একটি উন্নয়নশীল বহুমাত্রিক দূর্নীতি গ্রস্থ রাষ্ট্র আমাদের এদেশ। শাসক শ্রেনীর রাজনৈতিক নেতারা সার্বক্ষনিক রাজনীতি (২৪ ঘন্টা) করার পরও যখন একজন ব্যবসায়ী/শিল্পপতির ন্যায় শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যায় তখন তাদের সততা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে এই টাকার উৎস কোথায় ? উৎস যে নিচক চাঁদাবাজি তা তারা স্বীকার করুক বা না করুক যখন জানে কালো টাকাই তাদের আয়ের উৎস। যেদেশে টাকা দিয়ে সব কিছুই কেনা যায়। সেদেশে এবার আরেকটি কালো টাকার উৎস সৃষ্টি করেছে মেডিকেলে জিপিএ ভিত্তিক ভর্তির সিদ্বান্ত । একবার চিন্তা করে দেখুনতো, যখন আপনার ছেলে বা মেয়ের মেডিকেলে ভর্তির মাপকাঠি হবে জিপিএ-৫ বা সোনালী জিপিএ (গোল্ডেন জিপিএ) তখন আপনি তার জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য কী না করবেন ? বেসরকারি মেডিকেলে আপনার সন্তান ভর্তি করাতে যেখানে আপনাকে ১৫-২০ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হবে সেখানে আপনি চাইবেন আপনার সন্তানের জন্য সে টাকার কিছু অংশ জিপিএ’র পিছনে খরচ করতে।
আর তাই আপনি ছুটবেন প্রথমে এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে। প্রাকটিক্যাল নাম্বার পুরোটা প্রাপ্তির জন্য আপনি যত প্রকার তদ্বির প্রয়োজন তা তো করবেনই, সে সাথে ঘুষ প্রদানেও আপনি পিছিয়ে থাকবেন না। অত:পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে দৌড়বেন। আপনার কোন আত্মীয় সেখানে চাকরি করে। বোর্ড চেয়ারম্যান/পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আপনার দলের না আপনার আত্মীয় সে সব বিষয় বিবেচনা ছাড়াও যে ভগবান যে প্রসাদ পছন্দ করে আপনি সে প্রসাদ দিয়েই পূজা করবেন।
সেখানে যদি আপনার সন্তানের জিপিএ বৃদ্ধির জন্য ২,৪,৫ লক্ষ টাকা খরচও হয়, তাতেও আপনার লাভ। কারণ সে তার এই জিপিএ প্রাপ্তির মাধ্যমে সরকারি মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার একটি লটারির টিকিট পাবে। যাতে বেসরকারি মেডিকেলে পড়ানোর খরচ থেকে আপনার সাশ্রয় হবে অন্তত: ১০-১৫ লক্ষ টাকা। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে, সরকারের এই সিদ্বান্তের পিছনে তাদের কার সন্তান এবার জিপিএ-৫ অর্জন করেছে কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় জয়লাভ নিশ্চিত হতে না পারা থেকেই এই সিদ্ধান্ত কিনা অদুর ভবিষ্যতে হয়তো তা বুঝা যাবে কিংবা প্রমানিত হবে। জিপিএ-৫ অর্জনের এই ইঁদুর দৌড় থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র ভর্তি পরীক্ষা।
তাছাড়া একজন ছাত্র জানেনা সে কত নম্বর পেল। তাকে কোন ক্রাইটেরিয়াতে ভর্তি করা হবে তাও বিপদজ্জনকভাবে গোপন রাখা হয়েছে। তাই দেখা যায় চট্টগ্রাম কলেজে কিংবা ঢাকা কলেজে এইচ এস সিতে ভর্তির যো্গ্যতা চাওয়া হয় জিপিএ-৫। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সেখানে বিভিন্ন কোটায় জিপিএ-৩ কেও ভর্তি করা হয়েছে। (প্রমান জানতে কলেজে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন) মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রেও এই চালাকি ও সুযোগের সদ্ব্যবহার যে করা হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে ? তাই আসুন, যে যোগ্যতা সম্পন্ন ডাক্তার বানাই।
হাতুড়ে, অপচিকিৎসক নয়। তাছাড়া বইয়ের মেধাবী নয় দেশে প্রয়োজন বুদ্ধি ভিত্তিক জনশক্তির। মেধাবীরা ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি কালীন সময়ে যে জ্ঞান লাভ করে তা তারা কলেজে পড়ার ২ বছরেও অর্জন করতে পারে না। তাদের বৈশ্বয়িক সে জ্ঞানে মেডিকেল কলেজের আঙ্গিনা আলোকিত হোক এই প্রত্যাশায় রইলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।