আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে পদে রেখে বুয়েটের সংকট নিরসন অসম্ভব

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্নীতিবাজদেরকে অপসারন করুন বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে পদে রেখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) চলমান সংকট নিরসন অসম্ভব। সংকট নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিক এ মত দিয়েছেন। অন্যদিকে সরকার ওই দুজনকে দায়িত্বে রেখেই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে। এই মুহূর্তে আলোচনার সব উদ্যোগও থেমে গেছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটে প্রথম বর্ষের আসন্ন ভর্তি-প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দুজনকে দায়িত্বে রেখে সমস্যা সমাধানের পথ দেখছি না। গত জুলাইয়ে শিক্ষামন্ত্রীর আমন্ত্রণে বৈঠকে অংশ নেওয়া বুয়েটের সাবেক তিন উপাচার্য, ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে মত দিয়েছিলেন। ’ জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘যেখানে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ডিন ও বিভাগীয় প্রধানসহ প্রায় সবার আস্থা হারিয়েছেন, সেখানে তাঁদের ওই পদে থাকার অধিকার নেই। এখন তাঁরা পদ আঁকড়ে থেকে শুধু বুয়েটের নয়, গোটা প্রকৌশল শিক্ষার ক্ষতি করছেন।

’ বুয়েটের উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম ও সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ৭ এপ্রিল বুয়েট শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি শুরু করে। প্রায় এক মাস পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৪ জুলাই থেকে তারা লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ আকস্মিকভাবে ১১ জুলাই থেকে ৪৪ দিনের জন্য বুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর শিক্ষক সমিতির ডাকে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কমর্চারীরা আন্দোলনে যোগ দেন। ৩১ জুলাই আদালত শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন।

এরপর শিক্ষক সমিতি আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষকেরা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। বুয়েটের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হওয়ার আগে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সৈয়দ আবুল মকসুদ সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে এই অচলাবস্থার অবসান হওয়া দরকার। আবুল মকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অন্য কোথাও নিয়োগ দিয়ে এখানে (বুয়েট) গ্রহণযোগ্য কাউকে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে সমস্যার আশু সমাধান করা উচিত। ’ টানা ৪৪ দিন বন্ধের পর ২৫ আগস্ট বুয়েট খুললেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে যাচ্ছেন না।

এমনকি উপাচার্যের ডাকা বৈঠকেও অংশ নিচ্ছেন না পাঁচজন ডিনের সবাই এবং বেশির ভাগ বিভাগীয় প্রধান। জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সার্বিক বিষয়গুলো আমরা পর্যালোচনা করছি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ গত সোমবার অনুষ্ঠেয় বুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দুজনকে রেখে সংকট নিরসন করা সম্ভব নয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকেই। ’ সূত্র জানায়, উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রায় সবাই একমত হলেও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না।

বুয়েটের শিক্ষক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেন, ‘যেখানে বুয়েটের ৪১৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৬৭ জনই এই দুজনের প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছেন, সেখানে তাঁদের রাখার যুক্তি থাকে না। ’ ১৬টি অনিয়মের অভিযোগে বুয়েটের শিক্ষকেরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে ওই দুজনই অভিযোগগুলো অস্বীকার করছেন। পদত্যাগের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘একজন মানুষ দোষ করেনি, একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে অপরাধ না করা সেই মানুষকে সরিয়ে দেওয়া কি ঠিক হবে? মোশতাক আহমেদ, প্রথম আলো, ৩১-০৮-২০১২ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.