" পথ পথিকের সৃষ্টি করেনা, পথিকই পথের সৃষ্টি করে " - আমি পথিক হতে চাই সুমন , রাসেল , মামুন তিন বন্ধু । ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব । যেকোনো বিপদে-আপদে তারা একে অপরের সঙ্গী । অনেকদিন পরে আজ সন্ধায় তারা তাদের স্কুলের বন্ধুদের সাথে দেখা করে । প্রায় ৫ বছর আগে স্কুলের গন্ডি পার করলেও তাদের বন্ধুত্ব সেই আগের মতই আছে , আড্ডায় মেতে ওঠে তারা ।
এক পর্যায়ে তাদের আড্ডার বিষয় নির্ধারিত হয় দৈনন্দিন জীবনের পড়ালেখা সংক্রান্ত চাপাবাজি । কে কত বড় চাপাবাজ - এটাই এখন তাদের দেখার বিষয় । প্রথমেই চাপাবাজিতে আমন্ত্রন জানানো হয় মামুনকে । (ব্রাকেট এর মধ্যকার কথাগুলো বন্ধুদের)
" কি আর বলব বন্ধু , তোরা তো সবই জানিস , তাও বলি । আমার বাবা একজন বড় শিল্পপতি , দেশের অনেক বড়-বড় মন্ত্রী-আমলা আমার বাবার খুব ঘনিষ্ট বন্ধু , প্রায়ই তারা বাবাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন ।
বাবার সাথে আমিও যাই । তো আমার এস.এস.সি. পরীক্ষার পরে একদিন তারা বাবাকে এক অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন । আমিও যাই বাবার সাথে । অনুষ্ঠানে আমাকে বিমর্ষ হয়ে বসে থাকতে দেখে এক আংকেল এর কারন জিজ্ঞেস করেন , আমি আমার এস.এস.সি. পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কথা বলি , তিনি হাসিমুখে তা উড়িয়ে দিলেন , পরে দেখলাম , বাবার সাথে কি যেন বললেন । আমি ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগের ছাত্র ছিলাম , কিন্তু সবচেয়ে অবাক হই যখন দেখলাম আমার রেজাল্ট A+, তাও আবার পড়ালেখা ছাড়াই ! (না পইড়াই A+ ) , হুম , কি আর বলব বল , সবই ।
এরপরে বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিলাম , কিন্তু সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলো - কলেজে আমার উপস্থিতি আর কোনো ভালো ছাত্রের অনুপস্থিতির দিনসংখ্যা প্রায় সমানই ছিল , (ছাত্রও মাশাল্লাহ ) , আর বাসায় পড়ার কথা না হয় না ই বললাম । তো আমার এইচ.এস.সি. পরীক্ষা এস.এস.সি. এর চেয়ে খারাপ হলেও ফলাফল কিন্তু আরো ভালো , এইবার কিন্তু পেলাম গোল্ডেন A+, (মানবিক থেইকা গোল্ডেন A+, তাও আবার কলেজ এ না যাইয়া , বাসায় না পইড়া ) , কি আর করব , সবই , বুঝোনাই , তারপরের ঘটনাতো আরো ভয়ংকর । হটাত একদিন কি মনে করে মনে আফসোস হলো - ইশ যদি মানবিক বিভাগ থেকে বুয়েটে পড়তে পারতাম (খাইছেরে , কি কয় ) , কিন্তু তা তো আর সম্ভব না , এই নিয়ে কয়েকদিন মন খারাপ থাকায় বাবা এর কারন জিজ্ঞেস করলেন । আমি বাবাকে আমার বুয়েটে পড়ার ইচ্ছার কথা জানালাম , পরের দিনই বাবা তার এক মন্ত্রী বন্ধুর বাসায় গিয়ে আলোচনা করল । এর কিছুদিন পরেই বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার একমাস আগে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছাপানো হলো - এবার মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকবে , এইচ.এস.সি. এর ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বুয়েটে ভর্তি করা হবে , তাদের জন্যে কোনো ভর্তি পরীক্ষা হবেনা ।
- তারপর আর কি ? কত আন্দোলন , সমাবেশ , অণশন , মিছিল হইলো , কিন্তু কোনো লাভ হইলো না । এক পর্যায়ে আমি ঠিকই বুয়েটে ভর্তি হলাম । কারন ......... ঐ যে সবই । এরপরে নাকি অনেকে আত্নহত্যাও করেছে । হে হে হে , তাতে আমার কি ? আমি এখন বুয়েটে পড়ি , মানবিক বিভাগ থেকে বুয়েটে পড়ি , হা হা হা , ভাবতেও মজা লাগে ।
" (মামুন তার চাপাবাজি শেষ করে)
সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পরে , মানবিক বিভাগ থেকে বুয়েটে ভর্তি । চরম মামা , চরম বলছো , এইবার সুমনের পালা - সবাই একযোগে সুমন কে চাপাবাজিতে আমন্ত্রন জানায় ।
" আমার ঘটনাটা খুবই মারাত্নক । আমার বাবা একজন মন্ত্রী-পরিষদের লোক , (আগেরটা থেকে এক ডিগ্রী উপরে ) , পড়ালেখায় আমার তেমন ইচ্ছা ছিলনা , কোনো রকমে মানবিক বিভাগ থেকে এস.এস.সি. পরীক্ষা দেই , কিন্তু তার আগেই আমি বুঝতে পারি যে মানবিক বিভাগ কি জিনিস , কোনো রকমে পাশ করি , (কোনো রকমে পাশ ! A+ বা গোল্ডেন A+ কিছুই না ) , না , এখানে কিছুই না , তারপরে চিন্তা করতে থাকি , কিভাবে কি করা যায় । হটাত আমার মাথায় এক জটিল বুদ্ধি আসে , 'আমিতো বিভাগ পরিবর্তন করলেই পারি ।
যেই ভাবা সেই কাজ । আমি বাবাকে আমার ইচ্ছার কথা জানাই , বাবাও এতে সম্মতি দেন , শহরের মোটামুটি নামকরা একটি কলেজ এ আমি ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হই (মানবিক থেইকা ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগে ) । কিন্তু কলেজ এর স্যারেরা আমাকে গুগল এ সার্চ দিয়েও কোনো দিন কলেজ এ তাদের ক্লাশে খুজে পান নাই , কিন্তু আমার উপস্থিতি প্রত্যেকদিন , আফসোস (ছাত্র না অন্যকিছু ) । আমি কিন্তু বাসায় ঠিকই পড়তাম , কিন্তু পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তে 'মুখবই' এর বিভিন্ন পৃষ্ঠা (ফেসবুক, হা হা হা ) । ক্রমেই এইচ.এস.সি. পরীক্ষা এগিয়ে এলো ।
কলেজ এর স্যারদের মতো এইচ.এস.সি পরীক্ষার হলের স্যারেরাও আমাকে কয়েকটি পরীক্ষায় তাদের হলে খুজে পেলেন না , কিভাবে পাবেন ? আমিতো তখন ডেটিং এ (এইচ.এস.সি পরীক্ষা বাদ দিয়া ডেটিং ) , হুম , তো কি হইছে ? মনে হয় , ৫-৬ তা পরীক্ষা দিয়েছিলাম । কি আর করা , ঘটনা জানার পরেও বাবাকে তেমন একটা চিন্তিত মনে হলো না । এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফলাফলের দিন ঘনিয়ে আসলো । আমি ভয়ংকর রকমের অবাক হই , যখন দেখি যে আমি গোল্ডেন A+ পেয়েছি (সবগুলা পরীক্ষা না দিয়াই গোল্ডেন A+, ক্যামনে ) , ঐ যে বললাম , সবই । আমিতো মহা আনন্দে ছিলাম ।
কিন্তু একদিন রাতে স্বপ্ন দেখি যে আমি ডাক্তার হয়ে গিয়েছি ! আমার মনে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা জাগ্রত হয় , (ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগ থেইকা ডাক্তার , হায়রে) । আমি আমার ইচ্ছা ও স্বপ্ন নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করলাম এবং বাবাকে জানালাম , এক্ষেত্রে আমার খুব ভাল বন্ধু মামুন (১বছর আগে যে মানবিক বিভাগ থেকে বুয়েটে ভর্তি হইছিলো ) আমাকে চরমভাবে উতসাহিত করে । বাবাও বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে হাসিমুখে আশ্বস্ত করলেন । ১ সপ্তাহ পরে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার একমাস আগে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছাপানো হলো - এইচ.এস.সি এর ফলাফলের ভিত্তিতে এবার শিক্ষার্থীদের মেডিকেল কলেজ সমুহে ভর্তি করা হবে , ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এতে অগ্রাধিকার পাবে , কোনো ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবেনা । তখন আমারে আর কে পায় ? অনেক সংগ্রাম , আন্দোলন , বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এ পড়ার যোগ্যতা অর্জন করলাম , এরপরে নাকি অনেকে আত্নহত্যাও করেছে , এর সাথে নাকি এক শিক্ষার্থীর বাবাও মারা যায় , (হায়রে আবেগ ) , কিন্তু এতে আমার কিছু যায়-আসে না ।
