আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরাই প্রতিবন্ধি

সংগ্রাম করে বেঁচে আছি, সামনে সংগ্রাম দেখছি। সারা দুনিয়ার সার্কাস দেখছিলাম এতোদিন। পত্রিকা আর টিভি চ্যানেলের খবর দেখা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মিডিয়া তো রাজনিতিবীদদের এখন, মিডিয়া এখন স্কোয়ারের, সালমান এফ রহমানের আর মাহফুজের। ২০০৫ পর্যন্ত যে মিডিয়াকে সবাই ভয় পেতো তাই এখন তেলবাজি মিডিয়া।

কিন্তু সার্কাস আমাকে আবার লেখার জন্য ডাকলো। আর পারলাম না উপেক্ষা করতে। দেশে নাকি বিদ্যুতের অভাব নাই। দেশে বিদ্যুতের বাম্পার ফলন হচ্ছে। তাও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বললেন যে দৈনিক ২ ঘন্টা করে লোড শেডিং রাখতে।

যাতে মানুষের মনে থাকে দেশে লোড শেডিং বলে কিছু ছিলো। আচ্ছা একটা কথা, যদি দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি নাই থাকে তাহলে লোড শেডিং কেন? যদি ঘাটতি না থাকে তাহলে ২ ঘন্টা করে বন্ধ রাখা বিদ্যুৎ কই যায়? যদি ঘাটতি না থাকে তাহলে কুইক রেন্টালের নামে কেন বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের খরচ? আর কেন কেনই বা আবার ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনা হবে? যদি এগুলার উত্তর সব ধনাত্বক দিকে হয় তাহলে কেনই বা প্রধানমন্ত্রী এমন হাস্যকর বক্তৃতা দেন? আর এবারের সরকারের শুধু তিনি না, আমাদের সাহারাপাও বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন। জোক মন্ত্রনালয় তার। যেমন সাগর রুনির ব্যাপারে যখন বলা হল ৪৮ ঘন্টার কথা বলেছেন ৪৮ দিন গেলো, খুনিরা কই? তিনি বলেন, "আমি কি বলব বলেন?" এ হল মন্ত্রী আমাদের। আবার বলে ঈদে বাসায় তালা দিয়ে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

আগে ছিল আবুল হোসেন। তার নাম আবুল হাসে দেয়া হয়েছিল। এখন আবুল যাবার পর আরেক আবুলকে তার জায়গা নিতে হল। এই আবুল অর্থমন্ত্রী মাল বলেন শেয়ার বাজার নিয়ে, "আমি শেয়ার বাজার বুঝি না। " তিনি আমাদের অর্থমন্ত্রী।

হলমার্ক কেলেঙ্কারী নিয়ে ৪০০০ কোটি টাকা সরকারী ব্যাঙ্কের লোকসান অথবা লুট হল। মন্ত্রী মহোদয় বলেন,"কালো টাকা থাকবেই, ৪০০০ কোটি টাকা কিছুই না। " আবার তারাই ২২,০০০ কোটী টাকার পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারে না যাদের ৪০০০ কোটি টাকা কিছুই না। আবার আবুল হোসেন পদত্যাগের পর বললেন প্রধানমন্ত্রী আবুল প্রকৃত দেশপ্রেমিক। সত্যি আমরাই তাহলে রাজাকার।

দোষ আমাদের। আমরাই অনন্তের ক্লাসলেস সিনেমাতে দেশপ্রেম পাই। অনন্তের টাকায় দেশপ্রেম পাই। আমরাই, ইউ আর পম গানা কথায় দেশপ্রেম পাই। কিন্তু এটা জানি না যে অনন্ত যে টাকা গার্মেন্টস কর্মীদের চুষে করা।

গার্মেন্টস কর্মীরা সারা মাসে ৩০০০ টাকার মতো পায়। আপনি ভালো জামা কিনলে কয় হাজার দিয়ে কিনেন? আসল দেশপ্রেমিক আমরাই। আমরাই নির্বাচনে এসব জোকারদের বারবার ভোট দেই। স্বাধীনতাবিরোধীদের ভোট দেই। এদের ভাড়াটে নামমাত্র গুন্ডা ছাত্রবাহিনি ক্যাম্পাসগুলোতে রাজত্ব করে।

সাধারন ছাত্রদের হুমকি দেয়। চোরদের আমরাই ভোট দেই। আমরাই এদের ভোট দেয়াতেই দেশপ্রেম পাই। আমরাই এদের নির্বাচিত করে বলি দেশের কিছু হবে না। আমরাই মেধাবিদের দাম দেই না।

সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেরা ফল করেও ২০,০০০ টাকার কেরানির চাকরি করতে হয়, ২৫,০০০ টাকা ঘর ভাড়া দিতে হয়। যোগ্যতা অনুযায়ি কাজ করতে দেয়া হয় না। এরা দেশের বাইরে চলে গেলে বলে এভাবে মেধা চলে গেলে দেশের হবে কি? আমাদের চুপ যাওয়া উচিৎ। দেশের কিছু হওয়া লাগবে না। কারন আমরাই দেশপ্রেম পাই যা আমাদের দেশ বিরোধি কাজ হয়।

আসলে আমরাই প্রতিবন্ধি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।