আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসাম্প্রদায়িক বাংলা নববর্ষে সাম্প্রদায়িকতার ছোবল

আবহমান কাল থেকেই বছর বা সাল গননার জন্য নির্ধারিত দিনপঞ্জিকার প্রথম দিনকে উদযাপনের রীতি চলে আসছে। এটাকে নববর্ষ আবার বর্ষ বরণ ও বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীতে অনেক জাতি , অনেক ভাষা, অনেক দেশ । তাই বলে সব দেশের জন্য আলাদা আলাদা ,বৈচিত্র্যময় উদযাপন কিন্তু সারা পৃথিবীতে নাই। আমরা বাঙ্গালিরা তিনটি সনের সাথে পরিচিত।

বাংলা সন, হিজরি সন ও ঈসায়ী বা গ্রীক সন। সব দেশের বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে তাদের নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য আছে। থাকে বৈসাদৃশ্যপূর্ন সাংস্কৃতিক পরিচয়। তবে সব কিছুর মধ্যে ফুটে উঠে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতির প্রভাব। যেকোন দেশে যখন এই উৎসব পালন করা হয় তখন তা সেই রীতিতেই পালিত হয়।

যেমন ঃ বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। আমাদের দেশে এই দিনে কেউ '' থার্টি ফাস্ট নাইটের '' পার্টিতে টুপি-পাঞ্জাবি -তসবি নিয়ে হাজির হবে এটা কেউ আশা করে না। এই রাতের আয়োজনে হয় মদের, গান-বাজনার আসর, সাথে নারীসংগ। এবারে আসি আমাদের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কথায়। এই দিনকে উপলক্ষ করে মানুষ যা কেনাকাটা করে আমার মনে হয় ঈদেও তা করা হয় না।

সে যাই হোক মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমান বাড়ছে, সাথে সাথে শৌখিন, বিলাসী লোকের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই বৈশাখ কেন্দ্রিক বাজারের রমরমা ব্যবসা। নব বর্ষের দিনে পান্তা -ইলিশ খাইতেই হবে এই বাধ্যবাধকতা কখনোই গ্রাম বাংলার নববর্ষের উদযাপনের অন্তুর্ভুক্ত ছিল না । এটা একটা মেকি , লোক দেখানো কৃত্তিম আচার। মানুষ এই দিনকে কেন্দ্র করে একটু ঘুরবে, বেড়োবে, ছেলে বুড়োরা একটু গায়ে বাতাস লাগাবে, আনন্দ করবে, করুক।

কিন্তু ঘোরাঘোরির নামে এটা কি কালচার শুরু হয়েছে। ভাই আনন্দ করবেন ঠিক আছে, মানা নাই। কিন্তু রাস্তায় চলতে একটু শালীনতা বজায় রাখবেন না ? রমনা বা ঢাবি এলাকা দিয়ে কয়েক বছর আগে পয়লা বৈশাখে হাঁটতে হাঁটতে যা চোখে পড়ল তা সত্যি ই লেখার অযোগ্য। আর এটা একটি অসাম্প্রদায়িক ,সর্ব জনীন উৎসব মানলাম কিন্তু বড় বড় মূর্তি, ভাস্কর্য নিয়ে '' মঙ্গল শোভাযাত্রা '' করা, রাখিবন্ধন,সিদুর, তিলক আঁকা এগুলো কি অসাম্প্রদায়িক কাজ ? এগুলো পুরোপুরি হিন্দু সংস্কৃতি কে আঁকড়ে ধরা। মঙ্গল শোভাযাত্রা কখনোই পয়লা বৈশাখের আদি অনুষঙ্গ বা ঐতিহ্য ছিল না ।

এটি ব্যাপক আকারে করা শুরু হয় ১৯৮৯ সাল থেকে। এই শোভাযাত্রায় বাঘের মুখোশ, হাতির, বানরের মুখোশ পড়া মানে কি আমি সারা বছর মানুষের সাথে এই রকম আচরণ করব? এটি কখনোই সর্বজনীন উৎসব হতেই পারে না , কারন প্রানীর মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি , পূজা করা ইসলামের সরাসরি বিরুদ্ধে। আমাদের দেশের ৮৮ শতাংশ মুসলিমের জীবনাচরনের বিরোধী। অন্যদিকে থাই , চাইনিজ, ফাস্ট ফুডে নির্ভরশীল উচ্চবিত্তের শখ করে ইলিশ পান্তা খেতে ছুটে আসা যেন গরীবের ভরসা প্রকৃত পান্তাকে উপহাস করার ই নামান্তর হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্বে আরো কয়েকটি দেশে নব বর্ষ উদযাপিত হয়।

ইউরোপে নিউ ইয়ার, ইরানে '' নওরোজ '', চীনে '' বসন্ত উৎসব, থাইল্যান্ডে '' সংক্রান '' উৎসব তাদের নতুন বছর উদযাপনের বিভিন্ন উৎসব। সব উৎসবেই তাদের নিজস্ব কৃষ্টি, ধর্ম বিশ্বাসের প্রতিফলন রয়েছে। আমরাই মনে হয় একমাত্র জাতি যাদের কোন স্বকীয়তা ,শ্বাতন্ত্র্যতা নাই। শুধু অন্য জিনিসের অনুকরন প্রিয়। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.