আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুমায়ূনের ডেথ সার্টিফিকেটে গোমর ফাঁস

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দাফন নিয়ে মেহের আফরোজ শাওনের বক্তব্য এবং ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্যে কোন মিল নেই। নুহাশ পল্লীতে দাফন করার কথা উল্লেখ করেছেন শাওন। অথচ ডেথ সার্টিফিকেটে দাফনের স্থান উল্লেখ করা হয়েছে গুলশানে, নিজস্ব প্লটে। হুমায়ূন আহমেদের ডেথ সার্টিফিকেটে দেয়া এমন তথ্য জন্ম দিয়েছে নতুন বিতর্ক। ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্য আর ঢাকায় দেয়া মেহের আফরোজ শাওনের বক্তব্যের সুরাহা হলেই অবসান হবে লাশ দাফন নিয়ে সৃষ্ট সব ধূম্রজালের।

বেরিয়ে আসবে আসল সত্য। হুমায়ূন আহমেদের ভাইসহ আগের সন্তানদের মতামত উপেক্ষা করাই এর উদ্দেশ্য, নাকি এর পেছনে অন্য কোন চক্রান্ত, সেটা উন্মোচনের নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্য। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা গতকাল সোমবার এ খবরটি প্রকাশ করেছে। খবরে বলা হয়, গত ১৯শে জুলাই নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ ইস্যু করেছে এই সার্টিফিকেট। এর নাম্বার ১৫৬-১২-০২৮০১৪।

সার্টিফিকেটে মৃত ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য ছাড়াও নিচে একটি কলাম রয়েছে। যেখানে ‘প্লেস অব ডিসপোজিশন’ বা কোথায় দাফন করা হবে তা উল্লেখ করতে হয়। ওই কলামে উল্লেখ করা হয়েছে ‘গুলশান, বাংলাদেশ’। স্থান হিসেবে উল্লেখ আছে ফ্যামেলি প্লটের কথা। অর্থাৎ গুলশানে পারিবারিক প্লটে দাফন করার কথা।

এ ব্যাপারে দাফন বিষয়ে অভিজ্ঞ নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশীদের প্রথম মসজিদ মদিনা মসজিদের সভাপতি এডভোকেট নাসির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ জুলফিকার চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, ডেথ সাটিফিকেট ইস্যু করে নিউ ইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড মেন্টাল হাইজিন বিভাগ। যে ফিউনারেল হোমে লাশ রাখা হয়, সেখান থেকে লাশ দাফনের তথ্য সরবরাহ করা হয়। ফিউনারেল হোম লাশের উত্তরাধিকারের কাছে জানতে চায় কোথায় দাফন হবে। সে তথ্যই সার্টিফিকেট ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করে তারা- যা দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে বাইরের কারও কথা শুনবে না ফিউনারেল হোম কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, ডেথ সার্টিফিকেটে উত্তরাধিকার বা অভিভাবকের হিসেবে যার নাম থাকে তাকেই বলতে হবে কোথায় দাফন হবে লাশ। সেটাই উল্লেখ করা হয় সার্টিফিকেটে। এই হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের ডেথ সার্টিফিকেটে উত্তরাধিকার বা অভিভাবক হিসেবে যার নাম তিনিই দাফনের স্থান উল্লেখ করবেন। সেখানে হুমায়ূন আহমেদের উত্তরাধিকার হিসেবে একমাত্র নাম রয়েছে মেহের আফরোজ শাওনের। ফলে এখানে অন্য কেউ কিছু বললে সেটা অস্বাভাবিক হবে বলে মন্তব্য করেন মদিনা মসজিদ কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ২৩শে জুলাই হুমায়ূন আহমেদের লাশ পৌঁছার পর পর মেহের আফরোজ শাওন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের বলেন, নুহাশ পল্লীতে লাশ দাফনের কথা বলে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ নিজে। এ নিয়ে সেখানে চরম জটিলতা সৃষ্টি হলে সরকারি হস্তক্ষেপে অচলাবস্থার অবসান হয়। মেহের আফরোজ শাওন এর আগে জেএফকে এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর প্রমাণের বরাতে সেটা বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, হুমায়ূন আহমেদের ডেথ সার্টিফিকেটে গুলশানের নিজস্ব প্লটে দাফনের কথা কিভাবে এসেছে তা বের করা সম্ভব হলে অনেক প্রশ্নের সমাধান হবে।

শারীরিক অবস্থা নিয়ে লুকোচুরি কেন? এদিকে হুমায়ূন আহমেদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে লুকোচুরি করার বিষয়টি এখনও সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার কিডনি থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একে একে অকেজো হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মিডিয়াকে সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। কেন এ রহস্যময় আচরণ- এটাই এখন সকলের প্রশ্ন। গত ১৯শে জুলাই মৃত্যুর মাত্র আধঘণ্টা আগেও প্রকাশক ও হুমায়ূন আহমেদের সফরসঙ্গী মাজহারুল ইসলাম মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন, রক্তে সংক্রমণ একটু বেড়েছে।

তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল। এ নিয়ে সব মহলে বিস্তর প্রশ্ন। বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদকে জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের কোন ফোন ছিল না। কেউ তাকে ফোন করতে চাইলে, যোগাযোগ করতে হলে, তাকে ফোন করতে হতো শাওন অথবা মাজহারকে। তিনি হাসপাতালে গেলে নিউ ইয়র্কের একজন লেখক তাকে নিজের ফোন দিতেন।

হাসপাতালে সেটাই ছিল হুমায়ূন আহমেদের যোগাযোগের একমাত্র উপায়। একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র এই খবর জানায়। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.