আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক সুব্রত শুভর জন্য ভালোবাসা .....

বেড়ে ওঠার চেষ্টা করছি প্রথমে একটি ছবি দেখাই। একটা স্ক্রীনশটকে ছবি বলা কি ঠিক হচ্ছে ? হ্যাঁ , হচ্ছে। কারণ এটাই একটি মানুষের মনের ছবি প্রকাশ করে। এই মানুষটার পহেলা বৈশাখ কেটেছে জেলে। তার বিরুদ্ধে অপরাধ , তিনি নাকি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।

দরকার হয় আবার স্ক্রীনশটটি দেখুন। ৮ ই এপ্রিল ২০১২ সালে শুব্রত শুভ এই স্ট্যাটাস দেন। তখন আস্তিক নাস্তিক বিষয়টি এভাবে বিদ্বেষ ছড়ায় নি । তার মানে তিনি ভীত হয়ে নন , মন থেকেই স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন। যে লোক এরকম একটি স্ট্যাটাস নিজের থেকে দিতে পারেন , তিনি কিভাবে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেন ?যতদূর জানি , আমি কখনও দেখিনি তাকে ধর্ম নিয়ে কোনও কটু মন্তব্য করতে।

এই স্ট্যাটাসও হয়তো আমার কথার সত্যতা বহন করে। তাহলে কেন তাকে আজও জেলে থাকতে হচ্ছে ? কেন তার জামিন না মঞ্জুর হচ্ছে? শুব্রত শুভ খুব আক্ষেপ করে বলতেন ‘’ আমি হিন্দু , আমি এদেশের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। ‘’ খুব আক্ষেপ নিয়েই বলতেন। আজ কেন জানি মনে হয় এটা আক্ষেপ থেকে না , তিনি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। হ্যাঁ, হয়ত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হওয়াতেই আজ এমন নিরাপরাধ ছেলেকে জেলে বসে দিন কাটাতে হচ্ছে।

তিনি এমন কিছু কথা লিখে গিয়েছিলেন যা এখনও কানে বাজে। তার একটা স্ট্যাটাস এর সারমর্ম ছিল এরকম ‘’ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতি তাকে অনেক ক্ষেত্রে পীড়া দেয়। মন্দিরের কোনও পুরোহিত কোনও মেয়েকে ধর্ষণ করে আসলেও তার নেতৃত্বে পূজা করার সময় এদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে না। কিন্তু কেউ যদি ধর্ম নিয়ে যদি পান থেকে চুন খসা কথাবার্তা যদি কেউ বলে তাহলেই সর্বনাশ। ‘’ যেদিন তাকে ধরে নেওয়া হয় সেদিন সকালে তাকে জিজ্ঞেস করলাম ‘’ আপনার নাম সরকারের লিস্টে কেন ? আপনাকে তো কখনও ধর্ম নিজে বাজে কথা বলতে দেখি নি ।

‘’ উত্তরে সে বলল ,” শুধু জামায়াত শিবির নিয়ে লিখে এমন অনেকের নাম ই ওই লিস্টে আছে। ‘’ প্রশ্ন আপনাআপনি উঠে যায়, স্বাধীনতার চেতনাবাহী সরকারের কাছে জামায়াত-শিবির নিয়ে কিছু লেখা কি দোষের ?’ যদি দোষের হয় তাহলে সরকারি আইন পাশ করে জামায়াতের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখলে তার শাস্তির বিধান করুন। আমি নিজে সেই আইন ভেঙ্গে জেলে যেতে চাই , আমি নিশ্চিত আমার মত অনেকেই এভাবে জেলে যেতে চাইবে। শুধু মাত্র হিন্দু বলেই কি শুব্রত শুভকে এই অন্যায় মেনে নিতে হবে ? অমিত শক্তিধর লেখনী যার মূল হাতিয়ার ছিল সেই ছেলেটি ল্যাপটপ এর সামনে চোরের মত দাড়িয়ে রয়েছে। সাংবাদিকরা ফটো তুলছে।

সবাই দেখছে মানবতা কর্কট রোগ ধারন করছে কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। থাকুন , আপনারা চুপ করে থাকুন। কাল যে আপনার পালা আসবে না তার নিশ্চয়তা কি ? সেদিন কিন্তু আমরাও চুপ করে থাকব। নববর্ষের আগের দিন তাকে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। স্ট্যাটাসটা ছিল এরকম ''' কারও জন্য আজ আমার একফোঁটা ভালোবাসা ভাগ হবে না।

আজ সমস্ত ভালোবাসা শুভ'র জন্য। হ্যাঁ , সুব্রত শুভর জন্য। আজ গানের ফুল কিংবা বকুল,পলাশ , শিমুল , কৃষ্ণচূড়া যাই ফুটুক , তোমার জন্য ফুটবে। গাঢ় রঙের মেয়েটার লাল টিপ যদি আমার জন্য হয় তবে তা তোমারও জন্য। সেই গাঢ় মেয়েটার কাজল ধুয়ে আসা চোখের অভিমানী জল যদি আমার জন্য হয় তবে তা তোমারও জন্য।

প্রথম বোশেখে যদি রুদ্র ঝড় আসে, রুদ্রের ঝড় আসে , জানবে মহাকাল ন্যায়ের সাথে প্রান বেঁধেছে । আর যদি না আসে , কাঠফাটা রোদ্দুরের দাবদাহে মহাকাল কাক তীর্থের মত অপেক্ষা করবে সেই ঝড়ের জন্য, যে ঝড় তাণ্ডব চালাবে শুধু অসহায়দের জন্য। ভালো নেই মানবতা , কর্কট রোগ তাতে বাসা বেঁধেছে'''  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.