আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

''পিতা ও পুত্রের গল্প''

''যার সৃষ্টির স্থায়ীত্ব যত বেশী সে তত বড় মাপের কিংবদন্তী'' : মিন্টু সাহেব? : হুম। : কি করছেন? : চা খাই। : তাতো দেখছিই। এভাবে একা একা বসে কি ভাবছিলেন? : ভাবনার কি আর শেষ আছেরে ভাই। : তাও ঠিক।

: বুঝলেন ভাই, আমার ছেলেটাকে নিয়ে বড্ড চিন্তার মধ্যে আছি? : কেন, কি হয়েছে? : ছেলেটা বোধহয় পাগলই হয়ে গেল। : সর্বনাশ, বলেন কি! : তা আর বলছি কি, ছেলের মাথায় পোকা ঢুকেছে। : বলেন কি! : এ পোকা যে সে পোকা নয়। ফিল্ম বানানোর পোকা। সারাদিন শুধু কম্পিউটারের সামনে বসে কি সব সিনেমা দেখে আর পৃষ্টা ভরে লেখে।

: ও তাই বলুন, তা বেশ তো। : আপনার মাথা কি ঠিক আছে মশাই, কোন দিক দিয়ে ব্যাপারটা বেশ তো। এই লাইনে কত ঝুকি জানেননা ? : ঝুকি জিনিসটা জীবনের কোন ক্ষেত্রে নেই বলতে পারেন ? : তা সব ক্ষেত্রেই আছে বটে, কিন্তু এই লাইনে যে অনেক বেশী ঝুকি। : আচ্ছা মিন্টু সাহেব আপনি না একসময় মঞ্চ নাটক করতেন, এককালে বাংলাদেশ বেতারেও আপনার লেখা নাটক প্রচার হত। : এককালে নাটক করতাম বটে।

সেগুলো ছিল সোনালী অতীত। আজকাল কি আর সে দিন আছে। ইদানিং সব জিনিসেই ভেজাল ঢুকে গেছে। : সংস্কৃতিমনা মানুষের হঠাৎ সংস্কৃতির প্রতিই বৈরাগ্য ধরল কি করে। : ভাই, অনেকতো নাটক করেছি।

নাটক কি আমাকে পেটের ভাত জুগিয়ে দিয়েছে? : তা দেয়নি। কিন্তু মনের শান্তি? : পেটে ভাত না থাকলে মনের শান্তি নামক কোন জিনিসের অস্তিত্ব থাকেনা। : হুম। : নাটোক-ফাটোক-ফিল্ম করে কিছুই হয়না বুঝলেন। এগুলো শুধু মরীচিকার মত আপনাকে আশাই দিয়ে যাবে, আপনাকে বাচাঁনোর ব্যবস্থা করবেনা।

: হুম। : আজকাল নাটক-সিনেমা মানেই মানেই ধান্ধাবাজি, নোংরামি। এসবের কোন মূল্য এখন আর আমার কাছে নেই। : মিন্টু সাহেব? : হুম। : আপনার ভিতরের সৃজনশীল মানুষটি যে হঠাৎ করেই মরে গেল, আপনি কি একবারও তাকে বাচাঁবার চেষ্টা করেননি? : হয়ত করেছি... হয়ত করিনি।

: একটা আনুরোধ রইল, নিজের ভিতরের মানুষটিকে আর জাগাতে পারেন বা নাই পারেন আপনার ছেলেটির ভিতরের মানুষকে মেরেন না। তাহলে সে সারাজীবন খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাঁচবে, তাকে পঙ্গু হতে দিয়েননা। : হুম। : আপনার চা দেখি ঠান্ডা হয়ে গেছে। : হোক ঠান্ডা, আজ আর বসবোনা।

বাসায় গিয়ে ছেলের সাথে বসে আড্ডা দেব, তখন আবার চা খেয়ে নেব। অনেকদিন ছেলেটার সাথে মন খুলে গল্প করিনা। : যান তাহলে। : আসি… ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।