যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।
একজন ব্লগার যাকে আপনি নিয়মিত ব্লগাতে দেখেন তিনি কিন্তু একদিনে তৈরী হন নি। তৈরী হয়েছেন আস্তে আস্তে। ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে আজ তিনি ব্লগার।
মতান্তরে হিট ব্লগার। এই পোস্টে আলোচনা করা হবে একজন ব্লগারের বিবর্তন নিয়ে। ব্লগারের ব্লগার হওয়ার বিভিন্ন ধাপ সুক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
একজন ব্লগার প্রথমে থাকেন একজন সাধারণ লোক। হঠাৎ একদিন ঘুরতে ঘুরতে বা কোন বন্ধুর লিংক ধরে তিনি এসে পড়েন ব্লগে।
ব্লগে লেখা গুলো দেখে তার তো মাথা খারাপ অবস্থা! এত ভালু ভালু!
তার মনের ভেতর যে ছোটখাট গল্প কবিতা নাতিদীর্ঘ উপন্যাস অপন্যাস উঁকিঁঝুকি দেয় এগুলো উদগীরন করার উত্তম জায়গা। তিনি তৎক্ষণাত রেজিষ্ট্রেশন করে বসেন।
তারপর শুরু হয় লেখা। লেখতে গিয়েই কবি বুঝতে পারবেন তিনি বাংলা লেখাই জানেন না। কোনক্রমে ব্লগের রাইটিং প্যাড ব্যবহার করে কিছু একটা লেখতে চেষ্টা করেন।
তার পর গোগল সার্চ দিয়ে পেয়ে যান অভ্র! অভ্র দিয়ে শুরু হয় তার বাংলা লেখার সাধনা।
প্রথম ব্লগ সাধারনত কবিতাঃ
আমাদএর স্বপনেরা উড়ে যায় বৃহন্নলা দুঃখ নিয়এ
তবুও বিস্তৃত আকাস তথাস্তু বলে সম্মোহিত দৃষ টি দিয়ে বলে
ব্লা ব্লা ব্লা..................................................................। ।
প্রথম অবস্থায় বানান ভুল থাকে। এটা স্বাভাবিক।
লেখা শিখতে টাইম লাগে।
দ্বিতীয় ব্লগঃ
ব্লগার আবিষ্কার করেন তার লেখা কেউ পড়ছে না। ঘটনা কি! বুঝতে পারেন প্রথম পাতায় যাচ্ছে না তার লেখা।
তিনি তখন সাত দিন অপেক্ষা করেন। সাতদিন পরেও দেখা যায় প্রথম পাতায় যাচ্ছে না লেখা।
তখন ই তিনি দেন তার দ্বিতীয় পোস্টঃ
আমার লেখা পরথম পাতায় যায় না কেন এই মূলভাব থাকে দ্বিতীয় ব্লগ পোস্টে।
তৃতীয় ব্লগঃ
লেখক হঠাৎ একদিন দুয়েক মাস পরে দেখেন তার লেখা প্রথম পাতায় যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনি ব্লগের সাথে বেশ ভালো ভাবে পরিচিত হয়ে পড়েছেন। প্রথম পাতায় যাওয়াড় সুযোগ পেয়েই তিনি লিখেন তার ঐতিহাসিক পোস্টঃ
আমি এখন সাইফ আলি খান! (মানে আমি এখন সেফ!)
এই পোস্টে সাধারনত তাকে দোয়া চাওয়া জাতীয় জিনিস। দোয়া টোয়া চাওয়ার পোস্টে অনেকে অভিনন্দন জানান।
চতুর্থ ব্লগঃ
লেখক এবার অনেক কষ্টে তার সত্যিকারের প্রথম পোস্ট লিখেন। অনেক তথ্য তত্ত্ব সমৃদ্ধ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় তিনি দেখেন কেউ তার পোস্ট পড়ছে না। তিনি দুয়েক বার রিপোস্ট ও মারেন। কিন্তু তিন চারবার রিপোস্ট মেরেও টনেটুনে একশ বার পড়া হয় না!
