বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা... ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে বাংলাদেশ যথার্থ সম্মান দেয়নি
রেজা ঘটক
মাত্র আট বছর হল। অথচ এরমধ্যেই বাংলাদেশের মানুষ ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে ভুলে গেল! বাংলাদেশে এখন অনেক টেলিভিশন চ্যানেল। অনেক জাতীয় দৈনিক। অনেক সাপ্তাহিক পত্রিকা। অনেক সাহিত্যের কাগজ।
কোথাও ১১ আগস্ট ডক্টর হুমায়ূন আজাদ নেই। ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট হুমায়ূন আজাদকে ভীনদেশ জার্মানির মিউনিখে জার্মান সরকার প্রদত্ত একটি সরকারি বাসভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঊনিশ শতকের বিখ্যাত জার্মান রোমান্টিক কবি হেনরিক হেইনের উপর গবেষণার জন্যে ডক্টর আজাদ স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানির মিউনিখে গমন করেছিলেন ৩ আগস্ট ২০০৪ সালে। এর আগের কাহিনী বাংলাদেশ জানে। মিডিয়ার কল্যানে জানে বিশ্ববাসী।
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীর অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় মৌলবাদী চরমপন্থীরা ডক্টর আজাদের প্রাণ নাশের চেষ্টা চালিয়েছিল। মারাত্মক আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে সেনানিবাসের কম্বাইন্ড মিলিটারি হসপিটালে (সিএমএইচ) স্তানান্তর করা হয়েছিল। ওই সময় ডক্টর আজাদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে জনতা তখন বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল। আর নিঃশংস ওই হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচারও দাবী করেছিল।
তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডক্টর আজাদকে দেখার জন্য গাড়ি নিয়ে সিএমএইচে ঢুকতে পারেননি। জাহাঙ্গীর গেটে শেখ হাসিনার গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল। তখন সেখানে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে শেখ হাসিনা ডক্টর আজাদকে সিএমএইচে দেখতে গিয়েছিলেন। আর তিনি বিক্ষোভরত জনতার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ডক্টর আজাদের উপর হামলাকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও চেয়েছিলেন।
জনগণের অব্যাহত বিােভের কারণে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকার শেষ পর্যন্ত ডক্টর আজাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাথ হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হয়েছিল।
থাইল্যান্ড থেকে ডক্টর আজাদ সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসার পর থেকে নিরাপত্তা হীনতা এবং মৌলবাদী চরমপন্থীদের মুহূর্মুহু জীবন নাশের হুমকি পেতে থাকেন। ডক্টর হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশে বেঁচে থাকার আশায় ২০০৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও দেশবাসীর কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। ওই চিঠিও তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই তিনি বেঁচে থাকার জন্যে শেষ পর্যন্ত দেশ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ঊনিশ শতকের বিখ্যাত জার্মান রোমান্টিক কবি হেনরিক হেইনের উপর গবেষণার জন্যে ডক্টর আজাদ তখন স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানির মিউনিখে গমন করেন ৩ আগস্ট ২০০৪ সালে।
ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে ১১ আগস্ট ২০০৪ সালে জার্মানির মিউনিখে ডক্টর আজাদকে জার্মান সরকার প্রদত্ত রেসিডেন্টসিয়াল ভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষ এখনো জানে না কীভাবে ডক্টর আজাদ মারা গেছেন। কারা তাঁকে সুদূর বিদেশের মাটিতেও নিরিবিলি বাঁচতে দেয়নি। ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে হত্যা করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে তাঁকে হত্যা করার হুমকি প্রদান করেছিল তারাই তাঁকে হত্যা করেছে।
বাংলাদেশের মাটিতে ডক্টর হুমায়ূন আজাদের মতো ব্যক্তিরা বাঁচতে পারেনি।
১৯৮০ সালের শুরুর দিকে ডক্টর আজাদ সমকালীন সামাজিক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতে শুরু করেন। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তাঁর এই কলাম লেখা অব্যাহত ছিল। ওই সময়ে তিনি ধর্মীয় মৌলবাদের বিপে তাঁর সুস্পষ্ট অবস্থান তুলে ধারেন। বাংলাদেশে ইসলামী গোড়ামীরও তিনি ছিলেন একজন কঠোর সমালোচক।
