আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপাচার্য চরিত

আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে এই বঙ্গদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যগন বসবাস করেন, তাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দন্ডমুন্ডের মালিক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রনীত সকল নিয়ম কানুন এক আশ্চর্য্য বস্তু উহা যথার্থ রুপে ভঙ্গ হওয়ার মধ্যে দিয়ে সফলতা লাভ করে। এখানে যে ছাত্র মারামারি/ খুন/ ছিনতাই করে তার বিচার হয়না উপরন্তু সে হয়ে যেতে পারে দলের নেতা গোছের কেউ। উপাচার্যগণ অস্থায়ী ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং আইনের তোয়াক্কা না করেই স্থায়ী মেয়াদের চেয়েও বেশীদিন পরিবার পরিজন আত্বীয় স্বজন লইয়া সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে থাকেন। উপাচার্য ও তার পরিবেষ্টনকারী অধিকাংশ শিক্ষকগন (যাহারা তার চ্যালা চামুন্ডা প্রকৃতির) ছাত্রদের অভাব অভিযোগ দাবি দাওয়ার প্রতি থোরাই কেয়ার করিয়া থাকেন,অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ছাত্ররা যেন সেই মধ্যযুগের দাস আর উহারা সেই মহাপরাক্রমশালী দাসমালিক।

তো এই দাসমালিকগন নিজেদের মধ্যেও ন্যূনতম গনতান্ত্রিক পদ্ধতিটি বজায় রাখিতে ব্যর্থ হন এবং ফলত: বিভিন্ন শিবিরে বিভক্ত হয়ে দাসেদের উপর মালিকানা প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে নিজেদের বিরুদ্ধে অর্ন্তদ্বন্দে পরিব্যাপ্ত হন। এবং অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য তথা প্রধান দাসমালিক তার একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে নিয়মমাফিক যেকোন ধরনের নির্বাচন পদ্ধতিকে এড়িয়ে যান এবং ক্রমাগতভাবে "গোলেমালে যায় যতদিন" কবিতাখানি আওড়ে যেতে থাকেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাঙ্গালী মুসলমানের সাংস্কৃতিক দৈন্য সুবিদিত, তথাপি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশের ছাত্ররাও দাস্যমনোবৃত্তিসম্পন্ন। তাহারা জ্ঞান আহরন শিকেয় তুলে শিক্ষকদের ফুটফরমাস খাটার সুযোগ আতিপাতি করে খুজতে থাকে, এবং "প্রধান চাটুকার" এর পদটি বাগানোর জন্য ক্লাসে,বিভাগে ব্যপক বিস্তৃত লড়াই সংগ্রাম শুরু করিয়া দেন, কেননা "প্রধান চাটুকার" এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে পরিক্ষার খাতায় অতিরিক্ত নম্বরের। উল্লেখ্য দাসত্বের মাত্রার উপর নির্ভর করেই "প্রধান চাটুকার" পদটি দ্বারা ওই নির্দিষ্ট দাসকে অলংকৃত করা হয়।

দাসমালিকগণ এইদিকে দাসেদের উপর পূর্ন কতৃত্ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তাহাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে দাসদের সর্দার পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, এবং বিভাগ সমূহ থেকে সেই "প্রধান চাটুকার" গণকেই বেছে নেন। ছাত্রদের এই ভয়াবহ দাস্যমনোবৃত্তির সুযোগ লইয়া মধ্যযুগীয় কায়দার চাটুকার, প্রধান সর্দার, ও দাসমালিকগন বিশ্ববিদ্যালয়ে মগের মুল্লুক প্রতিষ্ঠা করিয়া আনন্দের আতিসয্যে ডুগডুগি বাজাইতে লাগেন। বেকায়দা ঘটে তখন যখন ছাত্ররা দাস্যমনোবৃত্তি পরিত্যাগ করিয়া, পা চাটা বাদ দিয়া রাস্তায় দাবি আদায়ের আন্দোলনে নামেন। তখন দাসমালিকগনের অহমে চরম আঘাত লাগে, তাহারা যেকোন প্রকারে সে আন্দোলন দমন করিতে উদ্যত হন, এই দৃশ্য দেখিয়া অন্য দাস্যমনোবৃত্তিসম্পন্ন ছাত্রগণ দ্রুতই তাহাদের নিজেদের স্বরুপ চিনিয়া লইতে পারেন। ইতোমধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করিয়াছে এবং দাসমালিকগণ তাহাদের প্রভাব প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে সকল চাটুকার, হল সর্দারদের তাদের অনুগত দাস বাহিনীকে সদা প্রস্তুত থাকিবার কঠোর আদেশ ফরমাইয়াছেন।

অতএব ছাত্রদের অতিস্বত্তর দাসমনোবৃত্তি পরিত্যাগ করিতে হইবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.