আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবার বাগড়া দিন খাগড়াছড়িতে (১৮+ এবং ৫০-) পর্বঃ ০৩

জড় এক প্রসঙ্গ কাঠামোর নিবিড় পর্যবেক্ষক :P চান্দের গাড়ীতে চড়ে পৌছালাম আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে । আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ কাম গুহা নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং আদিবাসীদের মধ্যে যেসব গুজব প্রচলিত সেগুলো হল- --> এই সুড়ঙ্গের ভেতরে নানাবিধ অশরীরী জিনিস দেখা যায়। --> এখানে একা ঢুকতে নেই। --> সুড়ঙ্গের মাঝপথ থেকে বামদিকে একটি রাস্তা গেছে। সেই পথে গেলে কেউ কখনো ফিরে আসে না।

কথা গুলো শুনে কিছুটা দমে গেলাম। ভয় পেয়ে নয়, এটা ভেবে যে একা তো দুরের কথা আমরা একটা ফুটবল টিম নিয়ে গুহার ভেতর যাচ্ছি তাও আবার রিজার্ভ বেঞ্চ সহ এই টিম নিয়া গুহায় ঢুকলে অশরীরী আত্মা তো মাঠেই নামবেই না এবং কেউ স্বেচ্ছায় পথ হারাতে চাইলেও অন্যরা টুটি চেপে ঠিক পথে নিয়ে আসবে। তবে মুখে যতই বলি " ধুর এত মানুষ নিয়া আসা ঠিক হয়নাই" ভেতরে ভেতরে একটা স্বস্তি অনুভব করলাম গুহার ভেতরে যাবার জন্য মশাল কিনে রওনা দিলাম। যেতে পথে পড়ে এই সাইনবোর্ড কিছুটা উচু-নিচু পাহাড়ী বাধানো পথ হেটে পৌছালাম সুড়ঙ্গের মুখে। ভেতরটাতে সামান্য উকি দিয়েই এতক্ষনের সব বাহাদুরী কর্পুরের মত উবে গেল।

পুরুষ মানুষের নাকি ভয় পেতে হয় না। এই প্রথম নিজের জেন্ডার চেঞ্জ করার ইচ্ছাটা প্রবল হল গুহার মুখটা দেখতে অনেকটা এমন (ছবিটা সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে তোলা)... ভেতরে যাই থাকুক মুখে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করলাম। ঢুকতেই একটা ঠান্ডা বাতাস টের পেলাম। চারপাশে আর্দ্র পাহাড় আর তলদেশে ঝর্ণা থাকায় সুড়ঙ্গের ভেতরটা অনেক শীতল। চলার রাস্তাটা ভয়ঙ্কর রকমের বন্ধুর।

কোথাও খাদ, কোথাও বড় বড় পাথর। সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা হল ভেতরের ঘুটঘুটে অন্ধকার । একহাতে ধরতে হয় মশাল, পানির বোতলের মত ছোটখাট জিনিস গুলো বগলে চালান করে দিয়ে আরেক হাতে সুরঙ্গের দেয়াল ধরে ভারসাম্য রেখে এগিয়ে যেতে হয়। ব্যাকপ্যাক থেকে ক্যামেরা বের করা বিলাসিতা হয়ে দাঁড়াল। আর কারো হয় কিনা জানি না মাঝে মাঝে আমি আমার নিজের হাত কোথায় রাখবো খুঁজে পাই না (বিশেষ করে ঘুমের সময়) আর আলুটিলার এই গুহায় ঢুকে মনে হতে লাগন আর একটা হাত এক্সট্রা থাকলে বুঝি খুব একটা মন্দ হত না।

পথপ্রদর্শক সাইফুল ভাইয়ের পেছনে লাইন ধরে সবাই অগ্রসর হলাম। অন্ধকারের মধ্যেই সামনে পিছনে থেকে " আমার ঠ্যাং শেষ" "অই খাড়া ক্যামেরা পইড়া গেসে" " মশাল নিভে গেসে" "আল্লাগো আমি শ্যাষ" এবং কতিপয় অবর্ননীয় বাক্যাংশ ভেসে আসতে লাগল। সুরঙ্গের মাঝপথে একটা গুহার মত যায়গা। সবাই প্রবল বিক্রমে ছবি তুলতে লেগে গেল। পোলাপাইনের পোজ দেয়া দেখলে খোদ লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টাররাও লজ্জায় মুখ লুকাতেন অনেক্ষন নিচু হয়ে হাঁটাতে তখন কোমর ব্যাথা করছিল।

ছবিতোলার ফাকে কিছুক্ষন জিরিয়েও নিলাম। "আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম" আর "সুরঙ্গে গুহা পেলাম" কিছুটা সমার্থ মনে হল "সুরঙ্গে গুহা" পেয়ে আমাদের ফটোসেশন। এই জায়গাটি থেকে আরো কিছুটা সংকীর্ন পথ হেঁটে আলোর দেখা পেলাম। গুহা থেকে বের হবার পথে আমাদের বন্ধু রিয়াদ এক দুঃসাহসিক পোজ দিয়ে ফেলল। সে নাকি রিসেন্টলি সিনেপ্লেক্সে গিয়ে টম ক্রুজের "মিশন ইম্পসিবল" দেখে এসেছে এবার বাগড়া দিন খাগড়াছড়িতে (১৮+ এবং ৫০-) পর্বঃ ০১ এবার বাগড়া দিন খাগড়াছড়িতে (১৮+ এবং ৫০-) পর্বঃ ০২ (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.