১৯৯২ সালে প্রখ্যাত লেখক সিম্যোন দ্য বিভ্যোর-এর ‘দ্য সেকেন্ড সেক্স’ অবলম্বনে ডক্টর আজাদ লেখেন বাংলায় তাঁর প্রথম ফেমিনিস্ট বই ‘নারী’। ওই সময়ে ‘নারী’ বেস্ট সেলার হিসেবে পাঠক সমাজে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। রাতারাতি তখন ডক্টর আজাদ বাংলাদেশে লেখক খ্যাতি পেতে শুরু করেন। ওই সময় বিএনপি জামায়াত জোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামী মৌলবাদীদের খুশি করতে ১৯৯৫ সালে হুমায়ুন আজাদের ‘নারী’ বইটি সরকারিভাবে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। ডক্টর আজাদ সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছিলেন।
২০০০ সালে উচ্চ আদালত বইটি সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করেন।
২০০৩ সালের ৩ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকের ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় হুমায়ূন আজাদের উপন্যাস ‘পাক সার জমিন সাধ বাদ’। এই উপন্যাস নিয়ে আবারো তখন মৌলবাদী গোষ্ঠী তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ওই সময় ‘মুক্তমনা’ নামক একটি অনলাইন ব্লগে ডক্টর আজাদ লেখালেখি করতেন। ২০০৪ সালের ৬ জানুযারি মৌলবাদীরা ‘মুক্তমনা’র মডারেটরের কাছে ই-মেইলে ডক্টর আজাদকে হত্যার হুমকি প্রদান করেছিল।
আর ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্র“য়ারি বাংলা একাডেমীর অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় মৌলবাদী চরমপন্থীরা ডক্টর আজাদের প্রাণ নাশের চেষ্টা চালিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মৌলবাদীরা ডক্টর আজাদকে বাঁচতে দেয়নি।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নের্তৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বিজয়ী হয়। শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে মহাজোট সরকার এখন মতায়। ডক্টর আজাদের উপর হামলার পর যাঁর নের্তৃত্বে তখন ছাত্র জনতা আন্দোলন করেছিল, সেই প্রফেসর আ.আ.ম.স. আরেফীন সিদ্দিক এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যাঞ্চেলর।
কিন্তু ডক্টর হুমায়ূন আজাদের উপর হামলাকারীদের আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ এখনো জানে না কে বা কারা ডক্টর আজাদের উপর সেদিন হামলা করেছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংম্বা ভিসি প্রফেসর আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক ডক্টর আজাদের হামলাকারীদের বিচারের জন্যে কী উদ্যোগ নিয়েছেন আমরা জানি না। বাংলাদেশের মানুষ ওই হামলাকারীদের বিচারের আওতায় দেখতে চায়। এবং হামলাকারীদের এখনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায়।
অন্তঃত আপনাদের দু’জনের কাছ থেকে এই বিষয়ে কিছু প্রত্যাশা এখনো করতে চাই।
বাংলাদেশ একটি হুজুগে দেশ। সেই সুযোগে এই দেশে কিছু রাজনৈতিক ভণ্ড মতা ভাগাভাগি করেন। আর অতি অভিনয় করে কিছু রাজনৈতিক ক্যানভাসার সবকিছুর দায় চাপায় সাধারণ জনগণের উপর। এই কালচারের কারণে বাংলাদেশে যখন যা ঘটে মানুষ তাই নিয়ে তখন কিছু দিন লম্ফ ঝম্ফ করে।
কিছু দিন পর তা আবার সবাই ভুলে যায়। এখন সবাই ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে যেমন ভুলে গেছে। তাঁর উপর হামলাকারীদের ভুলে গেছে। তাঁর হত্যাকারীদের ভুলে গেছে। গত কয়েক সপ্তাহ আরেক বিখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে এই জাতী ব্যস্ত ছিল।
এমন কি ১১ আগস্ট ২০১২ চ্যানেল আই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লাইভ প্রোগ্রাম করেছে। দ্য ডেইলি স্টার সাহিত্য পাতায় হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য আলোচনা করেছে। কিন্তু ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে নিয়ে নিয়ে নয়।
আমি খুব অবাক হয়েছি, ১১ আগস্ট আমাদের কোনো গণ মাধ্যমে ডক্টর হুমায়ূন আজাদ ঠাই পান নি দেখে। আমি খুব আশংকাবোধ করছি, এই জাতী কয়েক দিন পর হুমায়ূন আহমেদকেও ভুলে যাবে ভেবে।
আমি খুব বেদনাবোধ করছি, এই জাতী কীভাবে কতো দ্রুত সময়ে বেমালুম ইতিহাস ভুলে যায়। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি, বাংলাদেশের কোথাও ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে নিয়ে ১১ আগস্ট কোনো অনুষ্ঠান না হতে দেখে। ফরিদুর রেজা সাগররা হয়তো ব্যবসার খাতিরে আরো কিছু দিন হুমায়ূন আহমেদ নিয়ে মাতামাতি করবেন। রাজনীতিবিদরা হয়তো আরো কিছু দিন রাজনৈতিক প্রয়োজনে ডক্টর হুমায়ূন আজাদের উপর হামলা এবং তাঁকে হত্যা নিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা লুটবেন। কিন্তু আমাদের সাহিত্য সমাজ কী করছে?
বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকাগুলোর একটি করে সাহিত্য সাময়িকী পাতা আছে।
সেখানে অনেক অপাঠ্য কুপাঠ্য প্রতি সংখ্যায় ছাপা হয়। সেখানে ঘটা করে অনেক লেখক শিল্পী’র স্মৃতিচারণও হয় বটে। কিন্তু সেখানে ডক্টর হুমায়ূন আজাদ নেই! কারণ নির্মম সত্য হল এইসব সাহিত্য পাতার যারা মোড়ল তারা ডক্টর আজাদকে পছন্দ করেন না। অথবা ডক্টর আজাদের মতো মানুষের নির্ভিক সত্যটা বলার মতো সাহস তাদের নেই। অথবা ডক্টর আজাদের লেখার শক্তিকে তারা ভয় পান।
কারণ তারা নিজেরাই তেলেজমাতী করে মোড়লীপনা করেন।
১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার মুন্সীগঞ্জের রাঢ়িখালে ডক্টর হুমায়ুন আজাদ জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত লেখক, একজন স্কলার, একজন ভাষা সাহিত্যের প্রফেসর ছিলেন। এন্টি-এস্টাবলিস্টমেন্ট, এন্টি-রিলিজিয়ন ও এন্টি-মিলিটারি ভয়েসের জন্যে ডক্টর আজাদের লেখনী সারা দেশে তুমুল গণ জোয়ারের সৃষ্টি করেছিল। আমার বিশ্বাস রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ডক্টর আজাদের রাজনৈতিক মন্তব্যগুলো যে কোনো সময়ের বাংলাদেশের জন্যে আজীবন উজ্জীবনী সুধা হিসেবে সবাইকে আলোড়িত করবে।
১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উপর মাস্টার্স করার পর ডক্টর আজাদ লন্ডনের এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে লিংগুইস্টিকের উপর পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহন করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক হিসেবে যোগদান করেন। আজীবন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিকতা করেছেন। বাংলা লিংগুইস্টিকের উপর তিনি রচনা করেন বাংলা সিনট্যা´। ১৯৮৬ সালে ডক্টর হুমায়ূন আজাদ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান।
ডক্টর হুমায়ূন আজাদের লাশ জার্মানী থেকে দেশে আনা হলে রাঢ়িখালে তাঁর পৈর্তৃক ভিটায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।
ডক্টর হুমায়ূন আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৭৭ টি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো নিম্নরূপ-
কবিতা: অলৌকিক ইস্টিমার (১৯৭৩), জ্বলো চিতাবাঘ (১৯৮০), সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে (১৯৮৫), যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল (১৯৮৭), আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে (১৯৯০), হুমায়ুন আজাদের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৯৩), আধুনিক বাংলা কবিতা (১৯৯৪), কাফনে মোড়া অশ্র“বিন্দু (১৯৯৮), কাব্য সংগ্রহ (১৯৯৮), চোষা বই (১৯৯৯)।
উপন্যাস: ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল (১৯৯৪), সব কিছু ভেঙে পড়ে (১৯৯৫), মানুষ হিসেবে আমার অপরাধ সমূহ (১৯৯৬), জাদুকরের মৃত্যু (১৯৯৬), শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার (১৯৯৭), রাজনীতিবিদগণ (১৯৯৮), কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ (১৯৯৯), নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু (২০০০), ফালি ফালি করে কাঁটা চাঁদ (২০০১), উপন্যাস সংগ্রহ-এক (২০০১), উপন্যাস সংগ্রহ-দুই (২০০১), শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা (২০০২), দশ হাজার এবং আরো একটি ধর্ষণ (২০০৩), পাক সার জমিন সাধ বাদ (২০০৩), একটি খুনের স্বপ্ন (২০০৪)।
