৭০/ যে জোর করিয়া কিছু লইতে জানে, সে তাহা রাখিতেও জানে ।
৭১/ যাহার রূপ আছে , সে দেখাইবেই । যাহার গুণ আছে , সে প্রকাশ করিবেই । যাহার ঋদয়ে ভালবাসা আছে , যে ভালবাসিতে জানে –সে ভালবাসিবেই ।
৭২/ সকলেরই একটা সীমা আছে ।
স্বর্গীয় ভালবাসারও একটা সীমা নির্দিষ্ট আছে । যদি সীমা ছাড়াইয়া যাও , কষ্ট পাইবে । কেহ রাখিতে পারিবে না ।
৭৩/ শুধু ইচ্ছে এবং ঋদয় থাকিলেই পরের ভালো এবং দেশের কাজ করা যায় না । যাদের ভাল করবে তাদের সঙ্গে থাকার কষ্ট সহ্য করতে পারা চাই , বুদ্ধি-বিবেচনায় ধর্মেকর্মে এত এগিয়ে গেলে তারাও তোমার নাগাল পাবে না , তুমিও তাদের নাগাল পাবে না ।
৭৪/ নিজের কর্তব্য করার আগে পরের কর্তব্য আলোচনা করলে পাপ হয় ।
৭৫/ একটা কথা এই যে মানুষ এমনি দুঃসময়ের মাঝে আশা-নিরাশার কুল-কিনারা যখন দেখিতে পায় না, তখন দুর্বল মন বড় ভয়ে ভয়ে আশার দিকটাই চাপিয়া ধরিয়া থাকে । যেটা হইলে মঙ্গল, সেইটাই আশা করে । ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সেই দিক পানেই নিতান্ত উৎসুক নয়নে চাহিয়া দেখিতে চাহে ।
৭৬/ শিক্ষা , বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান , উন্নতি যা কিছু সব সুখের জন্য , যেমন করেই দেখনা কেন নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয় ।
৭৭/ চাঁদের অত রূপ বলেই তাতে কলঙ্কের কালো দাগ, পদ্ম অত সাদা বলেই তাতে কালো ভোমর বসে থাকে ।
৭৮/ যাহার আশা আছে , সে একরকম করিয়া ভাবে , আর যাহার আশা নাই, সে অন্য রকম ভাবে । পূব্বোর্ক্ত ভাবনার মধ্যে সজীবতা আছে , সুখ আছে, দুঃখ আছে , উৎকন্ঠা আছে, তাই মানুষকে শ্রান্ত করিয়া আনে-বেশীক্ষণ ভাবিতে পারে না । কিন্তু আশাহীনের সুখ নাই, দুঃখ নাই, অথচ তৃপ্তি আছে । চোখ দিয়া জলও পড়ে, গভীরতা আছে- কিন্তু নিত্য নুতন করিয়া মর্ম্মভেদ করে না ।
হাল্কা মেঘের মত যথাতথা ভাসিয়া চলে । যেখানে বাতাস লাগে না, সেখানে দাড়ায়, আর যেখানে লাগে সেখান হইতে সরিয়া যায় । তন্ময় মন উদ্বেগহীন চিন্তায় একটা সার্থকতা লাভ করে ।
৭৯/ ভালবেসে শুধূ-হাতে ফিরে আসাটাই বড় যাতনা, তার পরে আবার নতুন করে ভালবাসতে যাওয়ার মত বিড়ম্বনা সংসারে আর নাই ।
৮০/ রাজ্য পাইতে চাও তো সহস্র লোকের দুঃখকে আপনার দুঃখ বলিয়া গ্রহণ করো, সহস্র লোকের বিপদকে আপনার বিপদ বলিয়া বরণ করো,সহস্র লোকের দারিদ্র্যকে আপনার দারিদ্র্য বলিয়া স্কন্ধে বহন করো – এ যে করে সে-ই রাজা, সে পর্ণকুটিরেই থাক আর প্রাসাদেই থাক ।
৮১/ যে ব্যক্তি সকল লোককে আপনার বলিয়া মনে করিতে পারে, সকল লোক তো তাহারই ।
৮২/ পৃথিবীর দুঃখ হরণ যে করে সেই পৃথিবীর রাজা ।
৮৩/ রাজাকে বধ করিয়া রাজত্ব মেলে না , পৃথিবীকে বশ করিয়া রাজা হইতে হয় ।
৮৪/ পাপের শেষ কোথায় গিয়া হয় কে জানে , পাপের একটি বীজ যেখানে পড়ে সেখানে দেখিতে দেখিতে গোপনে কেমন করিয়া সহস্র বৃক্ষ জন্মায় , কেমন করিয়া অল্পে অল্পে সুশোভন মানবসমাজ অরণ্যে পরিণত হইয়া যায় , তাহা কেহ জানিতে পারে না ।
৮৫/ দিনরাত প্রখর বুদ্ধিমানের সঙ্গে থাকিলে বুদ্ধি লোপ পায় ।
ছুরিতে অবিশ্রাম শান পড়িলে ছুরি ক্রমেই সুক্ষ হইয়া অর্ন্তধান করে । একটা মোটা বাট কেবল অবশিষ্ট থাকে ।
৮৬/ সুক্ষ বুদ্ধির একটা লক্ষণ এই যে , তাহা সহজ জিনিসকে শক্ত করিয়া তুলে ।
৮৭/ পৃথিবীতে বিস্তর বুদ্ধিমান না থাকিলে পৃথিবীর কাজ অনেকটা সোজা হইত । নানারূপ সুবিধা করিতে গিয়াই নানারূপ অসুবিধা ঘটে ।
অধিক বুদ্ধি লইয়া মানুষ কী করিবে ভাবিয়া পায় না ।
৮৮/ পাঁচটা আঙ্গুলেই বেশ কাজ চালিয়া যায় , দুর্ভাগ্যক্রমে সাতটা আঙ্গুল পাইলে ইচ্ছা করিয়া কাজ বাড়াইতে হয় ।
৮৯/ বিবাহ না করিয়া ঠকা ভালো , বিবাহ করিয়া ঠকিলেই মুশকিল ।
৯০/ সংসারে কঠিন কর্তব্য হইতে প্রেমকে ফুলের মতো ছিড়িয়া স্বতন্ত্র করিয়া লইলে, তাহা কেবল আপনার রসে আপনাকে সজীব রাখিতে পারে না, তাহা ক্রমেই বিমর্ষ ও বিকৃত হইয়া আসে ।
৯১/ ভালোবাসার উৎসবও কেবলমাত্র দুটি লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয় না – সুখালাপের মিষ্টান্ন বিতরণের জন্য বাজে লোকের দরকার হয় ।
৯২/ সংসারে আপন – পর কেহই নাই । যে আপন মনে করে সেই আপন – যে পর বলিয়া জানে , সে আপন হইলেও পর ।
৯৩/ সোহাগের সঙ্গে রাগ না মিশিলে ভালোবাসার স্বাদ থাকে না – তরকারিতে লঙ্কামরিচের মতো ।
আগের পর্ব গুলো নিচের লিঙ্কে দেখুন ।
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।