বিমর্ষ হন কবি!
পঞ্চম ব্লগঃ
এই ব্লগ থেকে ব্লগার দের বিভিন্ন শাখা প্রশাখা বের হয়।
যেমন ব্লগ কেউ পড়ছে না দেখে কেউ কেউ যোগ দেন ভাইয়া ভাইয়া আপু আপু দলে।
“ তারা পোস্ট দেন ওমুক ভাইয়া এই করেছেন” “তমুক আপু সেই করেছেন” এই টাইপের পোস্ট।
সেলিব্রেটি ভাইয়া আপুরা মাঝে মাঝে একটা দুটা কমেন্ট করে তাদের সাধুবাদ জনিয়ে যান। এভাবেই এই দলের ব্লগার দের উত্তরন হয়।
আরেক দল যোগ দেন রাজনৈতিক দলে।
বাংলা ব্লগে মূলত চার দল আছেঃ
১। আওয়ামী পন্থী।
২। বি এন পি
৩। নাস্তিক
৪।
ছাগু (আরেক দল আছে ছুপা ছাগু। তবে এরা প্রায়শই ধরা পড়ে যান। এজন্যই ব্লগে ল্যাঞ্জা ইজ ভেরি টাফ টু হাইড নামক মহাবানীর উদ্ভব। )
এর যেকোন একটি তে যোগ দিয়ে দলীয় পোস্ট করতে থাকলে হিটের অভাব হয় না।
আরেক দল শুরু করেন চালাকি।
এরা যেকোন পোস্টের শেষেই যোগ করে দেন (১৮+)!
যেমন উসাইন বোল্ট সোনা জিতলেন (১৮+)!
তুমুল হিট চলে এইসব পোস্টে। ব্লগের পাঠক রা এই ১৮+ নামক সংখ্যার প্রতি কেন এত আকৃষ্ট হন তা গবেষনার বিষয়।
ষষ্ট পর্যায়ঃ
ষষ্ট পর্যায় থেকে একজন ব্লগার ব্লগার হয়ে উঠেন। তখন ব্লগীয় রাজনীতি মানে ব্লগ পলিটিক্স সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারনা জন্মে। বুঝতে পারেন কোন ভাইয়া কেমন।
কার ল্যাঞ্জা কোথায়।
তার নিজস্ব একদল পাঠক কূল সৃষ্টি হয়ে যায়। তখন তিনি শুরু করেন “দেশ নিয়ে বিদগ্ধ সব পোস্ট দেয়া”। তার ওপর নিজস্ব মত পন্থী পোস্ট ও দেন। এটাই আসলে ব্লগিং এর মূল।
সবাই তার নিজস্ব মত প্রকাশ করবে। ষষ্ট পর্যায়ে এসে ব্লগার তার স্বরুপে আবির্ভূত হন বলা যায়।
তবে কিছু ব্লগার এই ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা ধরে পাবলিক যা খায় তাই নিয়ে পোস্টাইতে থাকেন। তারা জনপ্রিয়তায় বিশ্বাসী।
সপ্তম পর্যায়ঃ
ব্লগার এর মধ্যে বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি ভাব আসে।
তিনি নিয়মিত দেশ চিন্তা শুরু করেন। অনলাইনে বিভিন্ন আন্দোলনে তার লেখা পাঠক গোগ্রাসে গিলে। টিভি চ্যানেল গুলো তে মাঝে মাঝে তিনি টক শোতে যান। জ্ঞানী জ্ঞানী কথা বলেন। নতুন যুগের সূচনা এইসব ব্লা ব্লা..................।
অষ্টম পর্যায়ঃ
এই পর্যায়ের জন্য নিচের ছবি টিঃ
লেখক বুঝতে পারেন তিনি তো আসলে ব্লগার। তার ভেতরে বসত করে সেই প্রথম রেজিস্ট্রেশন করা শিশু ব্লগার।
বি দ্রঃ এটা একটা ফান পোস্ট। কাউকে উদ্দেশ্য করে না। সবাই ফান হিসেবে নিলেই খুশি হব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।