আমি একজন ব্লগ ভক্ত মানুষ।
অভ্যন্তরীণ বাজারে মাছের জোগান বাড়াতে সরকার ইলিশসহ অন্য মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ করলেও দক্ষিণ উপকূলের বাজার ও মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে ইলিশের আমদানি নেই। এতে বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারতীয় ট্রলার প্রতিদিন সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু জেলে পাল্টা অভিযোগ করে জানান, রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশীয় জেলেরা সাগরে বসেই ভারতীয় জেলেদের কাছে মাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনায় খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির নিচে একেকটি ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়। পাইকারি বাজারে সীমিতসংখ্যক যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তা মণপ্রতি ৩২ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর ইলিশ মৌসুমে প্রতিদিন আট থেকে ১০ হাজার মণ ইলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। কিন্তু এবার দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ মণের বেশি ইলিশ এখানে আসছে না।
কয়েকজন ট্রলারমালিক অভিযোগ করেন, এ মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সীমানায় ভারতীয় জেলেরা ঢুকে মাছ শিকার, জেলেদের ওপর হামলা, লুটপাট ও অত্যাচার চালাচ্ছে। সম্প্রতি সাগরে ইলিশের প্রাচুর্য বাড়ায় ভারতীয় জেলেরা প্রতিদিন শত শত ট্রলার নিয়ে সুন্দরবনসংলগ্ন সোনারচর, হিরণ পয়েন্ট, ফেয়ারওয়েবয়া, চালনারবয়া ও পশিচম সুন্দরবন এলাকায় ঢুকে ইলিশ শিকার করছে। ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবিতে গত ১৬ জুলাই বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সঞ্চারকলিপি দেয়। জেলা ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা জানান, গত ১৩ জুলাই পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সোনারচর এলাকাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জেলেদের হামলায় পাথরঘাটার বাদল মিয়া, আবদুস ছত্তার, কাউছার ও হাবিব, রফেজদ্দীন, জাকির হোসেন, আবদুর রহিম নামের সাত জেলে আহত হন। পাথরঘাটার ‘এফবি আরিফা’ নামের একটি ট্রলারের মাঝি জাকির হোসেন জানান, ওই এলাকায় ১৩ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ভারতীয় কয়েক শ ট্রলার অনুপ্রবেশ করে দেশীয় জেলেদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালায়।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এক সপ্তাহ ধরে ভারতীয় জেলেরা দেশীয় জেলেদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশি কিছু জেলে সুন্দরবনের ভারত-বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত রায়মঙ্গল, হাড়িয়াভাঙ্গা ও কালিন্দী নদী দিয়ে ভারতীয়দের হাতে ইলিশ তুলে দিচ্ছে। দেশীয় সংঘবদ্ধ একটি চক্র এতে সহায়তা করছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর মৎস্যবন্দর আড়তদার সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন ভারতে ইলিশ পাচারের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের জলসীমার যেসব স্থানে ইলিশ ধরা পড়ে, সেসব স্থান ভারতীয় শত শত ট্রলারের দখলে। তারা চার স্তরের জাল দিয়ে মাছ ধরে নিচ্ছে।
এসব ঠেকানো না গেলে অবৈধ পথে ভারতে ইলিশ পাচার কখনো বন্ধ হবে না। ’
কোস্টগার্ডের দক্ষিণাঞ্চলের (ভোলা) কমান্ডার সেলিম রেজা বলেন, ‘বর্ষায় বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় আমাদের টহল দেওয়ার মতো উপযোগী নৌযান নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তার পরও আমরা সাধ্যমতো ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। সাগর থেকে ভারতে ইলিশ পাচার বন্ধে কোস্টগার্ড তৎপর রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।