আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অযথাই সাপ মারবেননা। সাপ সম্পর্কে জানুন। সাপে কাটলে কি করবেন জেনে নিন।

ভাল কথা বলুন সাপ মানুষকে বিনা কারণে কামড় দেয় না শুধু আতঙ্কগ্রস্ত বা আঘাতপ্রাপ্ত হলেই কামড় দেয়। আর বাংলাদেশের মানুষ দেশীয় ৮১ প্রজাতীর সব সাপকে দেখলেই মারে যদিও প্রায় সবকটিরই বিষ নেই। ঢোঁড়া সাপ, লাউডগা, দুধরাজ, কালনাগিনী, মাইট্টা সাপ, অজগর এইসব নিরীহ ও বিষহীন সাপ কিন্তু সবচেয়ে বেশী মারা পড়ে। বাংলাদেশেঃ ১. শঙ্খচূড় (শঙ্খচূরের আরেকনাম রাজগোখরা হলেও এটা আসলে গোখরা সাপ নয়) ২.গোখরা ৩। পাঁচ প্রজাতির কেউটে, আঞ্চলিকভাবে কেউটে সাপকে অনেকে পানর বলে (৩ প্রজাতির কেউটে খুব বিরল, শাঁকিনী সাধারণত ছোবল দেয়না, কাল কেউটেটাই খালি ছোবল দেয়) ৪.চন্দ্রবোড়া এই কয়েকটি সাপ ছাড়া আর কোন সাপের মরণঘাতি বিষ নাই। ছবিঃ শঙ্খচূড় ছবিঃ গোখরা ছবিঃ কালকেউটে ছবিঃ শাঁকিনী বা শঙ্কিনী ছবিঃ চন্দ্রবোড়া। নিরিহ ২ টি সাপের ছবি দিলাম নিচে যাদের কোন বিষ নাই! ছবিঃ কালনাগিনী ছবিঃ ঢোঁড়া সাপ সাপে কাঁটার লক্ষণ * দংশিত স্থানে ব্যথা নাও থাকতে পারে তবে ক্ষতস্থান ফুলে গেলে কিংবা পঁচে গেলে ব্যথা হতে পারে৷ * রোগীর ঘুমঘুম ভাব হতে পারে ও দুর্বলতা অনুভব করতে পারে৷ * প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত দেখা দিতে পারে৷ চোখের মাংসপেশী ও অক্ষিগোলকের মাংসপেশীতে প্যারালাইসিস হলে রোগীর চোখের পাতা ভারী হয়ে যায়, চোখ বুঁজে আসে, চোখে ঝাপসা দেখে৷ * জিহ্বা জড়িয়ে আসা, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া, চোয়াল ও তালু অবশ হওয়ার কারণে ঢোক গিলতে অসুবিধা, হঁাটতে অসুবিধা হওয়া, হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া এমন কি মাংসপেশীও অবশ হতে পারে৷ শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা হয়ে রোগী নীল বর্ণ হয়ে যেতে পারে৷ প্রাথমিক চিকিত্‌সা *রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে ৷ বেশিরভাগ রোগী মনে করেন মৃতু্য অবশ্যম্ভাবী৷ তাই জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে সাহস দেয়া ও প্রাথমিক চিকিত্‌সা দিয়ে যথাযথ স্থানে/হাসপাতালে চিকিত্‌সার জন্য প্রেরণ করলে রোগী বিশ্বাস ও সাহস ফিরে পাবে৷ * দংশিত স্থান কিছুতেই কাটা উচিত নয়৷ কেবল ভিজে কাপড় দিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে ক্ষতস্থান মুছে দিতে হবে৷ * দংশনকৃত স্থান থেকে ভিতরের দিকে সাথে সাথে কেবল একটি গিঁট গামছা বা কাপড় দিয়ে (পায়ে দংশন করলে রানে, হাতে দংশন করলে কনুইয়ের উপরে গিঁট) এমনভাবে দিতে হবে যেন খুব আটসঁাট বা ঢিলে কোনটাই না হয় (বলা হয় যেন একটি আঙুল একটু চেষ্টায় ভেতরে যেতে পারে)৷ * সাপে কাটার স্থান বেশি নড়াচড়া করা যাবে না কারণ মাংসপেশী সংকোচন করলে বিষ দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে৷ * রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে কোনোক্রমেই রোগীকে হঁাটতে দেওয়া যাবে না৷ রোগীকে কঁাধে, খাটিয়ায় বা দোলনায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ (সম্ভব হলে মৃত সাপ এর প্রজাতি ও বিষধর কিনা তা নিরূপণের জন্য সংগে নিতে হবে৷ সাবধান! সাপ মৃত কিনা ঠিকভাবে দেখে নিন৷ কারণ সাপ মারা যাওয়ার ভান করতে পারে এবং পরে আবার সাপ-দংশন করতে পারে৷) * জরুরি কোনো উপসর্গ না থাকলে বিষদাতের চিহ্ন পরীক্ষার জন্য দংশিত স্থান পরীক্ষা করতে হবে৷ বিষ দঁাতের দাগ প্রায় আধা ইঞ্চি ফাকে দুটি খোচা দেয়ার চিহ্ন হিসাবে অথবা কেবল অঁাচড়ের দাগ হিসেবে দেখা যেতে পারে৷ দুটো বিষদঁাতের চিহ্ন পরিষ্কারভাবে থাকলে খুব সম্ভবত সাপটি বিষধর, তবু বিষদঁাতের চিহ্ন না থাকলে যে সাপটি বিষধর নয় তা বলা যাবে না৷ কামড়ানোর স্থানে চামড়ার রঙের পরিবর্তন, কালচে হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফোসকা পড়া, পচন ধরা ইত্যাদি হতে পারে- আবার কোনো পরিবর্তন নাও থাকতে পারে৷ আবার প্রাথমিক চিকিত্‌সার ফলেও স্থানীয় পরিবর্তন হতে পারে৷ কুসংস্কার আমাদের দেশে অনেক ক্ষতিকর প্রাথমিক চিকিত্‌সা প্রচলিত যা ওঝা ও সর্প-চিকিত্‌সকরা প্রদান করে থাকেন৷ যা থেকে অনেক সময় রক্তপাত, ধনুষ্টংকার ও পঁচনসহ অন্যান্য অসুবিধা হয়৷ · দংশিত অঙ্গ ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে রক্তক্ষরণ করানো৷ · একাধিক স্থানে খুব শক্ত করে গিঁট দেয়া৷ · কার্বলিক এসিড জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে দংশিত জায়গা পোড়ানো · গাছ-গাছড়ার রস দিয়ে প্রলেপ দেয়া৷ · বমি করানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার৷ · কানের ভেতর বা চোখের ভেতর কিছু ঢেলে দেয়৷ এসব কখনও করা উচিত নয় বরং হাসপাতালে বা ডাক্তারের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে৷ সর্পদংশন প্রতিরোধ · বেশিরভাগ সর্পদংশন পায়ে হয়ে থাকে৷ কাজেই সাপ থাকতে পারে এমন জায়গায় হাটার সময় বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে জুতা, লাইট ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে৷ · সাপ সামনে পড়ে গেলে ধীর-স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকা উচিত্‌, সাপ প্ররোচনা ছাড়া দংশন করে না৷ (শুধু সাপ নয় পৃথিবীতে কোনো প্রাণীই অনর্থক ক্ষতি করে না) · দুর্ভাগ্যবশত যদি সাপ দংশন করে থাকে, শান্ত থেকে কারো সাহায্য নিতে হবে৷ সর্পদংশনের পর কখনো দৌড়ানো উচিত্‌ নয়, এতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.