আমি অবাক চোখে বিশ্ব দেখি, দৃশ্য সাজাই চোখের তারায়......
আমার সব কিছুই একটু কেমন কেমন! মানে আমার খুব কম কাজেই স্বাভাবিকতার ছোয়া থাকে। এক কথায় বলতে গেলে আমার জীবনের সকল ক্ষেত্রেই শুধু অস্বাভাবিকতার ছড়াছড়ি। যেমন আমার বন্ধু বান্ধবের কোন অভাব নেই। এটা কোন অস্বাভাবিকতা হতে পারে না। কারণ বন্ধু অনেকেরই থাকতে পারে।
তবে আমার অস্বাভাবিকতাটা হচ্ছে আমার কোন বন্ধু আমার সমবয়সী না। সবাই আমার চেয়ে হয় সিনিয়র, নয় জুনিয়র। সেটাও আবার ব্যবধানটা বিশাল। যারা বড় তারা আমার চেয়ে কমপক্ষে ৫ বছরের বড়। আর যারা ছোট তারাও কমপক্ষে ৫ বছরের ছোট।
তবে আমার সঙ্গে সবারই খুব ভালো সম্পর্ক। এবং সেই সম্পর্কে কোন খাদ নেই।
আমার জন্য যে তার আন্তরিকতার বিন্দুমাত্র উৎসর্গ করতে পারে,আমি তার জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করে দিতে পারি। আমার ভালোবাসা যতটা নির্মল। আবার শত্র“াও ততটা কঠোর।
খুব সহজেই আমি যেমন কাউকে ভালোবাসতে পারি, আবার খুব নগন্য কারণে ঘৃণাও করতে পারি। এ কারণে অনেকে আমাকে বলে থাকেন ‘স্পর্শকাতর’। তবে ব্যাপার আসলে সেটা না, কারণ আমি আমার মনের ভেতরে চেপে রাখা হতাশা আর কষ্টগুলোকে ভুলে থাকার জন্য বন্ধুত্বেও হাতছানিতে সাড়া দেই। তাই এক অর্থে আমাকে ‘ম্বার্থপর’ও বলা যায়। এই উপলক্ষে কেউ আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাইলে সমস্যা নেই।
রাজি আছি। তবে আগে কাজের কথা সারি। সেটা হচ্ছে আমার হতাশা ঢাকতে আমি বন্ধুদেও দারস্থ হই। তো কোন বন্ধুই যখন আমার হতাশার কারণ হয়ে যায় তখন সে আমার ‘মাইনাস’ ফর্মুলার আওতায় পরে যায়।
তবে কাহিনী হচ্ছে আমি আমার হতাশাগুলো কারো কাছে একেবারে পুরোপুরি প্রকাশিত করতে চাইনা।
তবুও মাঝেমাঝে প্রকাশিত হয়ে যায়। যাদের কাছে হয়ে যায়, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ব্যাপারটাকে একেবারেভাবে দেখে। আবার কেউ কেউ কাধে হাত রেখে স্বান্তনা দেয়। ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে সব। তবে তাদের সংখ্যা খুবই কম।
সেই কমদের মধ্যেই একজন হচ্ছেন আপেল মাহমুদ। আমার বন্ধু। আমার বড় ভাই। তার কাছে আমার তেমন কোন গোপন কথা গোপন নেই। তার কাছে আমার জীবন পুরোপুরি প্রকাশিত।
আমার সেই প্রকাশিত জীবনকে সে খুব ভালোভাবে পাঠ করতে পারে। আর সেই কারণে সে আমার কাছে খুবই প্রিয় একজন মানুষ। শুধু আমার কাছে না সবার কাছেই প্রিয় হওয়ার মত
যোগ্যতাও আছে তার। আর এই কারণেই তাকে আমি পছন্দ করি। আমার খুব কম প্রিয় মানুষদের মধ্যে একজন হচ্ছেন তিনি।
গতকাল ছিল তার জন্মদিন। ফেসবুকের কারণে সে না বললেও তা আমি জানতাম। তবে আমি তা তাকে আগে জানাইনি। কিন্তু কী কারণে তা নিজেও জানি না। মনে হয় তার নিজের মুখ থেকেই সংবাদটা পেতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু আপেল ভাই জাননি। গতরাতে আমি আমার এক ঝাঁক সঙ্গী নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম ক্যাম্পাসে। এখানে বলা উচিত আপেল ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এই কয়েকদিন আগেও আমরা একই অফিসে কাজ করতাম। কিন্তু আমি অফিস পাল্টে ফেলায় তার সঙ্গে এখন আমার কর্মস্থলে তার সঙ্গে আমার দেখা হয় না।
তাই রাতেই গেলাম তার সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু গিয়ে বললাম না কেন এসেছি। তাকে টিএসসিতে ডেকে আনলাম হল থেকে। তারপর গেলাম বকশীবাজার। কিনলাম তেহারী।
আমিও কিছু বলছি না। আপেল ভাইও বলছেন না। আপেল ভাই খেতে খুব পছন্দ করেন। তবে কাল তেহারীটা তাকে টানল না। তিনি খেলেন না।
মনে হয় আমি তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই নি বলে অভিমানে খান নি। কথাও বললেন খুব কম। আমি নাটকীয়তা তৈরির জন্য কিছুই বললাম না। রাত দেড়টা পর্যন্ত এক সঙ্গে থেকে তারপর ফিরলাম। আপেল ভাই বিদায়েরর সময় আরো মনমরা হয়ে গেলেন।
হয়তো অভিমানে। আমি ভাবলাম বাসায় এসে তাকে জানাবো। কিন্তু বাসায় এসে তাকে যখন ফোন দিলাম, তখন বিধিবাম! ফোন বন্ধ। সারারাত তার ফোন বন্ধই রইল। আর নাটকীয়তা তৈরি করতে গিয়ে, নিজেই নাটকের হাস্যকর চরিত্র হয়ে গেলাম।
কারণ জেনেও তাকে শুভেচ্ছা জানাই নি। তাই আপেল ভাই বোধহয় রাগ করেছেন। আর সেই রাগ ভাঙাতেই এই লেখার সূচনা!
প্রিয় আপেল মাহমুদ, প্রিয় আপেল ভাই। এই ছোটভাইয়ের, এই বন্ধুর শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
আমার চেয়েও দীর্ঘ হোক আপনার জীবনের পথচলা।
বহুদিন বেচে থাকুন, আমার মত ‘অর্ধউন্মাদ’দের প্রিয় বড়ভাই হয়ে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।