কি যে মজা আমার এখন নাচতে ইচ্ছা করতেছে , মেডিকেলে পড়মু , ডাক্তার হমু , কি মজা । " (সুমন তার চাপাবাজি শেষ করে)
সবাই পুনরায় অট্টহাসিতে ফেটে পরে , হাততালি দেয় । ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগ থেকে মেডিক্যাল কলেজ এ পড়ার যোগ্যতা অর্জন , জটিল হইছে মামা , কঠিন বলছো , তা রাসেল , এইবার তুমি শুরু করো - সবাই একত্রে রাসেল কে চাপাবাজিতে আমন্ত্রন জানায় ।
রাসেল কিছুটা সময় নেয় । তার বন্ধুরা তাকে তাড়া দিতে থাকে ।
কিছুক্ষন পরেই রাসেল তার নীরবতা ভাঙে ।
" আমার বাবা ছিলেন একজন স্বল্প বেতনের সরকারি চাকুরিজিবী , মা গৃহিনী । সাধারন জীবন-যাপনের চেয়ে বেশী কিছু চিন্তা করা আমাদের জন্যে মনে হয় একধরনের পাপ ছিল । অতি কষ্টে আমাদের সংসার চলতো । শত হতাশার মাঝেও তাদের আশার মধ্যমণি ছিলাম আমি ।
আমাকে অনেক বড় কিছু করতে হবে - এই স্বপ্নে আমার বাবা বিভোর থাকতেন । বাবার স্বপ্ন ছিল আমাকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন , আমি যেটা বেছে নেই । আমি বলতাম - সেটা তো অনেক পরের ব্যাপার , বাবা আমার দিকে তাকিয়ে হাসতেন , এক স্বপ্ন পূরণের হাসি । আমিও বাবার স্বপ্নকেই আমার লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করি । ভালোই কাটছিলো আমাদের দিনকাল ।
এস.এস.সি. পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন A+ পাই । আমাকে নিয়ে আমার বাবার স্বপ্ন আরো প্রবলভাবে উজ্জীবিত হতে থাকে । স্বপ্ন পুরণের আশায় শহরের নামকরা একটি কলেজ এ আমাকে ভর্তি করানো হয় , যা ছিল আমাদের মত নিম্ন - মধ্যবিত্তদের জন্যে অনেক খরচের । তারপরেও বাবা হাসিমুখে সব মেনে নেন । আমিও কয়েকদিনের মধ্যে ২টি টিউশনি যোগাড় করি , এতে নিজের হাত-খরচের পরেও কিছু টাকা জমা থাকতো ।
বাবা প্রায়ই বলতেন - 'রাসেল তুমি কিন্তু ক্রমেই তোমার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছো' , আমি বাবার দিকে তাকিয়ে হাসতাম , যার সাথে মিশে থাকতো পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা । অনেক কিছুই দেখেছিলাম তখন , অর্থ-বিত্তশালী অনেকেই নানাভাবে তাদের আনন্দ উদযাপন করতো , মনের সুখ প্রকাশ করতো , কিন্তু আমি তা পারতাম না , আমার অর্থ ছিলো না , কিন্তু ছিল বাবার হাসিভরা মুখ , স্বপ্ন , আর আমার নিজ লক্ষ্যে পৌছানোর তীব্র ইচ্ছাশক্তি । ক্রমেই আমার এইচ.এস.সি পরীক্ষা এগিয়ে এলো , ভালভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম । প্রথম পরীক্ষার দিন বাবা অফিসে যাননি , আমাকে নিজে পরীক্ষার হলে দিতে যাবেন বলে , সেই স্মৃতি আমার আজও চোখে ভাসে । আশানুরুপভাবে সব পরীক্ষাই ভাল হলো , আমিও বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিতে থাকি ।
কিছুদিনের মধ্যেই এইচ.এস.সি এর ফলাফল প্রকাশিত হয় , না এবার আর গোল্ডেন A+ পেলাম না , শুধু A+। বাংলাতে A পাই । অনেক কষ্ট হয়েছিল সেদিন , কিন্তু বাবার মুখের সেই স্বপ্ন পূরণের হাসি যেন আমাকে সব কষ্ট ভুলিয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে , আমি শক্তি খুজে পাই , নতুন উদ্দ্যমে সবকিছু শুরু করি । কিন্তু কিছুদিন পরেই সরকারের এক সিদ্ধান্তে আমি সহ দেশের সকল শিক্ষার্থী , অভিভাবক , শিক্ষক , জনগন অবাক হয়ে যায় । বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার একমাস আগে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছাপানো হয় - এবার মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকবে , এইচ.এস.সি এর ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বুয়েটে ভর্তি করা হবে , তাদের জন্যে কোনো ভর্তি পরীক্ষা হবেনা ।
আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে , যদিও এর পিছনে কিছু নীতিমালা ছিল , কিন্তু আমার মত অনেক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক এমনকি বুয়েটের শিক্ষকেরাও এর বিরোধীতা করেছিলেন , কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি । পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরুপ অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীই বুয়েটে ভর্তি হয় , আর আমার মত যারা বাংলায় A+ পায়নি , তারা অনেকেই বুয়েটে পড়ার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয় । অনেকেই এতে আত্নহত্যার পথ বেছে নেয় , কিন্তু এতে সরকারের কিছু আসে-যায় না । আমার বাবাও এতে কিছুটা ভেঙে পড়ে । তার স্বপ্নের অর্ধেক ধবংস হয় ।
পরবর্তীতে আমি সব হতাশাকে অনেক কষ্টে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হই , বাবার অবস্থারও কিছুতা উন্নতি হয় । আমি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে মনোনিবেশ করি । আমি খুব ভালোভাবে মেডিকেলে ভর্তির জন্যে প্রস্তুতি নেই । বাবার স্বপ্ন আর আমার লক্ষ্য আবার উজ্জীবিত হয় , কিন্তু সেই স্বপ্নও ধুলিস্মাত হয় সরকারের নেয়া আরেকটি সিদ্ধান্তে , যখন দেখি - মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার একমাস আগে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছাপানো হয় - এইচ.এস.সি. এর ফলাফলের ভিত্তিতে এবার শিক্ষার্থীদের মেডিকেল কলেজ সমুহে ভর্তি করা হবে , ব্যবসায়-শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এতে অগ্রাধিকার পাবে , কোনো ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবেনা । এবার আর আমরা আগের শিক্ষার্থীরা না , নতুন শিক্ষার্থীরাও চরম বিপদে পড়ে যায় ।
অনেক সংগ্রাম , আন্দোলন , স্মমেলন করেও কোনো কাজ হলো না , সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকল । এবারও কিছু তুখোর মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজসমুহে ভর্তি হয় , আর আমরা যারা বাংলাতে A+ পাইনি , তারা অনেকেই মেডিকেলে পড়ার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হই । অনেকেই এতে আত্নহত্যার পথ বেছে নেয় , কিন্তু এতে সরকারের কিছুই আসে-যায় না । কিন্তু এবার আর আমার বাবা শোকে ভেঙে পড়েন নি , শোকে পাথরে পরিণত হয়েছিলেন , আর পাথরকে ভাঙা তো এত সহজ না , তাই তিনি তার শেষ আশ্রয় মাটির সাথে মিশে গিয়েছেন । এখন কেউ কি বলতে পারো - আমি এখন কি করবো ? আমার ভবিষ্যত কি ? , আমি কেন আমার পরিশ্রমের মুল্য পেলাম না ? কেউ কি ফিরিয়ে দেবে আমার বাবাকে , তার স্বপ্নকে , আমার লক্ষ্যকে , যারা আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তাদেরকে ? এরপরে কি কেউ আর ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার দুঃসাহস দেখাবে ? এরকম আরো অনেক প্রস্নই আজ আমি করতে পারি , কিন্তু এর সঠিক উত্তর প্রদানের সৎ সাহস আজ কারো নেই , হয়তোবা কোনোদিন হবেওনা ।
" (বন্ধুদের আড্ডা ত্যাগ করে সম্মুখে হাটা শুরু করে রাসেল)
এবার আর বন্ধুদের মধ্যথেকে কেউ হাততালি দেয় না , কেউ অট্টহাসিতেও ফেটে পড়েনা , কারন তারা কেউই হয়তোবা এটিকে চাপাবাজি হিসেবে গ্রহন করেনি , আবার এমনও হতে পারে - এই খেলায় রাসেলই জয়ী । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।