সমালোচনা: রবীন্দ্র প্রবন্ধ : রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তা (১৯৭৩), শামসুর রাহমান : নিস্বর্গ শেরপা (১৯৮৩), শিল্পকলার বিমানিকীকরণ ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৮৮), ভাষা আন্দোলন : সাহিত্যিক পটভূমি (১৯৯০), নারী (১৯৯২), প্রতিক্রিয়াশীলতার দীর্ঘ ছায়ার নীচে (১৯৯২), নিবিঢ় নীলিমা (১৯৯২), মাতাল তরণী (১৯৯২), নরকে অনন্ত ঋতু (১৯৯২), জলপাই রঙের অন্ধকার (১৯৯২), সীমাবদ্ধতার সূত্র (১৯৯৩), আধার ও আধায়ো (১৯৯৩), আমার অবিশ্বাস (১৯৯৭), পার্বত্য চট্টগ্রাম : সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝর্ণাধারা (১৯৯৭), নির্বাচিত প্রবন্ধ (১৯৯৯), মহাবিশ্ব (২০০০), দ্বিতীয় লিঙ্গ (২০০১), আমরা কী এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম (২০০৩), আমার নতুন জন্ম (২০০৫)।
লিংগুইস্টিক: প্রনোমাইনালাইজেশান ইন বেঙ্গলি (১৯৮৩), বাংলা ভাষার শত্রুমিত্র (১৯৮৩), বাক্যতত্ত্ব (১৯৯৪), বাংলা ভাষা- এক (১৯৮৪), বাংলা ভাষা-দুই (১৯৮৫), তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান (১৯৮৮), অর্থবিজ্ঞান (১৯৯৯)।
শিশু সাহিত্য: লাল নীল দীপাবলী বা বাংলা সাহিত্যের জীবনী (১৯৮৩), ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না (১৯৮৫), কতো নদী সরোবর বা বাংলা ভাষার জীবনী (১৯৮৭), আব্বুকে মনে পড়ে (১৯৮৯), বুক পকেটে জোনাকি পোকা (১৯৯৩), আমাদের শহরে একদল দেবদূত (১৯৯৬), অন্ধকারে গন্ধরাজ (২০০৩)।
অন্যান্য বই: হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ (১৯৯২), সাাৎকার (১৯৯৪), আতোতায়ীদের সঙ্গে কথোপকথন (১৯৯৫), বহুমার্ত্রিক জ্যোর্তিময় (১৯৯৭), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম কবিতা (১৯৯৭), আওয়ার বিউটিফুল বাংলাদেশ (২০০৪)।
বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে। ডক্টর হুমায়ূন আজাদ বাংলাদেশ নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বাংলাদেশের মানুষ এখনো সেই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু আমরা ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে বাঁচাতে পারিনি। আমরা ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে যথার্থ সম্মান দেখাতে পারিনি। ডক্টর আজাদের প্রতি সুবিচার করতে পারিনি। বাংলাদেশে এখনো সুবিচার সুদূর পরাহত।
কিন্তু বাংলা সাহিত্যে ডক্টর হুমায়ূন আজাদের অবদানকে কোনদিন মুছে ফেলা যাবে না। বাংলা সাহিত্য যতোদিন বাঁচবে ডক্টর হুমায়ূন আজাদ ততোদিন বাংলা সাহিত্যে একটি উজ্জ্বল নত্র হয়ে থাকবে। কিন্তু আমার ভীষণ কষ্ট হয় যখন দেখি ডক্টর হুমায়ূন আজাদকে বাংলাদেশ যথার্থ সম্মান দেয়নি। তবু সারা বিশ্বের হাজারো বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়ে ডক্টর হুমায়ূন আজাদ হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।