যে কোনো সরকারী চাকুরীর বিজ্ঞাপনে এই প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা লাইন খানা খুবই নজরে আসে। আপনার সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার ফটোকপি, চারিত্রিক সনদপত্র, ছবি সবই এই কর্মকর্তাদের থেকে সত্যায়িত করে তবে সরকারী চাকুরীতে আবেদন করতে হয়। সত্য কথা হলো, যত সত্যায়ন হয়, তার ৯০%ই ভুয়া সীল দিয়ে। চাকুরীপ্রার্থী নিজে কোনো অফিসারের নাম দিয়ে সিল বানিয়ে নিজেই সাক্ষর দিয়ে দেন । আমিও এই কাজ করেছি অনেকবার।
কারণ প্রথম জীবনে অনেকের কাছে গিয়েছিলাম, জবাব পেয়েছি এইভাবে--'' আমি কি তোমাকে চিনি? কেন খামাকা তোমার কাগজ সত্যায়িত করবো? কেন তোমাকে চারিত্রিক সনদ দিবো?''
গেজেটেড কর্মকর্তা কারা, এটা মনে হয় অনেক চাকুরীপ্রার্থী নিজেও ঠিক মত জানে না। আমিও জানি না। যতটুকু ভাসা ভাসা জানি, প্রথম শ্রেণীর যেসব চাকুরের নিয়োগ সরকারী গেজেট দ্বারা প্রকাশিত হয়, তারাই গেজেটেড কর্মকর্তা। (আমার জানতে ভুলও হতে পারে)
বিসিএস ক্যাডার ছাড়াও আরো অনেক নিয়োগ গেজেটেড হিসাবে হয়ে থাকে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, যখন কেউ সত্যায়ন করে দিলো, সেটা খুব কম সময়ই ভেরিফাই করা হয়।
(আমার মনে হয়, কখনোই ভেরিফাই হয় না। ) যার নাম ব্যবহার করে সত্যায়ন করা হয়েছে, আদৌ সেই ব্যক্তি সেই সত্যায়নটি করেছেন কিনা, সেটা যাচাই করা হয় না।
আর একটা ব্যাপার, বাংলাদেশে মোটামোটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পরই সবাই চাকুরীতে ঢুকার চেষ্টা করে, এবং সেই সময়ই সত্যায়ন, কিংবা চারিত্রিক সনদ দরকার হয় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তো গেজেটেড কর্মকর্তা না। তাই একজন সচিবের সমমর্যাদার একজন পোস্ট ডক্টরেট করা অধ্যাপকও অনেক সময় সত্যায়ন কিংবা চারিত্রিক সনদ দিতে চান না কিংবা কুন্ঠা বোধ করেন,যদি কোনো ফ্যাসাদে পড়েন এই চিন্তায়।
অথচ সেই অধ্যাপকের কোনো শুধুগ্রাজুয়েট পাস করা বিসিএস ক্যাডার ছাত্রের সেই ক্ষমতা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৪-৫ বছর একজন ছাত্রকে দেখেও চারিত্রিক সনদ দেওয়ার অধিকার রাখে না, কিন্তু একজন গেজেটেড কর্মকর্তা ২ মিনিটেই সেটা দিতে পারেন।
সত্যিই লজ্জাকর। আমরা মনে হয় শিক্ষকদের সঠিক সম্মান দিতে পারি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।