জাদুনগরের কড়চা
আক্কাস বাবুর্চির সুখের দিন মনে হয় শেষ হয়ে আসলো। এক সময় এলাকার সব বিয়ে তার পার্টি সেন্টারেই হতো, কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় কাঁচা কালো টাকার ছড়াছড়ি বেড়ে গেছে। আক্কাসের সার্ভিসে আর সবাই সন্তুষ্ট না। হিন্দি সিনেমার আজগুবি বিয়ের কাহিনী দেখে দেখে সবার চাহিদা বেড়ে গেছে। একেকজনে চায় একেক রকমের ধুম-ধাড়াক্কা।
সব মিলে কুলিয়ে উঠতে পারেনা আক্কাস।
আলীশান-কালিধারা এলাকার কথাই ধরা যাক। এখানকার লোকেরা এমনিতেই আবার বেশ নাক উঁচু। আক্কাসের পার্টি সেন্টারের ডিজাইন নাকি খুব খ্যাত, তাই তারা নিজেরাই সেই এলাকায় একটা পার্টি সেন্টার খুলে বসেছে। আলীশান এলাকার বাড়ির মালিক ছাড়া অবশ্য আর কেউ ওখানে পার্টি দিতে পারে না।
মুম্বাই এর ডিজাইনার দিয়ে নাকি সাজানো, হালের নানা হিন্দি সিনেমার আর সিরিয়ালের রঙ্ঢঙ মার্কা প্যাকেজ আছে, আলীশান এলাকার সিরিয়ালখোর লোকজন আবার এতে বেজায় খুশি। বাইরের উটকো লোকজনের ঢোকা বন্ধ করতে খোদ জাম্বিয়া থেকে মুশকো জোয়ান মার্কা গার্ডও তারা রেখেছে কয়েকখান। দেখলেই পিলে চমকে যায়, হাক্যুল্লা পার্টির বিয়ে খাওয়া সেখানে নাকি একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।
“খাম্বা” ইদ্রিসের কেইস অবশ্য আলাদা। টেন্ডার বাজি করে এককালের মুরগি বিক্রেতা ইদ্রিস আজ সৈয়দ ইদ্রিস খান বাহাদুর নাম ধারণ করেছে।
ইদ্রিসের আবার তিন বৌয়ের ঘরে এক ডজন ছেলে মেয়ে। বছরে সেই এক ডজনের অন্তত ২/৩জনের বিয়ে লেগেই আছে। এই সব বিয়ের কন্ট্রাক্ট আক্কাস বাবুর্চি পাবে বলে বড় আশা করেছিলো। কিন্তু জাতে ওঠা ইদ্রিস উড়িয়ে দিয়েছে হেসেই। ইদ্রিসের পুরানো প্রতিদ্বন্দ্বি বিটলু চাকলাদার নাকি নিজের বাড়ির পাশেই পার্টি সেন্টারের দালান তুলেছে, আর সেখানে আক্কাসের ছোটোখাটো পার্টিসেন্টারে বিয়ের আয়োজন করে ইদ্রিস মান সম্মান খোয়াবে নাকি! ইদ্রিস খান বাহাদুর তাই নিজের পরিবারের জন্য কোটি চারেক টাকা দিয়ে একটা প্রাইভেট পার্টি সেন্টার বানিয়ে নিয়েছে।
ইদ্রিসের ডজনখানেক ছেলে মেয়ের বিয়ে ওখানেই হবে, আর তার দুই ডজন নাতিপুতির আকিকা, জন্মদিন, থেকে শুরু করে সব ধরণের অনুষ্ঠান ওখানেই হবে। বাইরের কোনো সেন্টারে যাওয়ার ঝামেলা করতে হবেনা দেখে খাম্বা ইদ্রিস গিন্নী বেজায় খুশী। মুখ কালো হলো কেবল আক্কাস বাবুর্চিরই।
কোনো মতে রক্ষা তবু “জুতা” মাহমুদ থাকায়। ইদ্রিসের মতো বিশাল কালো টাকা না থাকলেও দুর্জনেরা বলে মসজিদের জুতা চুরি করে বাটার দোকানে বেচে মাহমুদ নাকি অনেক টাকাই কামিয়েছে।
ইদ্রিসের পারিবারিক পার্টি সেন্টার দেখে সেও উৎসাহিত হয়েছিলো, তবে মাত্র ১ কোটি টাকা খরচ করায় ছোট্ট একটা সেন্টার বানাতে পেরেছে। ৫০ জনের বেশি জায়গা হয়না। আক্কাস বাবুর্চির সাথে তাই চুক্তি হয়েছে, কোনো কারণে লোক বেশি হয়ে গেলেই আক্কাসের পার্টি সেন্টারে যাবে অতিরিক্ত দাওয়াতিরা। নাই মামার চাইতে কানা মামা ভালো, তাই আক্কাসও এই আক্রার বাজারে এই চুক্তিতে রাজি। এই “জুতা” মাহমুদের অতিরিক্ত দাওয়াতি, আর মধ্যবিত্তদের বিয়ের এক্সক্লুসিভ সব কন্ট্রাক্ট দিয়ে অন্তত কিছুটা লাভের মুখ দেখলেও দেখা যেতে পারে।
পার্টি সেন্টারের এই চার রকমের মডেলের সাথে ক্লাউডের একটা সম্পর্ক আছে। যন্ত্রগণক ডট কম সাইটে ক্লাউড কম্পিউটিং ১০১ কোর্সের আজকের লেকচারে চলুন দেখে নেই সেটা … ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।