞ্চিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত কিন্তু এটা তাদের কর্মফল । কারণ তারা চুড়ি হয়ে থাকতে ভালোবাসে, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ।
কেনো বলছি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ? কারণ তাদের মুখে কখনো প্রতিবাদের ভাষা আসে না । তাদেরকে যেভাবে পুরুষরা ব্যবহার করে ঠিক তাঁরাও সেই ভাবে সাঁজতে ব্যস্ত থাকে । হয়তো আমার এ কথা কিছু ক্ষেত্রে মিথ্যা ।
কিন্তু শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই সত্য । প্রমাণ হিসাবে একটা উদাহরণ দেয়া যাক, যখন একটি মেয়ের বাবা লেখাপড়ার মাঝপথে বিয়ের কথা বলে কিংবা বয়স হবার আগেই বিয়ে দিতে চায় তখন তারা জোর প্রতিবাদ দূরে থাক 'না' বলাটাও বলে না । যদি প্রতিবাদ করে তখন মা, ফুফু, খালা, দাদী, নানী সবাই মিলে মেয়ের হাতে চুড়ি পড়াতে উঠে পড়ে লাগে ।
আবার স্বামী যখন বলে চাকুরি করতে হবে না তখনও একই অবস্থা হয় । আর চাকুরীর ক্ষেত্রে মেয়েদের অন্যরূপ শাশুড়ী, ননদ, জাঁ সবাই উঠে পড়ে লাগে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য ।
তাহলে নারীর চুড়ির মতো অবস্থা হওয়ার জন্য কে দায়ী ? ঘটনার সত্যতা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলে পত্রিকায় একটু ভালো করে চোখ রাখলেই এর সত্যতা নিয়ে আর দ্বিধায় পড়তে হবে না ।
অনেক তো বললাম নারীর দোষ, তাহলে পুরুষরা কী ধোঁয়া তুলসীর পাতা ? এবার পুরুষের ভূমিকা দেখা যাক । তারা কতখানি চুড়ি করে রাখতে পারদর্শী । আমরা লেখাপড়া করি কিন্তু শিক্ষা পাই না । যদি পেতাম তাহলে ৩০ বছরের একটা ছেলে হয়ে ১৩ বছরের একটা মেয়েকে বিয়ে করতে আমাদের বিবেকে বাধে না কেনো ? হৈ্মন্তী পড়ে আমরা শিক্ষা নিয়েছি লাখ টাকার নিচে আমরা বিয়ে করবো না ।
তাহলে শিক্ষা...? এ নিয়ে পরে একদিন কথা বলা যাবে । এখন বলি, আমরা ভালো করেই জানি ১৩ বছরের একটি মেয়ের বিয়ে হলে তার আর পড়ালেখা করা সম্ভব না । কারণ তখন বেশির ভাগরই মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায় । এটা বোঝা সত্ত্বেও কেনো পড়ালখা চালানোর কথা বলে একটি শিক্ষিত ছেলে ১৩ বছরের একটি মেয়েকে বিয়ে করে ? কারণ কী জানেন ? এদের ধারণা বেশি বড় মেয়েকে বিয়ে করলে নিজের কথা মতো চালানো যাবে না । আর এই হীন মানসিকতার বলি হাজার হাজার মেয়ে ।
অতএব চুড়ি করে রাখার ক্ষেত্রে পুরুষ পটু কম নয় ।
কিন্তু আর কত দিন ? এভাবে আর চলতে পারে না । দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য নারী - পুরষের ব্যবধান ভুলে হাতে হাত রেখে একসাথে কাজ করতে হবে । আর শুধু পুরুষ নয়, এজন্য উভয়ের মানসিকতা সমানভাবে বদলাতে হবে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।